1. অন্যরকম
  2. অপরাধ বার্তা
  3. অভিমত
  4. আন্তর্জাতিক সংবাদ
  5. ইতিহাস
  6. এডিটরস' পিক
  7. খেলাধুলা
  8. জাতীয় সংবাদ
  9. টেকসই উন্নয়ন
  10. তথ্য প্রযুক্তি
  11. নির্বাচন বার্তা
  12. প্রতিবেদন
  13. প্রবাস বার্তা
  14. ফিচার
  15. বাণিজ্য ও অর্থনীতি

ক্যাশলেস পদ্ধতি: ভূমি উন্নয়ন কর আদায়ে অভাবনীয় সাফল্য

নিজস্ব প্রতিবেদক : ইবার্তা টুয়েন্টিফোর ডটকম
শনিবার, ১ জুলাই, ২০২৩

গত ১৪ এপ্রিল থেকে ভূমি উন্নয়ন কর সম্পূর্ণ ক্যাশলেস পদ্ধতিতে আদায় করা হচ্ছে। এ পদ্ধতিতে আদায়ের ক্ষেত্রে অভাবনীয় সাফল্য পেয়েছে ভূমি মন্ত্রণালয়। শুরুর প্রথম মাসেই আদায় হয়েছে আগের তুলনায় তিনগুণ কর।

কোনো জমি ভোগ দখলের সুবিধা গ্রহণের জন্য সরকারকে প্রতি শতাংশ জমির জন্য বছরভিত্তিক যে নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা প্রদান করতে হয়, সেটাই হচ্ছে ভূমি উন্নয়ন কর। ভূমি উন্নয়ন কর দেওয়ার পর দাতা দাখিলা পাওয়ার অধিকার লাভ করেন। দাখিলা দেওয়া না হলে তা অধ্যাদেশের লঙ্ঘন হবে। এই দাখিলা জমির মালিকানা প্রমাণের গুরুত্বপূর্ণ দলিল।

যাদের জমি রয়েছে এবং যারা বাড়ি বা ফ্ল্যাটের মালিকানার অংশ হিসেবে জমি পেয়েছেন, তাদের সবার জন্য এ কর দেওয়া বাধ্যতামূলক। প্রতি বছর সংশ্লিষ্ট ভূমি অফিসে ভূমি কর জমা দিয়ে রসিদ নিতে হতো।

গত ২৯ মার্চ ঢাকায় অনুষ্ঠিত জাতীয় ভূমি সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ১৪ এপ্রিল থেকে সম্পূর্ণ ক্যাশলেস ভূমি উন্নয়ন কর ব্যবস্থা কার্যকর করার ঘোষণা দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সে অনুযায়ী গত ১৪ এপ্রিল থেকে এ কাজ সম্পূর্ণ অনলাইনেই হচ্ছে।

জানা গেছে, ক্যাশলেস পদ্ধতি চালুর আগে এক মাসে ভূমি উন্নয়ন কর আদায় হয় ১০৯ কোটি ২২ লাখ ৯৫ হাজার ৩২০ টাকা। সেখানে ক্যাশলেস পদ্ধতি চালুর পর এক মাসে আদায় হয় ৩২৬ কোটি ১৪ লাখ ৪ হাজার ১৮১ টাকা। এক বছরে এ খাত থেকে ২ হাজার কোটি টাকার কর আদায় করার আশা করছে ভূমি মন্ত্রণালয়।

ভূমি মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব (ডিজিটালাইজেশন, নলেজ ম্যানেজমেন্ট ও পারফরমেন্স অনুবিভাগ) ড. মো. জাহিদ হোসেন পনির জানান, গত ১৪ এপ্রিল থেকে ভূমি উন্নয়ন কর সম্পূর্ণ ক্যাশলেস পদ্ধতিতে আদায় হচ্ছে। প্রথম মাসেই আগের তুলনায় তিনগুণ ভূমি উন্নয়ন কর আদায় হয়েছে।

তিনি বলেন, ভূমি কর দেওয়ার জন্য আগে ভূমি অফিসে যেতে হতো। কিন্তু এখন ঘরে বসেই যে কেউ তার জমির কর পরিশোধ করতে পারছেন।

ভূমি সচিব মো. খলিলুর রহমান বলেন, ভূমি সংক্রান্ত বিভিন্ন পদ্ধতি আমরা প্রতিনিয়ত সহজ করার চেষ্টা করছি। এরই একটি হলো ভূমি উন্নয়ন কর। এখন ভূমি উন্নয়ন কর শতভাগ ক্যাশলেস পদ্ধতিতে নেওয়া হচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, ক্যাশলেস করার ফলে মানুষ এখন অনেক সহজেই ভূমি উন্নয়ন কর দিচ্ছে। এর ফলে এ খাতে দ্রুতই কর আদায় বাড়ছে। মানুষ এখন ভোগান্তি ছাড়াই কর পরিশোধ করছে।

ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী বলেন, আগামী বছর থেকে ভূমি উন্নয়ন কর বাবদ প্রায় ২ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব হিসেবে সরকারি কোষাগারে জমা দেওয়া সম্ভব হবে। এই অর্থের পরিমাণ ডিজিটাল ভূমি উন্নয়ন কর সিস্টেম স্থাপনের আগে ভূমি কর বাবদ আদায় করা অর্থের প্রায় তিনগুণ।

ভূমিকর ব্যবস্থাকে আধুনিক করে গড়ে তোলার জন্য ভূমি উন্নয়ন কর আইনের খসড়া ইতোমধ্যে মন্ত্রিসভায় নীতিগতভাবে অনুমোদন পেয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, খুব দ্রুত এই খসড়া জাতীয় সংসদে আইন প্রণয়নের জন্য পাঠানো হবে। জাতীয় অর্থনৈতিক পরিকল্পনার কথা মাথায় রেখে ভূমি উন্নয়ন কর পরিশোধের বর্ষ দেশে প্রচলিত অর্থবছরে (জুন-জুলাই) করার প্রস্তাব করা হয়েছে খসড়া আইনে।

কর দিতে করতে হবে নিবন্ধন

অনলাইনে ভূমি উন্নয়ন কর দিতে ভূমির মালিককে প্রথমে নিবন্ধন করতে হবে। জাতীয় পরিচয়পত্র, মুঠোফোন নম্বরসহ অন্যান্য তথ্য প্রদান করে নিবন্ধিত হতে হবে। একবার নিবন্ধিত হলে ওই ব্যক্তিকে ভবিষ্যতে আর নিবন্ধন করতে হবে না।  ভূমি উন্নয়ন কর পরিশোধের জন্য বাংলাদেশের ভূমি মন্ত্রণালয় এলডিট্যাক্স নামে একটি অ্যাপ্লিকেশন তৈরি করেছে। ভূমির মালিক এই অ্যাপে নিবন্ধন করবেন।

যে প্রক্রিয়ায় নিবন্ধন

http://www.land.gov.bd অথবা ldtax.gov.bd ঠিকানার ওয়েব পোর্টালে প্রবেশ করে জাতীয় পরিচয়পত্র, জন্মতারিখ ও মুঠোফোন নম্বর দিয়ে নিবন্ধন করতে হবে। ভূমি মন্ত্রণালয়ের কল সেন্টার ৩৩৩ অথবা ১৬১২২ নম্বরে ফোন করে জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর, জন্ম তারিখ, ফোন নম্বর ও জমির তথ্য দিয়েও নিবন্ধন করা যাবে।

যেকোনো ইউনিয়ন ডিজিটাল অফিসে গিয়ে জাতীয় পরিচয়পত্র, জন্মতারিখ ও খতিয়ান নম্বর ব্যবহার করেও নিবন্ধন করা যাবে।

যেভাবে করা যাবে কর পরিশোধ

নিবন্ধনের পর সংশ্লিষ্ট পোর্টালে লগইন করে অথবা ইউনিয়ন ডিজিটাল অফিসে গিয়ে ভূমির উন্নয়ন কর দিতে পারবেন। এসময় বিকাশ বা নগদের মতো মোবাইল ওয়ালেট ব্যবহার করে করের টাকা পরিশোধ করা যাবে। কর দেওয়ার পর ই-মেইলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে একটি জমার রসিদ চলে আসবে। এটিই ভূমি উন্নয়ন করের রসিদ।

ভূমি কর্মকর্তাদের প্রতি নির্দেশনা

ক্যাশলেস ভূমি উন্নয়ন কর সফলভাবে কার্যকর করার পর এ ইস্যুতে সংশ্লিষ্ট ভূমি কর্মকর্তাদের বিভিন্ন নির্দেশনা দেয় ভূমি মন্ত্রণালয়। অনলাইনে ভূমি উন্নয়ন কর নির্ধারণ ও আদায় বিষয়ক নির্দেশাবলি এবং অনলাইনে ভূমি উন্নয়ন কর আদায়ে সিস্টেম প্রয়োগ সংক্রান্ত টেকনিক্যাল নির্দেশনা দেওয়া হয়।

মালিকের নামে ভূমি উন্নয়ন কর আদায়

শুধু হোল্ডিংধারী ভূমি মালিকের নামে ভূমি উন্নয়ন কর আদায় করতে হবে। ভূমি উন্নয়ন কর পরিশোধকারী বা ভাড়াটিয়ার নাম দাখিলায় যুক্ত করা যাবে না।

ব্যক্তির ক্ষেত্রে আংশিক ভূমি উন্নয়ন কর আদায়

যৌথ মালিকানার ক্ষেত্রে কোনো একজন মালিক নিজ অংশের ভূমি উন্নয়ন কর পরিশোধ করতে চাইলে নামজারির (মিউটেশন) মাধ্যমে আলাদা হোল্ডিং তৈরি করতে হবে।

জমির ব্যবহারভিত্তিক ভূমি উন্নয়ন কর আদায়

গ্রামের বাড়িগুলো পাকা ভিটির না হলে কৃষিজমি হিসেবে গণ্য করে ভূমি উন্নয়ন কর আদায় করতে হবে। কিন্তু যদি রেকর্ডে বাড়ি উল্লেখ থাকে কিংবা বাস্তবে বাড়িটি পাকা ভিটির হয় তাহলে আবাসিক হারে ভূমি উন্নয়ন কর নির্ধারিত হবে। একই দাগের জমি আংশিক কৃষি ও আংশিক অকৃষি (শিল্প, বাণিজ্য ইত্যাদি) কাজে ব্যবহৃত হলে ব্যবহারের ধরন অনুযায়ী হারাহারিভাবে ভূমি উন্নয়ন কর নির্ধারণপূর্বক আদায় করতে হবে।

অগ্রিম ভূমি উন্নয়ন কর আদায়

কোনো ভূমি মালিক ইচ্ছে করলে বকেয়া ও হাল সনের ভূমি উন্নয়ন কর পরিশোধ করার পর পরবর্তী তিন বছরের ভূমি উন্নয়ন কর অগ্রিম জমা দিতে পারবেন। পরিশোধিত অগ্রিমের মেয়াদের মধ্যে ভূমি ব্যবহারের ধরনে পরিবর্তন বা সরকারি নির্দেশনার কারণে ভূমি উন্নয়ন করের দাবি বেড়ে গেলে বর্ধিত হারে ভূমি উন্নয়ন কর বকেয়া হিসেবে আদায়যোগ্য হবে।


সর্বশেষ - রাজনীতি