1. অন্যরকম
  2. অপরাধ বার্তা
  3. অভিমত
  4. আন্তর্জাতিক সংবাদ
  5. ইতিহাস
  6. এডিটরস' পিক
  7. খেলাধুলা
  8. জাতীয় সংবাদ
  9. টেকসই উন্নয়ন
  10. তথ্য প্রযুক্তি
  11. নির্বাচন বার্তা
  12. প্রতিবেদন
  13. প্রবাস বার্তা
  14. ফিচার
  15. বাণিজ্য ও অর্থনীতি

আরাফাতকে সংসদ সদস্য দেখতে চাই

ড. মিল্টন বিশ্বাস : ইবার্তা টুয়েন্টিফোর ডটকম
শুক্রবার, ১৪ জুলাই, ২০২৩

প্রফেসর মোহাম্মদ আলী আরাফাত তথা সামাজিক মাধ্যমে পরিচিত ‘এ আরাফাত’ প্রগতিশীল ও অসাম্প্রদায়িক জনগোষ্ঠীর কাছে খুব চেনা মুখ। খুব বেশি দিন হয়নি তিনি আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সদস্য হয়েছেন। বরং তিনি তার অনেক আগে থেকেই মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে যুক্তিনিষ্ঠ বক্তব্য উপস্থাপন এবং ইতিবাচক বাংলাদেশের জয় কীর্তনে মুখরিত করেছেন মিডিয়া। তিনি এজন সুবক্তা, লেখক ও সংগঠক।

প্রফেসর আরাফাতকে ভালো করে চেনার সুযোগ ঘটে ২০১৪ সালের অগ্নিসন্ত্রাসীর ভয়ঙ্কর পরিস্থিতির মধ্যে। সে সময় তিনি নিরলসভাবে বিএনপি-জামায়াতের অরাজকতা ও নৈরাজ্যের বিরুদ্ধে বলে গেছেন। মোহাম্মদ এ আরাফাত সুচিন্তা ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান। কানাডিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের স্ট্র্যাটেজিক ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড পলিসি বিভাগের অধ্যাপক। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও চ্যালেঞ্জ, ট্রানজিট এবং কানেক্টিভিটি, বিদ্যুৎ খাতের জন্য উপযুক্ত নীতি, যুদ্ধাপরাধের বিচার, বাংলাদেশে রাজনৈতিক উন্নয়ন এবং গণতন্ত্র ইত্যাদির মতো বিভিন্ন বিষয়ে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক মিডিয়ায় অনেক কলাম লিখেছেন তিনি।

অন্যদিকে তিনি নিবেদিত হয়েছেন জাতীয় অনুষ্ঠানের ব্যানারে তরুণ সমাজকে কল্যাণকর চেতনায় উজ্জীবিত করার মন্ত্রে। সামাজিক মাধ্যমে পরিচিত ‘এ আরাফাত’ বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠদানের বাইরে নিজের যে ভাবমূর্তি গড়ে তুলেছেন তা নিঃসন্দেহে অনেকের কাছে ঈর্ষার কারণ হয়ে উঠেছে। এজন্য তাকে নিয়ে অপপ্রচার করতে দেখা যাচ্ছে নানা মাধ্যমে।

তবে তিনি সব সমালোচনার ঊর্ধ্বে একজন সৎ ও নীতিবান ব্যক্তিত্ব হিসেবে মানুষের কাছে অভিনন্দিত হচ্ছেন নির্বাচনী প্রচারণায় অবতীর্ণ হওয়ার পর। মনে রাখতে হবে ঢাকা-১৭ আসনে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রত্যাশী ছিলেন ২২ জন। তাদের মধ্যে ২১ জনকে পেছনে ফেলে মনোনয়ন পেয়েছেন আরাফাত। তবে ক্ষমতাসীনদের মনোনয়ন দৌড়ে পিছিয়ে পড়েছেন পদাধিকার বলে আরাফাতের চাইতে এগিয়ে থাকা ব্যক্তিরাও। কারণ তার অবদান অনেক।

এ স্বল্প পরিসরে প্রফেসর আরাফাতের অবদানের কথা বলে শেষ করা যাবে না। কয়েকটি প্রসঙ্গ এখানে উল্লেখ করা যেতে পারে। যেমন- ২৮ ডিসেম্বর ২০১৯-এ, আরাফাত বাংলাদেশ ইয়ুথ লিডারশিপ সেন্টারে সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড ইনফরমেশন দ্বারা আয়োজিত বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্ব: আজকের তরুণদের জন্য পাঠ, একটি যুব সম্মেলনে বক্তৃতা করে শ্রোতাদের চমকিত করেন। তিনি ভারতের সাথে শক্তিশালী সম্পর্ক এবং পণ্য পরিবহনের অনুমতি প্রদান নিয়ে সরকারের হয়ে মতামত প্রদান করেছেন।

এমনকি তিনি সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এএমএস কিবরিয়ার ছেলে রেজা কিবরিয়াকে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে অভিযোগ করার জন্য দেশদ্রোহী বলে অভিহিত করেন। তিনি র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের কঠোর সমালোচক। ২০১৮ সালের নির্বাচনে বিএনপি গণ-অধিকার পরিষদ গঠন করলে এ গণঅধিকার পরিষদ আওয়ামী লীগ সরকারের জন্য কোনো হুমকি নয় বলে বর্ণনা করেছিলেন।

এছাড়া একরামুল হক হত্যার সুনির্দিষ্ট প্রমাণসহ বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের জন্য ম্যাগনিটস্কি আইনের অধীনে যুক্তরাষ্ট্র র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নকে স্যাংশনের আওতায় নিয়ে এলে তা সরকারের জন্য কোনো সমস্যা নয় বলে প্রচার করেন তিনি।

২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে, বাংলাদেশ সরকার জামায়াতের নিবন্ধন বাতিলের সিদ্ধান্ত হাইকোর্টে পাঠায়। সেখানে ৩টির মধ্যে দুটি জামায়াত ইসলামীকে নিবন্ধন বাতিলের অনুমোদন দেয়। সরকারের এসব সিদ্ধান্ত নেওয়ার কারণ ধর্মীয় জঙ্গিবাদ এবং বাংলাদেশ জামায়াত ইসলামীর রয়েছে গভীর সম্পর্ক- এ বিষয় তুলে ধরেছিলেন মোহাম্মদ এ আরাফাত।

ঢাকা-১৭ আসনের নির্বাচন নিয়ে উচ্ছ্বসিত ভোটাররা বলেছেন, ‘যাকেই ভোট দেবেন, আগের তার বিভিন্ন দিক বিবেচনা করবেন। জনপ্রতিনিধি হিসেবে শিক্ষা, রাজনৈতিক পরিচয় ও ব্যক্তিত্বের দিকগুলো সবার আগে তারা গুরুত্ব দেবেন। কোন প্রার্থী কেমন, ভোটারদের সঙ্গে তাদের যোগাযোগ কতখানি সেগুলোও খেয়াল রাখবেন।’ ভোটারদের এ ভাবনা প্রফেসর আরাফাতকে যোগ্য প্রার্থী হিসেবে সামনে নিয়ে এসেছে। বনানী-গুলশানের চাকরিজীবী ভোটাররা সংবাদমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিয়মিতই উপ-নির্বাচন নিয়ে আলোচনাগুলোয় চোখ রাখছেন। তারাও আরাফাতকে সংসদ সদস্য হিসেবে দেখতে চান।

ঢাকা-১৭ আসনের হতাশা শেষ হওয়ার দিন আসছে ১৭ জুলাই (২০২৩)। দীর্ঘদিন যে এলাকার মানুষগুলো আওয়ামী লীগ নেতৃত্বের সংস্পর্শ পায়নি তারা আরাফাতের নেতৃত্বে উন্নয়নের চাকা ঘুরাতে চলেছেন। ২০০১ সালে এখানে বিএনপির প্রার্থী সংসদ সদস্য ছিলেন। তারপর জোটভুক্ত এমপিরা ছিলেন। কিন্তু তারা উন্নয়নমূলক কোনো কাজ করেননি। প্রয়াত চিত্রনায়ক আকবর হোসেন পাঠান ওরফে ফারুক আওয়ামী লীগের হলেও তিনি দীর্ঘদিন অসুস্থ ছিলেন। তিনি এ আসনে সেভাবে সময় দিতে পারেননি, সমস্যার সমাধানও করতে পারেননি। ভোটারদের মধ্যে সেই হতাশার জায়গাটায় আরাফাত আশার বাণী শুনিয়েছেন। তাই ভোটাররা এখন হতাশা থেকে আশার আলো দেখছেন। তারা বলছেন, এখন আমরা প্রকৃত নৌকার প্রার্থী পেয়েছি।

প্রকৃতপক্ষে ঢাকা-১৭ আসনের উপ-নির্বাচনে নৌকার মনোনয়ন পাওয়া মোহাম্মদ আলী আরাফাত জয়ী হয়ে মানুষের হিতার্থে কাজ করবেন এবং দেশপ্রেমের পরাকাষ্ঠা প্রতিষ্ঠা করবেন এটাই মানুষের প্রত্যাশা। তাছাড়া ঢাকা-১৭ আসনের উপ-নির্বাচনে বিএনপির কোনো প্রার্থী নেই। স্বতন্ত্র কিংবা অন্য কোনো দলের শক্ত কোনো প্রার্থীও নেই এখানে। সে হিসেবে ঢাকা-১৭ উপ-নির্বাচনে আসনটি থেকে ‘এমপি’ হওয়া আরাফাতের জন্য সময়ের ব্যাপার।

তবে যত বেশি মানুষ ভোট দিতে আসবে নৌকা তত বেশি ভোট পাবে এমন আশা ব্যক্ত করে আরাফাত বলেছেন, ‘এটা আমি নিশ্চিত করে বলতে পারি ঢাকা-১৭ আসনের এ নির্বাচনের মাধ্যমে গোটা বিশ্বকে আমরা দেখিয়ে দেব, আওয়ামী লীগ থাকলে এ দেশে গণতন্ত্র থাকে।’

১০ জুলাই অধ্যাপক মোহাম্মদ এ আরাফাত এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, ‘মিথ্যা বলে, মিথ্যা আশ্বাস দিয়ে ভোট চাই না।’ স্পষ্টবাদী ও সততার মুখাপেক্ষী এই প্রার্থী মেধা, যোগ্যতা ও শিক্ষাদীক্ষায় যে এগিয়ে আছেন এটা বলা বাহুল্য। তিনি বলেছেন, ‘নির্বাচনে আমরা তিনটি গোল (লক্ষ্য) নির্ধারণ করেছি। আমরা শুধু বিজয়ী হবো, এটা আমাদের একমাত্র লক্ষ্য নয়। এত অল্প সময়ের জন্য যে নির্বাচন সেখানে সাধারণ ভোটারদের মধ্যে একটা অনাগ্রহ থাকে, সেটা হলো ভোট দিতে না আসা। আমরা, আমাদের সমর্থকগোষ্ঠী; তারাও চিন্তা করে যে মাত্র পাঁচ মাসের নির্বাচন, এ নির্বাচনে কী হবে? তারপরও আমরা ভোটারদের আগ্রহ তৈরিতে কাজ করছি। যাতে তারা ভোট দিতে আসেন। ভোট সংগ্রহ এবং ভোটাররা যাতে কেন্দ্রে আসেন— ব্যবস্থাপনার এসব কাজ করতে গিয়ে আমাদের দলের ভেতরে নেতাকর্মীদের নিয়ে একটা পর একটা সভা করতে হয়েছে। পুরো ব্যবস্থাপনাটা আমাদের ঢেলে সাজাতে হয়েছে।

নির্বাচন পরিচালনা কমিটি, ওয়ার্ডভিত্তিক কমিটি, সংস্থাপন কমিটি প্রভৃতি।’ এ কথাগুলো দূরদৃষ্টিসম্পন্ন নেতার। ঢাকা-১৭ আসনে তিন লাখ ২৫ হাজার ভোটার আছেন, কেন্দ্র আছে ১২৪টি। নির্বাচনী প্রচারণা এবং ভোটের রাজনীতি থেকে প্রফেসর আরাফাত জাতীয় নির্বাচনের প্রস্তুতি নিতে সক্ষম হবেন এবং ভবিষ্যতে আওয়ামী লীগের নীতি-নির্ধারণে ভূমিকা রাখতে পারবেন বলে আমরা মনে করি।

প্রফেসর আরাফাতের এটিও গুরুত্ববহ অনন্য কথা- ‘নির্বাচনে আমি তিনটি দিক থেকে বিজয়ী হতে চাই। জনগণকে সাথে নিয়ে নির্বাচনে বিজয়ী হওয়া, জনসংযোগের মাধ্যমে সর্বোচ্চ সংখ্যক ভোটার উপস্থিতি করানো এবং একটি পরিচ্ছন্ন ও সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে জয়ী হওয়া।’

আশা করছি ১৭ জুলাই উপ-নির্বাচনে প্রফেসর মোহাম্মদ আলী আরাফাত সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে জাতীয় জীবনে গৌরব বৃদ্ধি করবেন। সুনাম আনবেন দেশ, জনগণ ও দলের।

লেখক: ড. মিল্টন বিশ্বাস – অধ্যাপক ও চেয়ারম্যান, বাংলা বিভাগ, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়।


সর্বশেষ - রাজনীতি