ইবার্তা অনলাইন ডেস্ক: দেশে প্রতিদিন যে গ্যাস উৎপাদিত হয়, তার প্রায় ৬০ ভাগ তোলা হয় এই বিবিয়ানা, জালালাবাদ এবং মৌলভীবাজার গ্যাসক্ষেত্র থেকে। এ তিনটি গ্যাসক্ষেত্র মার্কিন কোম্পানি শেভরনের কাছ থেকে কিনে নেয়ার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। গতকাল বুধবার জাতীয় জ্বালানি নিরাপত্তা দিবস উপলক্ষে পেট্রোবাংলার কার্যালয়ে আয়োজিত এক সেমিনারে জ্বালানি ও খনিজসম্পদ সচিব নাজিম উদ্দিন চৌধুরী এ কথা জানান।
জ্বালানি সচিব বলেন, বতর্মানে গ্যাসের জন্য উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। আগামী এক বছর পর এই সমস্যা থাকবে না। তিনি বলেন, বিপিসি একসময় লোকসানি প্রতিষ্ঠান ছিল। সেই সময় বিপিসি বেশি দামে কিনে কম দামে জ্বালানি তেল সরবরাহ করত। আর সেটা না করলে দেশের অনেক সরকারি প্রতিষ্ঠান লোকসান দিত। এখন বিপিসিও লাভ করছে। বাপেক্সকে শক্তিশালী করা হচ্ছে। সাগরে জরিপের জন্য ভেসেল কেনা হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সাহসী পদক্ষেপের কারণে বাংলাদেশ খুবই কম দামে ৫টি গ্যাসক্ষেত্র কিনতে পেরেছিল। এখন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাহসিকতার কারণে দেশের তিনটি বড় গ্যাসক্ষেত্র কেনার বিষয়ে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
নাজিম উদ্দিন চৌধুরী বলেন, দেশের জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সরকারের শীর্ষ পর্যায়ের সবুজ সংকেতের পর শেভরনের গ্যাসক্ষেত্র তিনটি কেনার জন্য মার্কিন কোম্পানির সঙ্গে সম্প্রতি এক বৈঠক হয়। তবে কোন গ্যাসক্ষেত্রগুলো কবে কেনা হচ্ছে সে বিষয়ে সুস্পষ্ট করে কিছু বলেননি সচিব।
তিনি জানান, শেভরনের এই গ্যাসক্ষেত্রগুলোতে কী পরিমাণ গ্যাস আছে, তার মূল্য কত ইত্যাদি বিষয়ে সমীক্ষা চালানোর জন্য একটি কোম্পানিকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, বিশ্ববাজারে জ্বালানির দাম কমে যাওয়ার কারণে শেভরন পৃথিবীর বেশ কয়েকটি দেশ থেকে তাদের ব্যবসা গুটিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। প্রায় এক বছর আগে ওই গ্যাসক্ষেত্রগুলো বিক্রির জন্য ‘হিমালয়া’ নামে চীনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের একটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তিও সই করে শেভরন। তবে বাংলাদেশ সরকার সেখানে আপত্তি জানায়। কারণ চুক্তিমতে বাংলাদেশ সরকারের অনুমোদন ছাড়া ওই গ্যাসক্ষেত্র অন্য কারও কাছে বিক্রি করা যায় না।
জানা গেছে, বিশ্বখ্যাত কোম্পানি উড-ম্যাকেঞ্জির মাধ্যমে শেভরনের সম্পদের মূল্য ও গ্যাসের মজুদ যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। ম্যাকেঞ্জি ইতিমধ্যে প্রাথমিক একটি প্রতিবেদন পেট্রোবাংলার কাছে জমা দিয়েছে। ম্যাকেঞ্জির রিপোর্ট পর্যালোচনা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান আবুল মনসুর মো. ফয়জুল্লাহ।