1. অন্যরকম
  2. অপরাধ বার্তা
  3. অভিমত
  4. আন্তর্জাতিক সংবাদ
  5. ইতিহাস
  6. এডিটরস' পিক
  7. খেলাধুলা
  8. জাতীয় সংবাদ
  9. টেকসই উন্নয়ন
  10. তথ্য প্রযুক্তি
  11. নির্বাচন বার্তা
  12. প্রতিবেদন
  13. প্রবাস বার্তা
  14. ফিচার
  15. বাণিজ্য ও অর্থনীতি

ভয়ংকর ২১ আগস্ট : শেখ হাসিনার আরও নিরাপত্তা দরকার

অধ্যাপক ড. আহমেদ আমিনুল ইসলাম : ইবার্তা টুয়েন্টিফোর ডটকম
রবিবার, ২১ আগস্ট, ২০২২

১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের রক্তস্রোতকে প্লাবনধারায় ভাসিয়ে নিতে, সেই গভীরতর ক্ষতকে আরো যন্ত্রণাদগ্ধ করার অভিলাষে ২০০৪ সালের ২১ আগস্টকে বেছে নিয়েছিল বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডে যুক্ত ঘাতকচক্রেরই উত্তরাধিকারীগণ। বিদেশে অবস্থানের কারণে ১৫ আগস্ট ট্রাজেডির নির্মম বলি থেকে ভাগ্যক্রমে রক্ষা পান বঙ্গবন্ধুর দুই কন্যা- শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা। ২১ আগস্ট টার্গেট করা হয়েছিল বঙ্গবন্ধুর রক্তধারা শেখ হাসিনাকে। ঘাতকচক্রের মস্তিষ্কে ঘুরেফিরে সেই আগস্টই আসে বঙ্গবন্ধু পরিবারের কাল হয়ে- আসে অনন্ত অভিশাপ হয়ে! বাঙালির ক্যালেন্ডারের পাতায় মর্মান্তিক ও বিষাদিত রক্তে প্লাবিত এক মাসের নাম আগস্ট!

বিএনপি-জামায়াত চার দলীয় জোট সরকারের দুর্নীতি, কালোবাজারি, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি এবং বিরোধী নেতাকর্মীদের নির্বিচার গ্রেপ্তার, হত্যা, গুম প্রভৃতি রাষ্ট্রীয় অনাচারের বিরুদ্ধে অনুষ্ঠিত আওয়ামী লীগের ২১ জনসভাকেই ঘাতকেরা টার্গেট করেছিল। ঘাতকের গ্রেনেড হামলায় সেদিন মহিলা আওয়ামী লীগের আইভি রহমানসহ আওয়ামী লীগের ২৪ জন নেতাকর্মী প্রাণ হারান। তাদের রক্তস্রোতে বঙ্গবন্ধু এভিনিউ সয়লাব হয়ে যায়। অনেক নেতাকর্মী জননেত্রীকে ঘিরে সুরক্ষা-বলয় তৈরি করে দ্রুত জনসভাস্থল থেকে সরিয়ে নিলে অল্পের জন্য তিনি প্রাণে বেঁচে যান! কিন্তু তা সত্ত্বেও ধারাবাহিক গ্রেনেড বিস্ফোরণের শব্দে জননেত্রীর শ্রবণেন্দ্রিয়ের যে ক্ষতি হয় তা তিনি এখনও বহন করছেন। জনসভায় উপস্থিত বহু নেতাকর্মী এখনও তাদের শরীরের ভেতর গ্রেনেডের স্প্রিন্টার ও মনের মধ্যে আতংকের দুঃসহ স্মৃতি বহন করে চলেছেন। অনেকের জীবনে নেমে এসেছে অসহায় পঙ্গুত্ব।

দীর্ঘদিনের আইনি যুক্তি-তর্কে প্রমাণ হয়েছে সেদিনের ভয়াবহ ও নারকীয় হত্যাযজ্ঞের নেতৃত্ব দিয়েছিল তৎকালীন বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের রাষ্ট্রীয় সমর্থনে এই হামলায় সম্পৃক্ত ছিলেন উভয় দলের অনেক নেতাকর্মী, মন্ত্রী ও সাংসদ! ৭৫-এর ১৫ আগস্ট সপরিবারে বঙ্গবন্ধু হত্যার সঙ্গে জড়িত ও দণ্ডিতদের বক্তব্য থেকে ষড়যন্ত্রকারী হিসেবে অন্যান্য অনেকের সঙ্গে যেমন জিয়াউর রহমানের নামটি বারবারই ঘুরেফিরে উচ্চারিত তেমনি ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার সাথে অন্যান্য অনেকের সঙ্গে উচ্চারিত হয়েছে তদীয়পুত্র তারেক রহমানের নাম! শুধু উচ্চারিতই নয়- ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার একজন কৌশলী কারিগর হিসেবে তার নামটি ওঠে এসেছে। বিচারিক প্রক্রিয়া শেষে যে ১৯ জনকে যাবজ্জীবন দণ্ড দেয়া হয় তার অন্যতম আসামীও তিনি।

প্রতিশোধ-পরায়ণ রাজনীতির কী বিচিত্র বংশপরম্পরা! বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে পিতা আর তার কন্যাকে হত্যাপ্রচেষ্টায় তৎপর হয়ে উঠেছিলেন পুত্র! কী এক আচানক পরম্পরা- একেবারেই রক্ত-সম্পর্কের উত্তরসূরী! বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডে জিয়াউর রহমানের সক্রিয় সমর্থনের প্রসঙ্গ অপরাপর দণ্ডিতের ন্যায় সর্বশেষ দণ্ডিত ক্যাপটেন মাজেদের সাক্ষাৎকার থেকেও পরিষ্কার হয়েছে। ১৫ আগস্টের অন্যান্য দণ্ডিত পলাতক আসামিদের দেশে ফেরৎ এনে শাস্তি কার্যকরের পাশাপাশি ২১ আগস্ট হামলার সঙ্গে জড়িতদের বিচারিক প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার মধ্য দিয়ে দেশ ও জাতিকে কলংকমুক্ত করা এখন সময়ের দাবি।

ঘাতক ঘাতকই। ঘাতক তার পরিচয় গোপন করতে পারে না। হয়তো লুকিয়ে থাকতে পারে লোকচক্ষুর আড়ালে। তাও বেশি দিন নয়। এখনও সেই ঘাতকচক্র সক্রিয়- শুধু সুযোগের অপেক্ষায়। সুযোগ পেলেই তারা প্রতিশোধের আগুনে ভস্ম করবে সব! এমনও হতে পারে বর্ণচোরার মতো তাদের কেউ কেউ আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরেই আছে- আছে অনেকের গভীর নৈকট্য ও সখ্যলাভ করে। চির পুরাতন প্রবাদ ‘তোমাকে বধিবে যে গোকুলে বাড়িছে সে’- মিথ্যা নাও হতে পারে। ‘আওয়ামী’ রূপ নিয়ে সুযোগ বুঝে ছদ্মবেশী ঘাতকেরা প্রতিশোধের স্পৃহায় স্বরূপে আত্মপ্রকাশ করলে তখন সর্বনাশের আর শেষ থাকবে না! তাদের প্রতিশোধের আগুন থেকে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনাকে রক্ষা করতে হবে। রক্ষা করতে হবে গণতন্ত্রকেও।

১৫ আগস্ট কিংবা ২১ আগস্টের অনুরূপ রক্তস্রোতের ভয়ঙ্কর পুনরাবৃত্তি আমরা দেখতে চাই না। আমরা জানি জননেত্রীকে হত্যার পরিকল্পনা হয়েছে অনেক, চেষ্টাও হয়েছে ২০ বারেরও অধিক! নিরাপত্তা ঝুঁকিপূর্ণ বিশ্বনেতাদের অন্যতম তিনি। এ মুহূর্তে তার নিরাপত্তা আরও জোরদার করতে হবে। অপরদিকে দল ভারির নামে অনুপ্রবেশকারীদের ‘বিশ্বাস’ করার চেয়ে তাদের সম্পর্কে ‘সতর্ক’ হওয়া জরুরি। বঙ্গবন্ধুও অকুণ্ঠ বিশ্বাস করতেন বাঙালি জাতির প্রতিটি মানুষকে। কিন্তু তার পরিণতি হয়েছে ভয়ঙ্কর! তাই সতর্কতাই এখন জরুরি। সামগ্রিক বিচারিক প্রক্রিয়া শেষে একদিকে বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার বেশ কিছু আসামির মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়েছে। অন্য দুজন হত্যাকারীকে আমেরিকা ও কানাডা থেকে ফেরৎ আনার জন্যও কূটনৈতিক তৎপরতা চলছে। এই তৎপরতায় মার্কিন ও কানাডা প্রশাসন কেবল সময় ক্ষেপণই করছে। অপরদিকে ২১ আগস্ট হামলা মামলার রায়ও ঘোষিত। সুতরাং ঘাতকেরা এখন যে আরও বেশি মারিয়া তা বুঝতে কষ্ট হয় না।

২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার পেপার বুক মহামান্য হাইকোর্টে অনেক আগেই পৌঁছেছে। বিচারিক প্রক্রিয়ার এসব অগ্রগতি ঘাতক ও তার সহযোগীরা ভালোভাবে নেয়নি। কোনো না কোনো উপায়ে দেশের মধ্যে হঠাৎ কোনো বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির মাধ্যমে সাধারণের দৃষ্টিকে ভিন্নখাতে ঘুরিয়ে দেওয়ার চেষ্টাসহ ভয়ঙ্কর কর্মকাণ্ডও চালাতে পারে। সুতরাং সতকর্তায় কোনোরূপ শৈথিল্যের অবকাশ নেই। গোয়েন্দা তৎপরতায়ও বিশ্রমের সুযোগ নেই। আর বর্তমানে দ্রব্যমূল্য, ভোজ্য ও জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধির আন্দোলন চলছে। গণতান্ত্রিক আন্দোলনের অধিকার সবারই আছে। কিন্তু এসব আন্দোলনের পশ্চাতে দেশি-বিদেশি শক্তির প্রেরণা ও উৎসাহ সম্পর্কেও যথাযথ তথ্য জানা জরুরি। একটি মহল মানবাধিকার, গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার, গুম, খুন প্রভৃতি ইস্যু সামনে এনে মেয়াদ শেষের আগেই শেখ হাসিনার পতন ত্বরান্বিত করতে চাইছে। তাদের এই চাওয়ার পেছনেও দেশি-বিদেশি অতি-উৎসাহী শক্তির প্রেরণা রয়েছে বলে সাধারণের ধারণা।

১৫ আগস্ট সপরিবারে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের আদর্শকে অস্বীকার করেছিল ঘাতকেরা। বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পরপরই তারা পাকিস্তানি ভাবধারা ও আদর্শের পুনঃপ্রতিষ্ঠার জন্য মারিয়া হয়ে উঠেছিল। মুক্তিযুদ্ধের চার মৌল আদর্শের প্রায় সবকটিকেই বিসর্জন দিয়েছিল। ধর্মনিরপেক্ষ আদর্শের ভিত্তিতে বঙ্গবন্ধু দক্ষিণ এশিয়ায় একটি আধুনিক ও উন্নত চেতনাসমৃদ্ধ মুসলিম রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার যে স্বপ্ন দেখেছিলেন ঘাতকেরা তাতে ক্ষুব্ধ হয়েছিল, বাঙালি জাতীয়তাবাদী যে চেতনাকে জাতির পিতা আদর্শ হিসেবে গ্রহণ করেছিলেন ঘাতকেরা তাতেও ক্ষুব্ধ হয়েছিল, ক্ষুব্ধ হয়েছিল গণতন্ত্র ও সমাজতান্ত্রিক চেতনা নিয়ে মানব কল্যাণমুখী রাষ্ট্র গঠনে বঙ্গবন্ধুর সার্বিক প্রচেষ্টায়ও। ইসলামি প্রজাতন্ত্রে বিশ্বাসীরা ১৫ আগস্ট মর্মান্তিক হত্যাকাণ্ডে খুশি হয়েছিল- খুশি হয়েছিল এদেশের ঘাতকগোষ্ঠী ও তাদের আন্তর্জাতিক মিত্র-সম্প্রদায়। তাই ৭৫-এর ১৫ আগস্টের পর থেকে মধ্যপ্রাচ্যের অনেক দেশ বঙ্গবন্ধু-হত্যাকারী কর্তৃক শাসিত বাংলাদেশকে একের পর এক ‘স্বীকৃতি’ দিতে থাকে! আমরা মনে করি ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুকন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যাচেষ্টা ঘাতকচক্রের ১৫ আগস্টেরই অসমাপ্ত কাজ সমাপ্তির প্রয়াসমাত্র!

১৫ আগস্ট হত্যাকাণ্ডে যেমন আন্তর্জাতিক চক্রান্ত ছিল ২১ আগস্ট হত্যাকাণ্ডে তা ছিল না। এই হত্যাকাণ্ডে হাওয়া ভবন ষড়যন্ত্রই ছিল অন্যতম। তার পশ্চাতে ছিল তৎকালীন বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের অকুণ্ঠ সমর্থন! ১৫ আগস্ট হত্যাকারীদের উদ্দেশ্যে জিয়াউর রহমান বলেছিলেন ‘গো এহেড’ আর ২১ আগস্টকে সফল করার নির্দেশ এসেছিল তারেক রহমান নিয়ন্ত্রিত হাওয়া ভবন থেকে। সুতরাং ১৫ আগস্ট ট্রাজেডিরই শেষ দৃশ্য হিসেবে ঘাতকেরা বেছে নিয়েছিল ২১ আগস্ট! অর্থাৎ ঘাতকের লক্ষ্যই ছিল শেখ হাসিনাকে হত্যার মাধ্যমে এই ভূ-বাংলা থেকে গণতন্ত্রকে চিরতরে নির্বাসিত করা, বঙ্গবন্ধুর রক্তধারা নিঃশেষ করা। ১৫ আগস্ট ও ২১ আগস্টের কুশীলবগণও বংশ-পরম্পরায় কী আশ্চর্য রকমে একই কুলোদ্ভূত!

বিচারিক প্রক্রিয়া সম্পন্ন হওয়ার মাধ্যমে আমরা জানি ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার মোট আসামী সংখ্যা ৪৯ জন। এদের আবার বিভিন্ন জনের বিভিন্ন মেয়াদি শাস্তিও প্রদান করা হয়। আসামীদের ১৯ জনকে মৃত্যুদণ্ড এবং ১৯ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দণ্ডিত করা হয়। এদের মধ্যে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত তৎকালীন স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর এবং আবদুস সালাম পিন্টুসহ ৩১ জন রয়েছেন কারাগারে। তারেক রহমান এবং হারিছ চৌধুরীসহ ১৮ জন পলাতক রয়েছেন। যুদ্ধাপরাধ ও অন্যান্য মামলায় ফাঁসি কার্যকর হওয়ায় অন্য ৩ জন মামলা থেকে বাদ পড়েছেন।

২১ আগস্ট যে বিএনপি-জামায়াতের যৌথ হত্যাকাণ্ড তার প্রমাণ মেলে আসামীদের পরিচিতিদৃষ্টেও। এই মামলার মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামী তাজুল ইসলাম বিএনপি সরকারের শিক্ষা উপমন্ত্রী আবদুস সালাম পিন্টুর ভাই। গ্রেনেড হামলার পর ভুয়া পার্সপোর্টে তাকে বিদেশে পাঠিয়ে দেয় সরকার। বর্তমানে তিনি দক্ষিণ আফ্রিকায় আছেন। যাবজ্জীন দণ্ডিত বিএনপি সরকারের সবচয়ে প্রভাবশালী ব্যক্তিত্ব হারিছ চৌধুরী। ২০০৭ সালে অসাংবিধানিক তত্ত্বাবধায়ক সরকার ক্ষমতা গ্রহণের পরই দেশ থেকে পালিয়ে যান। তিনি প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা ছিলেন। তবে সম্প্রতি তার মৃত্যুজনিত খবরও প্রচারিত হয়েছে। যার সত্যতা শতভাগ নিশ্চিত নয়। তৎকালীন ডিজিএফআই-এর প্রধান মেজর জেনারেল (অব.) রেজ্জাকুল হায়দার চৌধুরীকে আটক করা হয় ২০০৮ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ক্ষমতা গ্রহণের পর। ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় তিনি মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামী। এছাড়া, ১০ ট্রাক অস্ত্র মামলায় ইতোমধ্যে তিনি মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত। এনএসআই-এর সাবেক মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আবদুর রহিম। ২১ আগস্ট মামলার গুরুত্বপূর্ণ আসামী। এ মামলায় তিনিও মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত । ১০ ট্রাক অস্ত্র মামলায় তিনিও মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত। খালেদা জিয়ার ভাগ্নে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর সাবেক কর্মকর্তা লে. কমান্ডার (অব.) সাইফুল ইসলাম ডিউক দীর্ঘদিন জামিনে থাকলেও বর্তমানে কারাগারে আছেন। ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার সময় পুলিশ প্রধানের দায়িত্বে ছিলেন শহুদুল হক। বর্তমানে তিনিও কারগারে। পুলিশ প্রধান হয়েও ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেননি তিনি! তার বিভিন্ন ভূমিকা প্রশ্নবিদ্ধ। তাকে দুই বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। গ্রেনেড হামলার সময় মোহাম্মদ আশরাফুল হুদা ঢাকার পুলিশ কমিশনারের দায়িত্বে ছিলেন। গ্রেনেড হামলা মামলায় বিতর্কিত অবস্থানের জন্য তাকেও দুই বছরের দণ্ড দেওয়া হয়। গ্রেনেড হামলার সময় অতিরিক্ত পুলিশ প্রধানের দায়িত্বে ছিলেন খোদাবক্স চৌধুরী। পরে পুলিশ প্রধান হয়েছিলেন। গ্রেনেড হামলা মামলায় তিনিও দুই বছরের জন্য দণ্ডিত। কুমিল্লার সাংসদ শাহ মোফাজ্জল হোসেন কায়কোবাদও যাবজ্জীবন দণ্ডিত পলাতক আসামী। বর্তমানে তিনি সৌদি আরবে আছেন বলে জানা যায়। চারদলীয় জোট সরকারের ডিজিএফআই-এর দ্বিতীয় শীর্ষ ব্যক্তিত্ব ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এটিএম আমিনও পলাতক রয়েছেন। অসাংবিধানিক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের মেয়াদ শেষ হতেই তিনি আমেরিকা পালিয়ে যান। সাবেক সেনা কর্মকর্তা লে. কর্নেল (অব.) সাইফুল ইসলাম পলাতক অবস্থায় কানাডা বসবাস করছেন। সিআইডির সাবেক বিশেষ পুলিশ সুপার রুহুল আমিন, সাবেক সিনিয়র এএসপি মুন্সি আতিকুর রহমান এবং এএসপি আবদুর রশিদ বর্তমানে কারাগারে রয়েছেন। এই ৩ জন বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের সময় মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ছিলেন। এ মামলার আরেক মৃত্যুণ্ডপ্রাপ্ত আসামী হানিফ এন্টারপ্রাইজের মালিক হানিফ পলাতক রয়েছেন।

বঙ্গবন্ধুকন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনাকে বারবার কেন হত্যাচেষ্টা করা হয়? কারা তাকে হত্যা করতে চায়? কেনই বা তাকে বারবার হত্যাচেষ্টায় উদ্ধত হয় একটি বিশেষ গোষ্ঠী- নতুন প্রজন্মের তা জানা দরকার। কারণ তরুণরাই সকল অপশক্তির কবল থেকে মুক্ত করে দেশকে উন্নতি ও সমৃদ্ধির পথে নিয়ে যাবেন।

লেখক : ড. আহমেদ আমিনুল ইসলাম – অধ্যাপক, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় 


সর্বশেষ - রাজনীতি