সিরাজগঞ্জের কামারখন্দ উপজেলার নুরনগর, দশসিকা, গাড়াবাড়ী, নুরনগর তালপট্টি, ডিডি শাহবাজপুর গ্রামের মধ্য দিয়ে বয়ে গেছে ফুলজোর নদী। এসব এলাকার চরগুলোতে অতিরিক্ত বালুর কারণে বাদামসহ কয়েকটি ফসলের ওপর নির্ভর করে চাষাবাদ হতো সনাতনী পদ্ধতিতে। তাও আবার ফলন হতো খুবই কম। এখন বন্যায় মাটিতে পলি পড়ার কারণে মাটির উর্বরতা বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে এসব চরে বাড়ছে নানা ধরনের সবজি চাষ। বর্তমানে চরের জমিতে চাষ হচ্ছে মরিচ, আলু, বেগুন, পটোল, ঢ্যাঁড়শ, মিষ্টি আলু, সূর্যমুখীসহ নানা ধরনের ফসল। আধুনিক কৃষি, মৎস্য চাষ, পশুপাখি পালনের মাধ্যমে নারী-পুরুষের যৌথ প্রচেষ্টায় ভাগ্য বদলেছে চরাঞ্চলের মানুষের।
উপজেলার চর নুরনগর গ্রামের কৃষক সায়দার আলী বলেন, ‘চরে আগে বালুর কারণে তেমন কোনো ফসলের আবাদ হতো না। ভাগ্যক্রমে বর্ষায় চরে বালুর ওপর পলি পড়ে এই চর এখন বিভিন্ন ফসল চাষের উপযোগী। চরের নারী-পুরুষের সমান তালে কাজ করার কারণে এখন দিন বদলেছে। কৃষিকাজের মাধ্যমে আমরা জীবিকা নির্বাহের পাশাপাশি আর্থিকভাবেও স্বাবলম্বী হয়েছি।’
একই এলাকার কামাল হোসেনের স্ত্রী আসমা বেগম বলেন, ‘আমি অনেক কাজে আমার স্বামীকে সাহায্য করি। আমাদের দুজনের চেষ্টায় বাড়িতে গরু পালন, জমিতে শাকসবজি এবং পুকুরে মাছ চাষ করে এখন আমরা অনেকটাই স্বাবলম্বী।’
এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আনোয়ার সাদাত বলেন, উপজেলার চরগুলোর অর্থনৈতিক উন্নয়ন বৃদ্ধি করার জন্য আমরা নিয়মিত কৃষক মাঠ দিবসের মাধ্যমে সেখানকার কৃষকদের কৃষিকাজে দক্ষতা বৃদ্ধির পাশাপাশি কৃষি অফিসের নানা ধরনের প্রকল্পের মাধ্যমে বিনা মূল্যে সার, বীজ ও বিভিন্ন প্রকার আধুনিক যন্ত্রাংশ প্রদান করছি। এতে চরের কৃষি আধুনিক কৃষিতে রূপান্তরিত হচ্ছে’।
উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা সেলিম রেজা বলেন, ‘ইতিমধ্যে চরের মানুষের মধ্যে মাছ চাষের আগ্রহ বেড়েছে। আমরা কয়েকটি প্রকল্পের মাধ্যমে বেশ কয়েক জনকে পুকুরে নানা ধরনের মাছ চাষ ও খাঁচায় মাছ চাষের জন্য প্রশিক্ষণ দিয়েছি। চরাঞ্চলের মানুষগুলো খুব পরিশ্রমী তাই তারা চেষ্টা করলে তাদের এলাকায় মাছ চাষের মাধ্যমে আরও উন্নতি করতে পারবে। আমরা সব ধরনের সহায়তা করার চেষ্টা করব।’
