1. অন্যরকম
  2. অপরাধ বার্তা
  3. অভিমত
  4. আন্তর্জাতিক সংবাদ
  5. ইতিহাস
  6. এডিটরস' পিক
  7. খেলাধুলা
  8. জাতীয় সংবাদ
  9. টেকসই উন্নয়ন
  10. তথ্য প্রযুক্তি
  11. নির্বাচন বার্তা
  12. প্রতিবেদন
  13. প্রবাস বার্তা
  14. ফিচার
  15. বাণিজ্য ও অর্থনীতি

অধ্যাপক ব্রহ্মা চেলানির দৃষ্টিতে যুক্তরাষ্ট্রের দ্বিমুখী আচরণের নেপথ্য কারণ সন্ধানে  

ডেস্ক রিপোর্ট : ইবার্তা টুয়েন্টিফোর ডটকম
সোমবার, ১৯ জুন, ২০২৩

যুক্তরাষ্ট্র একই সময়ে বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের সঙ্গে যে আচরণ করছে, তা বোধগম্য নয়। একদিকে বাংলাদেশে গণতন্ত্র শক্তিশালীকরণের অংশ হিসেবে সুষ্ঠু নির্বাচনে কেউ বাধা হয়ে দাঁড়ালে তাকে মার্কিন ভিসা নিষেধাজ্ঞার হুমকি দেয়া হয়েছে। অন্যদিকে পাকিস্তানে অঘোষিত সামরিক শাসন চললেও সে বিষয়ে একদম চুপ যুক্তরাষ্ট্র। গণতন্ত্রের স্বার্থের কথা বলে এর আগে বাংলাদেশের কর্মকর্তাদের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয় যুক্তরাষ্ট্র, সেটিও যে খুব কাজে দিয়েছিল তা বলা যায় না। ভারতের নয়াদিল্লির সেন্টার ফর পলিসি রিসার্চের স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজের ইমেরিটাস অধ্যাপক ও ন্যাশনাল সিকিউরিটি কাউন্সিলের সাবেক উপদেষ্টা ব্রহ্মা চেলানি এক নিবন্ধে এসব কথা বলেছেন। টোকিওভিত্তিক বাণিজ্যবিষয়ক সংবাদমাধ্যম নিক্কেই এশিয়ার ইংরেজি ভার্সনের মতামত পাতায় নিবন্ধটি প্রকাশিত হয়।

নিবন্ধে ব্রহ্মা চেলানি বলেন, ২০০৯ সাল থেকে শুরু করে ধর্মনিরপেক্ষ একটি বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার পাশাপাশি দেশকে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ও দ্রুত অর্থনৈতিক উন্নতির পথে নিয়ে গেছেন শেখ হাসিনা। যদিও বর্তমানে ইউক্রেন যুদ্ধের ফলে বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দা পরিস্থিতির ফলে দেশটির অর্থ ব্যবস্থা বিরূপ অবস্থার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু টানা রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক অস্থিরতার মধ্য দিয়ে যাওয়া দেশ পাকিস্তানের তুলনায় বাংলাদেশ ঈর্ষণীয় প্রবৃদ্ধি অর্জন করে যাচ্ছে। পাকিস্তান তো প্রায় দেওলিয়া হওয়ার পথে। অথচ প্রেসিডেন্ট বাইডেনের আহ্বানে আয়োজিত ২০২১ এবং এ বছরের শুরুতে ডেমোক্রেসি সম্মেলনের বাইরে রাখা হয়েছে বাংলাদেশকে। পাকিস্তানকে দুইবারই আমন্ত্রণ জানানো হলো, যদিও তারা তাতে যায়নি। ব্রহ্মা চেলানি বলেন, এই পরিস্থিতিকে ঠিক কিভাবে ব্যাখ্যা করা যায়, মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রশাসন একদিকে গণতন্ত্র সুসংহতকরণ উদ্যোগ হিসেবে বাংলাদেশের যেসব কর্মকর্তা সুষ্ঠু নির্বাচন বাধাগ্রস্ত করবে তাদের ওপর মার্কিন ভিসা নিষেধাজ্ঞা দেয়ার কথা বলছে। অপরদিকে পাকিস্তানে অঘোষিত সামরিক আইন জারি হলেও সে বিষয়ে একদম চুপ থাকে মার্কিন প্রশাসন। অথচ পাকিস্তানে প্রতিনিয়ত গণগ্রেপ্তার, গুম ও নির্যাতন রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে।

নিবন্ধে বলা হয়, এই প্রশ্নের সংক্ষিপ্ত উত্তর হলো- যুক্তরাষ্ট্রের গণতান্ত্রিক অধিকার সুসংহতকরণের দীর্ঘ ইতিহাস বলে এটি বিশেষ বিশেষ ক্ষেত্রে প্রয়োগ করা হয়ে থাকে। ভূরাজনৈতিক অবস্থা-পরিস্থিতি এ ক্ষেত্রে বড় ধরনের নিয়ামক হিসেবে কাজ করে। গণতন্ত্র সুসংহত করার কথা বলে এমন বহু জায়গায় মার্কিন নীতি নির্ধারকরা নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। অধ্যাপক ব্রহ্মা চেলানি বলেন, বাইডেন প্রশাসন এই ভিসানীতির মধ্য দিয়ে মনে হয় দুটি জায়গা গুরুত্বের সঙ্গে নিতে চেয়েছে। একটি হলো দেশটির রাজনীতিবিদদের আত্মীয়স্বজন অনেকেই যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যে থাকেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলেই আমেরিকান গ্রিন কার্ডধারী। আর তাছাড়া বাংলাদেশের রপ্তানির বিরাট অংশ পশ্চিমা দেশগুলোতে যায়। যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশি পণ্যের শীর্ষস্থানীয় একটি গন্তব্য।

‘ওয়াটার : এশিয়াস নিউ ব্যাটেলগ্রাউন্ড’ গ্রন্থের লেখক ব্রহ্ম চেলানি বলেন, স্বাধীনতা আন্দোলনের নেতার মেয়ে হাসিনা অবশ্য গত এপ্রিলে পার্লামেন্টে দাঁড়িয়ে বলেছেন, তারা গণতন্ত্র উৎখাত করতে চায় এবং এমন একটি সরকার বসাতে চায়, যাদের মাঝে গণতন্ত্রের অস্তিত্ব থাকবে না। এটি অগণতান্ত্রিক একটি কাজ হবে। অধ্যাপক ব্রহ্মা চেলানির ভাষ্যমতে, মার্কিন নিষেধাজ্ঞা মিয়ানমার, ইরান, বেলারুশ ও কিউবায় রাজনৈতিক পরিস্থিতি পরিবর্তনে ব্যর্থ হয়েছে। বৈশ্বিক ক্ষমতা কাঠামোয় যুক্তরাষ্ট্রের ক্রমহ্রাসমান প্রভাব এসব নিষেধাজ্ঞার কার্যকারিতা দিন দিন কমছে। যদিও এখন পর্যন্ত পশ্চিমা দেশগুলোই বৈশ্বিক অর্থ ব্যবস্থার কাঠামো নিয়ন্ত্রণ করছে এবং ডলার এখনো বিশ্বের রিজার্ভের প্রাথমিক মুদ্রা হিসেবে রয়ে গেছে। ফলে নিষেধাজ্ঞা এখনও যুক্তরাষ্ট্রের নীতি নির্ধারকদের কাছে আকর্ষণীয় পন্থা।

ব্রহ্মা চেলানি বলছেন, ঢাকার ওপর যুক্তরাষ্ট্রের সর্বশেষ কড়াকড়ির তেমন কোনো অর্থ মিলছে না। এশিয়ার নিরাপত্তা বৃদ্ধিতে সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যে যুদ্ধ তাতে শেখ হাসিনার সরকার বরং যুক্তরাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ মিত্র হিসেবে কাজ করতে পারে। অথচ বিশ্বব্যাংক ও আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) সঙ্গে আলোচনা করতে গত মাসে শেখ হাসিনা যখন যুক্তরাষ্ট্র সফরে গেলেন বাইডেন প্রশাসনের একজনও তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করলেন না। সিঙ্গাপুরে এ মাসে মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিন বললেন, যুক্তরাষ্ট্র চীনের ভ্রু কুচকানি বা অঙ্গুলি হেলনের বিপরীতে কিছু করবে না। কিন্তু ঠিকই বাংলাদেশে এমনটি করা হচ্ছে, সে পথেই আগাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্র এখন যা করছে, তাতে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের চেয়ে ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতার লড়াইয়ের সময় পাকিস্তানি সামরিক বাহিনীর নৃশংসতা চলাকালে তারা যে অবস্থান নিয়েছিল, সেই দুঃসহ স্মৃতি ফিরে আসছে বলে মনে হচ্ছে। এখন আসলে কী চাইছে ওয়াশিংটন?


সর্বশেষ - রাজনীতি