1. অন্যরকম
  2. অপরাধ বার্তা
  3. অভিমত
  4. আন্তর্জাতিক সংবাদ
  5. ইতিহাস
  6. এডিটরস' পিক
  7. খেলাধুলা
  8. জাতীয় সংবাদ
  9. টেকসই উন্নয়ন
  10. তথ্য প্রযুক্তি
  11. নির্বাচন বার্তা
  12. প্রতিবেদন
  13. প্রবাস বার্তা
  14. ফিচার
  15. বাণিজ্য ও অর্থনীতি

এদেশ কখনো দেউলিয়া না হওয়ার ঐতিহাসিক কারন আছে

জাহাঙ্গীর নোমান : ইবার্তা টুয়েন্টিফোর ডটকম
মঙ্গলবার, ১২ এপ্রিল, ২০২২

বাংলায় মুর্শিদ কুলী খানের শাসনের ইতিহাস পড়তে গিয়ে দেখি মুঘলরা সবচেয়ে বেশি রাজস্ব বাংলা থেকেই আদায় করতো। সাধারণত মুঘল কোনো শাহজাদাকে সুবাহদার হিসেবে বাংলায় পাঠাতো। তৃতীয় মুঘল সম্রাট আকবর বাংলাকে ১৫৭৬ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে তাঁর সুবাহ ঘোষণা করেন। তাঁর ১২টি সুবাহের ১২ নম্বর সুবাহ বাংলার সুবাহদার (Governor) নিয়োগ করেন হোসেন কুলি বেগকে। সুবাহদার সামরিক ও বেসামরিক প্রধান হলেও সমান্তরালে একজন দেওয়ান (Collector) ছিলেন যিনি রাজস্ব আদায়ের ক্ষমতাসম্পন্ন ব্যক্তি। রাজধানী দিল্লি থেকে নিয়মিত সুবাহদার – দেওয়ান বদল ও নিয়োগ করা হতো।

সুবাহদার ও দেওয়ানদের সমন্বয়ে বাংলা থেকে নিয়মিত রাজস্ব চলে যেত দিল্লিতে যেভাবে গভর্নরদের মাধ্যমে বৃটিশ আমলে লন্ডনে পাঠানো হতো রাজস্বের অর্থ। মুঘল সাম্রাজ্যের ৫০% জিডিপির যোগান দিতো সুবাহ বাংলা যা বিশ্বের ১২%। কৃষি উৎপাদনের জন্যে সুবাহদারদের নির্দেশে বাংলার জঙ্গল কেটে সাফ করা হয়, অধিক রাজস্ব আদায় করে দিল্লি পাঠাতে যাতে অসুবিধা না হয়।

বাংলা, বিহার ও ঊড়িষ্যার দেওয়ানি লাভ করে বৃটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি যখন মুঘল সম্রাট দ্বিতীয় শাহ আলমকে বার্ষিক ২৩ লাখ রুপি এবং ৫৩ লাখ রুপি নবাব নাজিম-উদ-দৌলাকে দিতে রাজি হয়ে যায় তখুনি আমাদের বুঝতে অসুবিধে হয়না যে কোটি টাকার উপরে বার্ষিক রাজস্ব দিল্লিতে পাঠানো হতো। মারাঠাদের সাথে সম্রাট আওরঙ্গজেব দীর্ঘ যুদ্ধে লিপ্ত হলে বাংলা থেকেই অতিরিক্ত ১ কোটি টাকা রাজস্ব পাঠানো হতো মূল রাজস্ব আদায়ের বাইরে।

বাংলা ঐতিহাসিকভাবেই সমৃদ্ধ অঞ্চল। যে ক’বার দুর্ভিক্ষ দেখা দিয়েছে তা মূলত অব্যবস্থাপনা আর শাসকদের উদাসীনতার কারণে। ইতিহাস বিশ্লেষণ করে দেখা যায় বাংলা কখনোই দেউলিয়া হয়নি।

বর্তমানে বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৪৪ বিলিয়ন ডলার। প্রতিবেশী দেশগুলোর মধ্যে পাকিস্তানের ২১ বিলিয়ন, মিয়ানমারের ৭ বিলিয়ন, নেপালের ৯ বিলিয়ন, ভারতের ৬৩৪ বিলিয়ন (প্রদেশ প্রতি ২১ বিলিয়ন)।

বাংলাদেশ সরকারের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ আয় বৈষম্য কমিয়ে আনা। আর এটার একমাত্র উপায় আয়কর আদায় করা। এইটা আদায়ে নানাবিধ কৌশল ও পদক্ষেপ নিয়েছে সরকার। ধনীদের থেকে কর আদায় হলেই কেবল গরীবদের পেছনে ব্যয় করা সম্ভব। শ্রীলঙ্কা দেউলিয়া হয়েছে কারণ ট্যাক্সের হার ১৫% থেকে কমিয়ে ৮% করেছিল৷ আর নানাবিধ কারণ তো ছিলই।

যে বাংলার টাকা দিয়ে দিল্লি দিল্লি হয়েছে, লন্ডন লন্ডন হয়েছে, ইসলামাবাদ ইসলামাবাদ হয়েছে সে বাংলা দেউলিয়া হওয়ার কোনো কারণ দেখি না। জয় বাংলা।

লেখক : জাহাঙ্গীর নোমান – সাবেক শিক্ষার্থী, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়। 


সর্বশেষ - রাজনীতি