জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দ্বিতীয় পুত্র ও বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর গর্বিত কর্মকর্তা বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ লেফটেন্যান্ট শেখ জামালের ৬৯তম জন্মদিন আজ। ১৯৫৪ সালের ২৮ এপ্রিল গোপালগঞ্জ জেলার টুঙ্গিপাড়ায় জন্মগ্রহণ করেন বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাই শেখ জামাল।
টুঙ্গিপাড়ায় জন্ম নেয়া শহীদ শেখ জামাল ঢাকা রেসিডেনসিয়াল মডেল স্কুল এ্যান্ড কলেজ থেকে মাধ্যমিক এবং ঢাকা কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করেন। তিনি ছিলেন সংস্কৃতিপ্রেমী এবং একজন সফল ক্রীড়াবিদ। ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় পরিবারের অন্য সদস্যদের সঙ্গে শেখ জামালও গৃহবন্দী ছিলেন। সেখান থেকে পালিয়ে তিনি মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়ে সম্মুখ সমরে নেতৃত্ব দেন। শেখ জামাল ধানমণ্ডি থেকে অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ পথচলা শেষে ভারতের আগরতলা পৌঁছেন এবং সেখানে মুজিব বাহিনীতে (বাংলাদেশ লিবারেশন ফোর্সেস, বিএলএফ) যোগদান করে প্রশিক্ষণ শেষে মুক্তিযুদ্ধের ৯ নম্বর সেক্টরে সম্মুখযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন।
জাতির পিতার দ্বিতীয় পুত্র শহীদ শেখ জামাল ছিলেন একজন দেশপ্রেমিক চৌকস-মেধাবী সেনা অফিসার। তিনি ছিলেন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর লং কোর্স-এর প্রথম ব্যাচের কমিশন্ড অফিসার। ১৯৭৪ সালে শেখ জামাল যুগোস্লাভিয়ার মিলিটারি একাডেমিতে ক্যাডেট হিসেবে প্রশিক্ষণ ক্যাম্পে অংশগ্রহণ করেন। এরপর ব্রিটেনের স্যান্ডহার্স্ট একাডেমি থেকে প্রশিক্ষণ শেষে দেশে ফিরে ঢাকা সেনানিবাসের দ্বিতীয় ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টে সেকেন্ড লেফটেন্যান্ট পদে যোগদান করেন।
দ্বিতীয় ইস্ট বেঙ্গলে চাকরিকালে স্বল্প সময়েই অফিসার ও সৈনিকদের মাঝে তিনি অসাধারণ পেশাগত দক্ষতা ও আন্তরিকতার ছাপ রেখেছিলেন। কয়েক সপ্তাহেই শেখ জামাল অফিসার ও সৈনিকদের মধ্যে তাদেরই একজন হয়ে যান। ট্রেনিং গ্রাউন্ডে, রণকৌশলের ক্লাসে, অবস্টাকল ক্রসিংয়ে অংশ নিয়ে সৈনিকদের মুগ্ধ করেন। ব্যাটালিয়ন বক্সিং টিমের সদস্যদের প্রশিক্ষণ দেন। ১৯৭৫ সালের ১৪ আগস্টও ব্যাটালিয়ন ডিউটি অফিসার হিসেবে ক্যান্টনমেন্টে নিজ দায়িত্ব পালন করেন তিনি।
ওই দিন রাতে ক্যান্টনমেন্ট থেকে ফিরে আসেন ধানমণ্ডি ৩২ নম্বরের বাড়িতে। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট কালোরাত্রিতে ঘাতকের নির্মম বুলেটের আঘাতে পরিবারের অন্য সদস্যদের সঙ্গে নিহত হন শেখ জামাল। স্বাধীনতা ও মুক্তি সংগ্রামে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তার পরিবারের অবদান বাঙালী জাতি কৃতজ্ঞতার সঙ্গে চিরদিন স্মরণ করবে।