হাইপারসনিক ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র তৈরি করেছে ইরান। মঙ্গলবার (৬ জুন) পশ্চিম এশিয়ার এই দেশটি তাদের প্রথম অভ্যন্তরীণভাবে তৈরি এই মিসাইল সামনে এনেছে। এতে করে তেহরানের ক্ষেপণাস্ত্র সক্ষমতা সম্পর্কে পশ্চিমাদের উদ্বেগ আরও বাড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
মঙ্গলবার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইরান মঙ্গলবার তার প্রথম অভ্যন্তরীণভাবে তৈরি হাইপারসনিক ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র উন্মোচন করেছে বলে কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে জানিয়েছে দেশটির সরকারি নিউজ এজেন্সি ইরনা। আর ইরানের এই পদক্ষেপ তেহরানের ক্ষেপণাস্ত্র সক্ষমতা সম্পর্কে পশ্চিমাদের উদ্বেগ আরও বাড়িয়ে দেবে।
রয়টার্স বলছে, ইরানের প্রথম হাইপারসনিক ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের নাম ফাত্তাহ। ইরানের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম মঙ্গলবার এই ক্ষেপণাস্ত্রের ছবি প্রকাশ করেছে। ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি এবং ইরানের অভিজাত রেভল্যুশনারি গার্ডের শীর্ষ কমান্ডারদের অংশগ্রহণে একটি অনুষ্ঠানে অভ্যন্তরীণভাবে তৈরি ওই হাইপারসনিক ব্যালিস্টিক মিসাইল উন্মোচন করা হয়।
হাইপারসনিক মিসাইল মূলত শব্দের গতির চেয়ে অন্তত পাঁচগুণ দ্রুতগতিতে ছুটতে পারে এবং জটিল গতিপথে উড়তে পারে। আর এই কারণেই এই ধরনের ক্ষেপণাস্ত্রকে আটকানো খুবই কঠিন।
ইরনা জানিয়েছে, মঙ্গলবার সকালে তেহরানে আইআরজিসি অ্যারোস্পেস ফোর্সের সর্বশেষ অর্জন ফাত্তাহ ক্ষেপণাস্ত্রের উন্মোচন অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়েছে। এর আগে গত মে মাসের শেষের দিকে আইআরজিসি এরোস্পেস ফোর্সের কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আমির-আলি হাজিজাদেহ আসন্ন এই মিসাইল উন্মোচনকে ‘উল্লেখযোগ্য অর্জন’ হিসাবে বর্ণনা করেছিলেন।
ইরানের সরকারি এই নিউজ এজেন্সির দাবি, দুর্দান্ত কৌশলগত ক্ষমতা থাকার কারণে ফাত্তাহ হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্রটি খুব উচ্চ গতিতে উড়তে পারে এবং পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে ও এর বাইরেও বিভিন্ন কর্মকাণ্ড সম্পাদন করতে পারে।
হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র ফাত্তাহ ১৪০০ কিলোমিটার দূরের লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে পারে বলেও জানিয়েছে ইরনা।
ইরানের রাষ্ট্রীয় টিভি বলেছে, ইরানের ফাত্তাহ ক্ষেপণাস্ত্র ‘শত্রুদের উন্নত ক্ষেপণাস্ত্র-বিরোধী সিস্টেমকে আঘাত করতে পারে’। একইসঙ্গে এটি ইসরায়েলের আয়রন ডোমসহ যুক্তরাষ্ট্র এবং ইহুদিবাদী শাসকদের সবচেয়ে উন্নত ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থাকে বাইপাস করতে পারে বলেও দাবি করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র শব্দের চেয়ে পাঁচগুণ বেশি গতিতে ছুটতে পারে। হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপনের পর খুব দ্রুত উপরে উঠে আবার দ্রুত নেমে আসে। এরপর আনুভূমিকভাবে বায়ুমন্ডলের মধ্যেই চলতে থাকে এবং চলমান অবস্থাতেও গতিপথ পরিবর্তন করতে পারে, যা ব্যালিস্টিক মিসাইল থেকে ভিন্ন।