চলমান বৈশ্বিক অর্থনৈতিক অস্থিরতার জেরে বাংলাদেশের সামনেও সামষ্টিক অর্থনৈতিক যে চ্যালেঞ্জগুলো তৈরি হয়েছে তার প্রেক্ষাপটে আসছে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেট। বর্তমান বাস্তবতায় কিছুটা হলেও সংকোচনমুখী বাজেট প্রস্তুত করার তাগিদ থাকবে, জনতুষ্টিবাদী বরাদ্দ দেওয়ার রাজনৈতিক চাপও থাকবে। বিশেষ করে মূল্যস্ফীতির উজান স্রোতে নগরের নিম্নমধ্যবিত্ত ও অনানুষ্ঠানিক খাতে নিয়োজিত কম আয়ের কর্মীদের বর্তমান আয়-রোজগারে জীবন চলা যে বেশ কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে।
সে কথাটি হিসাবে নিয়ে তাঁদের জন্য বাড়তি সামাজিক সুরক্ষার সুযোগ সৃষ্টি করতে হবে। মুদ্রাস্ফীতির চাপে হিমশিম খাওয়া মানুষের জন্য সামাজিক সুরক্ষা বেষ্টনীর আওতায় শহরের দরিদ্র ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জন্য ও এমএস প্রগ্রাম আরও সম্প্রসারণ করা প্রয়োজন। বিশেষ করে নগরাঞ্চলের অতিদরিদ্রদের জন্য নতুন নতুন সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি অন্তত পাইলট ভিত্তিতে হলেও নেওয়া দরকার।
পাশাপাশি প্রতিটি উপজেলার দরিদ্র ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর (বিশেষ করে চর ও হাওর এলাকার) জন্য আপৎকালীন সহায়তার ভাতা প্রদান করার প্রোগ্রাম হাতে নেওয়া যেতে পারে। নগরের গরিবদের জন্য রেশনিং ব্যবস্থা চালু করা না গেলেও কার্ড দেখিয়ে তারা নির্দিষ্ট দোকান থেকে পণ্য কেনার সুযোগ করে দিলে খুব ভালো হতো। তাই কিছুটা সংকোচনমুখী বাজেটে একদিকে রাজস্ব আয় বাড়ানো এবং অন্যদিকে কম আয়ের মানুষের জন্য সামাজিক সুরক্ষা নিশ্চিত করার সুনির্দিষ্ট দিকনির্দেশনা সম্বলিত বাজেটই ঘোষণা হবে সেই কামনা করছি।
লেখক : অধ্যাপক ড. আতিউর রহমান – সাবেক গভর্নর, বাংলাদেশ ব্যাংক