1. অন্যরকম
  2. অপরাধ বার্তা
  3. অভিমত
  4. আন্তর্জাতিক সংবাদ
  5. ইতিহাস
  6. এডিটরস' পিক
  7. খেলাধুলা
  8. জাতীয় সংবাদ
  9. টেকসই উন্নয়ন
  10. তথ্য প্রযুক্তি
  11. নির্বাচন বার্তা
  12. প্রতিবেদন
  13. প্রবাস বার্তা
  14. ফিচার
  15. বাণিজ্য ও অর্থনীতি

উদ্যোক্তা হওয়ার স্বপ্ন ও কঠোর পরিশ্রমই বদলে দিয়েছে দুই ভাইয়ের জীবন

রাজশাহী জেলা প্রতিনিধি : ইবার্তা টুয়েন্টিফোর ডটকম
মঙ্গলবার, ১১ জুলাই, ২০২৩

বাবা ঢাকায় রিকশা চালান। বড় ছেলে জুয়েল মামুন (২৬) পড়েন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে আর ছোট ছেলে জাহাঙ্গীর (২২) পড়েন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি)। দুই ভাইয়ের পড়াশোনার খরচ আর সামলাতে পারছিল না বাবা। সেই সঙ্গে স্ত্রী ও ছোট কন্যা সন্তানকে নিয়ে সংসার চালানোও যেন পাহাড়সম ওজন হয়ে উঠেছিল। বড় ছেলে মামুন চেষ্টা করে টিউশনিসহ নানা কাজ করে পড়াশোনার খরচ মেটান। কিন্তু কিছুতেই যেন হচ্ছে না। পড়াশোনা বন্ধ্ হওয়ার উপক্রম। এমন সময়ই আসে আমের মৌসুম। অনলাইনের মাধ্যমে আম বিক্রির ধারণা তাদের জীবন বদলে দিয়েছে। তাদের বাড়ি ঘাটাইল উপজেলার রতন বরিষ গ্রামের দরিদ্র একটি পরিবারে।

বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার পরপরই পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়া নিয়ে অনেক অনিশ্চয়তা দেখা দেয় জুয়েল মামুনের। কিছুদিন পর একটা স্কলারশিপ পায় সে। তখন থেকে আর কারও ওপর নির্ভর করতে হয়নি জুয়েল মামুনকে।

বছর চারেক আগের কথা। সেবার আমের মৌসুমে ছিল পবিত্র রমজান। ছুটিতে ছিলো বিশ্ববিদ্যালয় । ফেসবুকে ‘ফ্রুট হাট’ নামে একটা পেজ খুলে দুই ভাই। ক্রেতাদের পছন্দ অনুযায়ী সরাসরি বাগান থেকে আম সংগ্রহ করে শুরু হল কুরিয়ারে পৌঁছে দেওয়া। প্রথম বছর প্রায় পাঁচ হাজার কেজি আম বিক্রি করেছিল তরুণ এই উদ্যোক্তা।

পরের বছর নিয়ম করলেন, আগে টাকা পাঠিয়ে বুকিং দিতে হবে। সাড়া মিলল তাতেও। বিক্রি হল প্রায় ১৫ হাজার কেজি আম। গত বছর বিক্রি হয়েছে ৩০ হাজার কেজি। এবারও তাদের কার্যক্রম চলছে পুরোদমে।

রাজশাহীর পুঠিয়ার বানেশ্বর আমের বাজারে দুই ভাই আরও পাঁচজন কর্মীকে নিয়ে এই কর্মযজ্ঞ চালান। কর্মীদের একজন শুধু আমের মান নিশ্চিত করেন। অন্যরা আম ওজন করা, প্যাকেট করা, কুরিয়ারে বা গাড়িতে পাঠানোর কাজ করেন। ক্রেতাদের চাহিদা অনুযায়ী আম পাঠানো তারা।

জুয়েল মামুন বলেন, ‘করোনার কারণে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ্ ছিল। অনেক অনিশ্চয়তার মধ্যেও আমের ব্যবসা করে আমরা সংসারের হাল ধরতে পেরেছি।’ ব্যবসা থেকে আয় থেকে বাড়ির কাঁচা মেঝে পাকা করে ওপরে নতুন টিনের ছাউনি দিয়েছি। গরুর খামার রয়েছে। খামারে দুটি ষাঁড় ছিল। এই ঈদে অনলাইনের মাধ্যমেই বিক্রি করে ফেলেছি।

জুয়েল শেষ করেছেন স্নাতকোত্তর আর ছোট ভাই আলমগীর চতুর্থ বর্ষে। গত কয়েক বছর ধরে তাদের বাবাকে আর রিকশা চালাতে হয় না। জুয়েল একটি সরকারি চাকরির লিখিত পরীক্ষায় নির্বাচিত হয়ে আছেন। চাকরিটি হলে তার পাশাপাশি ব্যবসাটি পরিচালনা করবেন বলেও স্বপ্ন দেখেন। আর সরকারি চাকরি না হলে প্রাইভেট চাকরির দিকে না ছুটে উদ্যোক্তা হবেন বলে জানিয়েছেন জুয়েল।

তিনি আরও জানান, প্রতি আমের সিজনে প্রায় ৩০-৩৫ টন আম বিক্রি করে থাকি এবং ১০/১১ জন শ্রমিকও এই ব্যবসায় আমাদের সাথে কাজ করেন বর্তমানে।

মামুনের ব্যবসা সম্পর্কে জানতে চাইলে এম.কে.ডি.আর গণ উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক মো. লৎফর রহমান বলেন, মামুন দরিদ্র পরিবারে সন্তান। আমার পরিচিত মুখ। ছেলেটি খুবই উদ্যমী এবং কর্মঠ। সে পরিশ্রম করে তার পড়াশোনা চালিয়ে যাচ্ছে এবং তার অসচ্ছল পিতামাতার পাশে দাঁড়িয়েছে। সেই সাথে সংসারের যাবতীয় খরচও বহন করছে। এসময় ব্যবসায়িক কর্মকাণ্ডের যে কোন প্রয়োজনে সর্বদা মামুনের পাশে থাকার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন তিনি।


সর্বশেষ - রাজনীতি