চুয়াডাঙ্গায় চালু হয়েছে স্যানিটারি ল্যান্ড ফিল ও পয়ঃবর্জ্য শোধনাগার। ময়লা, আবর্জনা ও দুর্গন্ধমুক্ত হচ্ছে পৌর এলাকা। স্বাভাবিক পরিবেশ ফিরেছে শহরে। শহরের সব ময়লা নির্দিষ্ট দিনে সংগ্রহ করার পর স্যানিটারি ল্যান্ড ফিলে ফেলা হচ্ছে। শহরের যেখানে সেখানে গড়ে ওঠা ময়লার ভাগাড় সরিয়ে নেয়ায় স্বস্তি ফিরেছে পৌরবাসীর জীবনে। প্রাণ ফিরে পেয়েছে নগরের পরিবেশ। বাস্তবে রূপ নিতে শুরু করেছে ‘চমৎকার চুয়াডাঙ্গা’। প্রশাসন বলছে, শুধু নগরবাসীর দুর্ভোগই কমেনি, বরং এ বর্জ্য থেকেই সার উৎপাদন হবে।
১৯৭২ সালের জানুয়ারি মাসে শহরের আবুল কাশেম সড়কে চুয়াডাঙ্গা পৌরসভার কার্যক্রম শুরু হয়। পৌর এলাকার আয়তন ৩৮ বর্গ কিলোমিটার। ১৯৯৫ সালে প্রথম শ্রেণির পৌরসভায় উত্তীর্ণ হয়। কিন্তু দুর্ভোগ ছিল পৌরবাসীর নিত্যদিনের সঙ্গী। পৌর এলাকায় যেখানে সেখানে ছিল ময়লার ভাগাড়। ময়লা ফেলার জায়গা না থাকায় নাগরিকরা যেখানে সেখানে ময়লা আবর্জনা ফেলতেন। ফলে দুর্গন্ধ ছড়ানোর পাশাপাশি পরিবেশদূষণ ও স্বাস্থ্যঝুঁকি বেড়ে যায়।
চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকার বুজরুকগড়গড়ি পাড়ায় ৩ একর জমির
শোধনাগারে রয়েছে অফিস, পাম্প হাউজ, ফিল্টার, পলিশিং, সেটেলমেন ট্যাংকসহ অত্যাধুনিক সুযোগ-সুবিধা। বর্জ্য প্রক্রিয়াজাতকরণের মাধ্যমে জৈবসার উৎপাদন হবে। পৌরসভার এমন জনবান্ধব কার্যক্রমে বাসিন্দারা আনন্দিত।
চুয়াডাঙ্গা ঝিনাইদহ বাসস্ট্যান্ড পাড়ার বাসিন্দা হুসাইন বলেন, ‘বাস টার্মিনাল এলাকায় সড়কের দুই পাশে ফেলা হত শহরের সব ময়লা। এখান থেকে দুর্গন্ধ ছড়াতো। সাধারণ মানুষের চলাচল কষ্ট হত। পরিবেশদূষণ ও স্বাস্থ্যঝুঁকি বেড়ে গিয়েছিল। এখন ময়লা নেই। ময়লা নিয়ে নির্দিষ্ট স্থানে ফেলা হচ্ছে।’
চুয়াডাঙ্গা পৌরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর আবদুল আজিজ মিন্টু বলেন, ‘ডাম্পিং স্টেশনটি আমার ওয়ার্ডে নির্মাণ করা হয়েছে। পৌর এলাকায় একসময় যেখানে সেখানে ময়লা-আবর্জনা পড়ে থাকত। নানা সমস্যা ও দুর্ভোগ দেখা দিত। সাধারণ মানুষ সে সময় অভিযোগ করেও কোনো প্রতিকার পেত না। এখন পরিবেশ বেশ ভালো হয়েছে।’
চুয়াডাঙ্গা পৌরসভার মেয়র জাহাঙ্গীর আলম মালিক খোকন জানান, সরকারের উন্নয়নমূলক কাজের অংশ হিসেবে স্যানিটারি ল্যান্ড ফিল ও পয়ঃবর্জ্য শোধনাগার নির্মাণ করা হয়েছে। বর্তমান পৌর পরিষদ নাগরিক সেবা দিতে বদ্ধপরিকর। পৌরসভার নাগরিকরা নির্দিষ্ট স্থানে ময়লা রাখলে সংগ্রহ করা সহজ হয়।
চুয়াডাঙ্গা পৌরসভার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শামীম ভূঁইয়া বলেন, ‘ময়লার বিষয়ে আগে বদনাম ছিল। বেশকিছু দিন আগে চালু করা হয়েছে পৌরসভার নির্মাণ করা ডাম্পিং স্টেশনটি। পৌর এলাকার বুজরুকগড়গড়ি পাড়ায় এটি নির্মাণ করা হয়েছে। ওয়ার্ডগুলো থেকে ভ্যান গাড়িতে করে ময়লা সংগ্রহ করা হচ্ছে। শহর ময়লা-আবর্জনা মুক্ত হয়েছে। স্বাভাবিক পরিবেশ ফিরেছে। বর্জ্য থেকে জৈবসার উৎপাদন হবে এক সময়। ময়লাও কাজে লাগছে। এভাবে চমৎকার চুয়াডাঙ্গা গড়ে উঠবে।’