1. অন্যরকম
  2. অপরাধ বার্তা
  3. অভিমত
  4. আন্তর্জাতিক সংবাদ
  5. ইতিহাস
  6. এডিটরস' পিক
  7. খেলাধুলা
  8. জাতীয় সংবাদ
  9. টেকসই উন্নয়ন
  10. তথ্য প্রযুক্তি
  11. নির্বাচন বার্তা
  12. প্রতিবেদন
  13. প্রবাস বার্তা
  14. ফিচার
  15. বাণিজ্য ও অর্থনীতি

বাংলাদেশ বিনির্মাণের অদম্য কারিগর বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিব

অধ্যাপক ড. আহমেদ আমিনুল ইসলাম : ইবার্তা টুয়েন্টিফোর ডটকম
মঙ্গলবার, ৮ আগস্ট, ২০২৩

৮ আগস্ট বাংলাদেশ নামক এই ভূখণ্ডের নেপথ্য-স্থপতি, শেখ মুজিবুর রহমানকে ‘বঙ্গবন্ধু’ও ‘জাতির পিতা’ হিসেবে বিনির্মাণের অদম্য কারিগর বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিবের আজ ৯৩তম জন্মদিন। আজ বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য প্রণয়িনী বঙ্গমাতা, জাতির পিতার প্রেমধন্য ‘রেণু’র ৯৩তম জন্মদিন। ১৯৩০ সালের এই দিনে তিনি জন্মগ্রহণ করেছিলেন। পরবর্তী সময়ে আমৃত্যু তিনি আদর্শ বাঙালি স্ত্রী হিসেবে তিলেতিলে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের রাজনৈতিক জীবন গড়ে তোলার পশ্চাতে নিজেকে উৎসর্গ করেছিলেন। হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি হিসেবে বঙ্গবন্ধুর আত্মপ্রতিষ্ঠায় এই মহিয়সী নারীর অবদান অনন্য। আজ জন্মদিন এই মহিয়সী নারী, বাঙালির জননী বঙ্গমাতার শুভ জন্মদিন। বঙ্গমাতার শুভ জন্মদিন বটে, কিন্তু আমাদের মনে উদযাপনের আনন্দে উচ্ছ্বাস নেই। আছে কেবল বেদনাক্লিষ্ট মর্মযাতনার হাহাকার। বাঙালির জীবনে আগস্টের মতো করুণার্দ্র আর কোনো মাস নেই। তাই বাঙালির সকল উদযাপনের মতো বঙ্গমাতার জন্মদিনের উদযাপনটিও ১৫ আগস্টের অন্তহীন বেদনার ঘন মেঘে ছেয়ে আসে। আগস্টে আমরা কোনো আনন্দোৎসবেই মেতে উঠতে পারিনা। তাই অনেকটা নীরব এবং আড়ম্বরহীনতায় স্মরণের মধ্য দিয়ে হৃদয়ের গভীর থেকে কেবল জননীর তরে শোকের উদগীরণ ঘটাই মাত্র।

আগস্ট সম্পর্কে ১৯৭৫-পূর্বকার অনুভব-উপলব্ধির কথা আমাদের তেমন একটা মনে নেই। ১৯৪৭ সালের ১৪ ও ১৫ আগস্ট পাকিস্তান ও ভারত ইংরেজ শাসন থেকে স্বাধীনতা লাভ করে। এছাড়া ঐতিহাসিক আর কোনো তাৎপর্যের কথা আমাদের মনে পড়ে না। কিন্তু, শৈশব হতেই বুঝতে শিখেছি ১৯৭৫ সাল থেকে আগস্ট বেদনার অশ্রুজলে ভাসা এক মাসের নাম। আগস্টে সুখের সকল উদযাপন বিমর্ষ বেদনায় ম্লান হয়ে যায়! আনুষ্ঠানিকতায় বিশেষ আনন্দের দিনগুলোর উদযাপনও অসম্ভব হয়ে পড়ে। আনন্দের সকল অনুষ্ঠান ঘন মেঘে ছাওয়া শ্রাবণ আকাশের মতো বিষাদে ভারাক্রান্ত হয়! বৃষ্টির মতোই ঝরে পড়ে বেদনার অবিরল অশ্রুধারা। এ মাসে নিষ্ঠুর ঘাতকের কাছে নির্মমভাবে সপরিবারে বঙ্গবন্ধু নিহত হওয়ায় বঙ্গমাতার জন্মদিনের আনন্দের চেয়ে সেদিনের সকলের নিষ্ঠুর মৃত্যুর স্মৃতিই আমাদেরকে সঘন আবেগে আপ্লুত করে। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের পর থেকে জন্মদিনের আনন্দ ও উচ্ছ্বাস আমাদেরকে অধীর করে না। বঙ্গবন্ধুসহ পরিবারের সকল সদস্যের নির্মম মৃত্যুর স্মৃতি বঙ্গমাতার জন্মদিনেও আমাদেরকে শোকগ্রস্ত করে। আমরা শোকগ্রস্ত হই, কিন্তু বিমর্ষ হই না। যখন আমরা উপলব্ধি করি ফজিলাতুন নেছাই পর্দার অন্তরাল থেকে শেখ মুজিবকে ‘বঙ্গবন্ধু’ হিসেবে বিনির্মিাণ করেছিলেন- জাতির পিতা হিসেবে বিনির্মিাণ করেছিলেন।

ফজিলাতুন নেছার মতো সহধর্মিণী ছিলেন বলেই বঙ্গবন্ধুও এই বাংলাদেশ বিনির্মাণের প্রয়াস পেয়েছিলেন। এদেশের মনুষের কল্যাণে নিজেকে নিয়োজিত করতেও পেরেছিলেন! এজন্য আমরা বলি বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ বিনির্মাণের স্থপতি আর বঙ্গমাতা ‘বঙ্গবন্ধু’ বিনির্মাণের স্থপতি! শুধু কি তাই? ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধেও বঙ্গমাতার প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ভূমিকার কথা আমরা সশ্রদ্ধচিত্তে স্মরণ না করে পারিনা। দেশ ও দেশের মানুষের প্রতি মমত্ববোধের জন্যই তিনি হয়ে উঠেছেন ‘বঙ্গমাতা’। শেখ ফজিলাতুন নেছা যে স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের নেপথ্য স্থপতি একথা বলার অপেক্ষা রাখে না। অন্তঃপুরবাসিনী অথচ স্বাধীনচেতা এই মহিয়সী নারী বঙ্গমাতার জন্মদিনে আমরা নিবেদন করি বিনম্র শ্রদ্ধা।

বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেসার ডাক নাম রেণু। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রিয়তমা পত্নী রেণু। বাংলাদেশের চারবারের প্রধানমন্ত্রী এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের চার দশকেরও বেশি সময়ের সভাপতি, দেশরত্ন জননেত্রী শেখ হাসিনার মাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিব। মাতৃপিতৃহীন রেণু পারিবারিকভাবে চাচাতো ভাই শেখ মুজিবুর রহমানের সাথে আট বছর বয়সে ১৯৩৮ সালে পরিণয়সূত্রে আবদ্ধ হন। ১৯৪২ সাল থেকে তার সাংসারিক জীবনে প্রবেশ। আমরা উপলব্ধি করি ফজিলাতুন নেছা যেন শেখ মুজিবকে ‘বঙ্গবন্ধু’ এবং ‘জাতির পিতা’ হিসেবে বিনির্মাণের ব্রত গ্রহণ করেছিলেন। এর প্রমাণ পাই বঙ্গবন্ধুর ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’র শুরুতেই। বঙ্গবন্ধু বইটির শুরু করেছেন : ‘বন্ধুবান্ধবেরা বলে, তোমার জীবনী লেখ। সহকর্মীরা বলে, রাজনৈতিক জীবনের ঘটনাগুলি লিখে রাখ, ভবিষ্যতে কাজে লাগবে। আমার সহধর্মিণী একদিন জেলগেটে বসে বলল, বসেই তো আছ, লেখ তোমার জীবনের কাহিনী।’ হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি ‘বঙ্গবন্ধুকে বিনির্মাণে বঙ্গমাতার ভূমিকা আমরা টের পাই। মধ্যবিত্ত পরিবার থেকে ওঠে আসা শেখ মুজিব অবিসংবাদিত নেতার আসন লাভ করলেও তার ছাত্র বা রাজনৈতিক জীবনে অর্থের প্রাচুর্য ছিল না। ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’র বিভিন্ন পাতায় অনেকবার বঙ্গবন্ধু তার প্রয়োজনীয় টাকার কথা উল্লেখ করেছেন! আবার, ‘রেণু’ পাশে থাকায় তিনি ভরসাও পেয়েছেন। তিনি উল্লেখ করেছেন : ‘আব্বা ছাড়াও মায়ের কাছ থেকেও আমি টাকা নিতে পারতাম। আর সময় সময় রেণুও আমাকে কিছু টাকা দিতে পারত। রেণু যা কিছু জোগাড় করত বাড়ি গেলে এবং দরকার হলে আমাকেই দিত। কোনোদিন আপত্তি করে নাই, নিজে মোটেই খরচ করত না। গ্রামের বাড়িতে থাকত, আমার জন্যই রাখত।’ বঙ্গবন্ধুর জীবনে এরূপ ঘটনার শেষ নেই! আরেক জায়গায় তিনি বলেছেন : ‘আব্বা, মা, ভাই বোনদের কাছ থেকে বিদায় নিয়ে রেণুর ঘরে এলাম বিদায় নিতে। দেখি কিছু টাকা হাতে করে দাঁড়িয়ে আছে। ‘অমঙ্গল অশ্রুজল’ বোধহয় অনেক কষ্টে বন্ধ করে রেখেছে। বলল, একবার কলকাতা গেলে আর আসতে চাও না। এবার কলেজ ছুটি হলেই বাড়ি এসো।’ বয়সে দশ বছরের ছোট হলেও বঙ্গমাতা এভাবেই বঙ্গবন্ধুকে সব সময় অপার ভরসায় ছেয়ে রাখতেন। ভরসা হয়ে পাশে ছিলেন বঙ্গবন্ধুর বিএ পরীক্ষার সময়ও। বঙ্গবন্ধু লিখছেন : ‘রেণুও কলকাতায় এসে হাজির। রেণুর ধারণা, পরীক্ষার সময় সে আমার কাছে থাকলে আমি নিশ্চয়ই পাস করব। বিএ পরীক্ষা দিয়ে পাস করলাম।’ সুতরাং আমরা বুঝতে পারি বঙ্গমাতার সে ‘ধারণা’ অবাস্তব কিছু ছিল না।

সাধারণ বাঙালি মধ্যবিত্ত পরিবারের নানাবিধ টানাপোড়েনের মধ্যে থেকেও ফজিলাতুন নেছা মুজিব বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক চলার পথ কণ্টকিত করেননি। আটপৌরে জীবনের চাহিদা ও অযাচিত অভিমান নিয়ে দরজা আগলিয়ে দাঁড়াননি কোনোদিন। বরং মধ্যবিত্তের গুণনিপুণ গৃহিণীর স্বভাবসুলভ সহজাত জীবনযাপনের মাধ্যমে স্বামীর চলার পথকে সর্বদা মসৃণ করেছেন। বঙ্গমাতার মতো আদর্শ স্ত্রী পেয়েছিলেন বলে বঙ্গবন্ধুকে সংসারের ছোটখাট বিষয়ে মাথা ঘামাতে হয়নি, উদ্বিগ্নও হতে হয়নি! ফলে, এ দেশের মানুষের অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক মুক্তির পাশাপাশি তাদের অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা ও চিকিৎসার মতো মৌলিক চাহিদাসম্পন্ন বিষয়গুলো নিয়ে বঙ্গবন্ধু স্বচ্ছন্দ ও নিরবচ্ছিন্ন ভাবনার অবকাশ পেয়েছিলেন। অবকাশ পেয়েছিলেন ন্যায় সঙ্গত সকল দাবি পূরণের মধ্য দিয়ে কীভাবে পৃথিবীর বুকে আত্মসম্মান ও মর্যাদাসহ বাঙালি জাতি আত্মপ্রকাশ ঘটাতে পারে সে বিষয়ে গভীর ও নিবিড় পরিকল্পনা উদ্ভাবনেও। তাই বঙ্গবন্ধু সুচিন্তিত ও পরিকল্পিত পন্থায় রাজনৈতিকভাবে সমগ্র জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করার কৌশলটিও আবিষ্কারে সক্ষম হয়েছিলেন। এক্ষেত্রে উপমহাদেশ তো বটেই বিশ্বের বুকে অনন্য এক রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বে পরিণত হয়ে উঠেছিলেন তিনি। আবার একথাও ভুলে গেলে চলবে না যে, ফজিলাতুন নেছা বঙ্গবন্ধুকে কেবল বাইরের বিশ্বের আহ্বানে সাড়া দানেই উদ্বুদ্ধ করেননি অন্তর্গঠনেও তাৎপর্যমণ্ডিত ভূমিকা রেখেছেন। শারীরিক সুস্থতার বিষয়েও বঙ্গবন্ধুকে তিনিই সচেতন করে দিয়েছেন। এরকম একটি ঘটনার প্রসঙ্গ বঙ্গবন্ধু উল্লেখ করেছেন। ঘটনাটি জেলখানা থেকে কোর্টে হাজিরা দেওয়ার সময়। বঙ্গবন্ধু লিখেছেন : ‘এক মাসে শরীর আমার একদম ভেঙে গিয়েছে। চোখের অবস্থা খারাপ। পেটের অবস্থা খারাপ হয়ে পড়েছে। বুকে ব্যথা অনুভব করতে শুরু করেছি। রেণু আমাকে সাবধান করে বলল, ভুলে যেওনা, তুমি হার্টের অসুখে ভুগেছিলে এবং চক্ষু অপারেশন হয়েছিল।’ এখানেই তিনি আবার বলেছেন : ‘হাচু [শেখ হাসিনা] আমাকে মোটেই ছাড়তে চায় না। আজকাল বিদায় নেওয়ার সময় কাঁদতে শুরু করে। কামালও আমার কাছে এখন আসে। হাচু আব্বা বলে দেখে কামালও আব্বা বলতে শুরু করেছে।’ গ্রন্থপাঠের সময় এসব কথা আমরা হয়তো নির্বিকার পড়ে যাই। কিন্তু এরূপ ঘটনা যখন কোনো মানুষের নিজের জীবনে অতিক্রম করতে হয় তখন যে কী পরিমাণ দীর্ঘশ্বাস ফেলতে হয়, কী পরিমাণ অশ্রু মোচন করতে হয় তা কেবল বঙ্গবন্ধুর প্রেমময়ী স্ত্রী রেণু অর্থাৎ আমাদের শ্রদ্ধাভাজন বঙ্গমাতা নিজে গভীরভাবে উপলব্ধি করেছিলেন, আর কেউ নন। অবুঝ শিশু হাসিনা ও কামালের অনুভবের সেই গভীরতা তখন কতটুকুই বা তৈরি হয়েছিল! বঙ্গবন্ধু-অন্তপ্রাণ শেখ হাসিনা মায়ের নিকট থেকে মমতা আর ঔদার্য এবং বাবার নিকট থেকে পাওয়া সাহস আর নেতৃত্বগুণে দারিদ্রপীড়িত দেশটিকে উন্নত রাষ্ট্রে পরিণত করার স্বপ্নে আমাদেরকে সঙ্গে নিয়ে চলেছেন।

বাঙালির মুক্তির জন্য বঙ্গবন্ধুর নির্ভয় এবং নির্ভার পথচলাকে সহজতর করে দিয়েছিলেন বঙ্গমাতা। সংসার সামলানোসহ ছেলে-মেয়েদের মানুষ করার দায়িত্ব তিনি নিয়েছিলেন। বলাবাহুল্য যে, বঙ্গমাতা একটি পরিবারকে যেমন পরিপাটি যত্নের সঙ্গে আগলে রেখেছিলেন তেমনি বঙ্গবন্ধুও আগলে রেখেছিলেন বাংলাদেশকে। সগর্বে এবং সর্বদা একথা প্রচার করে আমরাও আত্মগৌরব অনুভব করি যে, বঙ্গবন্ধু যেমন তিল তিল করে বাঙালির জন্য বাংলাদেশটিকে বিনির্মাণ করেছিলেন তেমনি তিনি তিল তিল করে বিনির্মিত হয়ে উঠেছিলেন প্রিয়তমা পত্নী রেণুর সাহচর্য, সহমর্মিতা এবং অন্তর্গত ঔদার্যময় সহনশীলতায়। বঙ্গবন্ধুর লেখা থেকে এ বিষয়েও ইংগিত পাওয়া যায়। তিনি বলেছেন : ‘কয়েক মাস পূর্বে আমার বড় ছেলে কামালের জন্ম হয়েছে, ভাল করে দেখতেও পারি নাই ওকে। হাচিনা তো আমাকে পেলে ছাড়তেই চায় না। অনুভব করতে লাগলাম যে, আমি ছেলে মেয়ের পিতা হয়েছি। আমার আব্বা ও মাকে দেখতে মন চাইছে। তাঁরা জানেন, লাহোর থেকে ফিরে নিশ্চয়ই একবার বাড়িতে আসব। রেণু তো নিশ্চয়ই পথ চেয়ে বসে আছে। সে তো নীরবে সকল কষ্ট সহ্য করে, কিন্তু কিছু বলে না। কিছু বলে না বা বলতে চায় না, সেই জন্য আমার আরও বেশি ব্যথা লাগে।’ বঙ্গমাতার একান্ত ও অন্তর্গত এরূপ শত শত ব্যথা ও বেদনার কোনোটিই বঙ্গবন্ধুর উপলব্ধি এড়িয়ে যায়নি কোনোদিন। এরূপ মহৎ আবেগের জন্যই বঙ্গবন্ধু অনেক বেশি মানবিক মানুষ।

শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিব এক আদর্শ স্ত্রী, দায়িত্বশীল জননী, দেশমাতৃকার অহংকার। বঙ্গবন্ধুর অনুপস্থিতিতে তিনিও যে নেতৃত্বের জায়গাটি অর্জন করতে পেরেছিলেন তা আমরা বঙ্গবন্ধুর লেখা থেকেই স্পষ্ট বুঝতে পারি। ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’র একস্থানে বঙ্গবন্ধু লিখছেন : ‘লাহোর থেকে রেণুকে চিঠি দিয়েছিলাম, বোধহয় পেয়ে থাকবে। বাড়ির সকলেই আমার জন্য ব্যস্ত। ঢাকায়ও যাওয়া দরকার, সহকর্মীদের সাথে আলাপ করতে হবে। আমি গ্রেপ্তার হওয়ার পর যেন কাজ বন্ধ না হয়।’ তাঁর একথা থেকে উপলব্ধি করা যায় যে, দেশের মানুষের মুক্তির জন্য রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড থেকে মুহূর্তের জন্যও বিশ্রাম নেওয়া যাবে না। এই বার্তা সহকর্মীদের মধ্যে সঞ্চারের আকুতি আমরা তার বক্তব্যে বুঝতে পারি। এই কর্মীদের প্রতিও বঙ্গমাতার মমতার কথা বঙ্গবন্ধু উল্লেখ করেছেন এভাবে : ‘শীতের দিন ওরা এক কাপড়ে এসেছিল। রেণু নিজের গায়ের চাদর ওদের দিয়েছিল।’

এই বাংলার সবাইকে তিনি মাতৃমমতায় আগলে রাখার অসীম ধৈর্য আর ঔদার্য নিয়ে জন্মগ্রহণ করেেিছলন বলেই তার নামের পাশে আজ যুক্ত হয়েছে ‘বঙ্গমাতা’র উপাধি। মৃত্যুর ওপারে বঙ্গমাতার জন্মদিনটি ফুলেফুলে সুশোভিত হয়ে উঠুক- এই উপাধি আরো উজ্জ্বল হয়ে উঠুক। এমন মহিয়সী নারীর নামের পাশেই ‘বঙ্গমাতা’ উপাধি যথার্থ। কবির ভাষায় আমারাও সর্বান্তকরণে উচ্চারণ করি : ‘প্রণমিহি বঙ্গমাতা!’

লেখক : ড. আহমেদ আমিনুল ইসলাম – অধ্যাপক, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় 


সর্বশেষ - রাজনীতি

নির্বাচিত

বিয়ের প্রলোভনে দুই বছর যাবৎ আমাকে হোটেলে নিয়ে ধর্ষণ করে মামুনুল : জান্নাত আরা ঝর্ণা

আওয়ামী লীগের সঙ্গে কমনওয়েলথ প্রাক-নির্বাচনী পর্যবেক্ষক দলের বৈঠক

বিশ্বের ১০০ বিশ্ববিদ্যালয়ে বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে সেমিনার ও কর্মশালা হবে

বাংলাদেশের প্রতিরক্ষা খাতে যৌথ উন্নয়ন-উৎপাদনের প্রস্তাব ভারতের

মেয়েদের শার্টের বোতাম অধিক ও বাম দিকে থাকে কেন?

বাড়ির আঙ্গিনা ও ছাদে চায়না মিষ্টি কমলা চাষের পদ্ধতি

সেনা সহায়তায় ৯ মাস পর বাড়ি ফিরলো ১১ বম পরিবারের ৪৯ সদস্য

জুলাই থেকে ১০ শতাংশ বাড়তি বেতন পাবেন সরকারি কর্মচারীরা

হাতিরঝিলে অত্যাধুনিক ক্যাবল কার

কক্সবাজার সৈকতে ভেসে আসছে অসংখ্য মাছ