করোনার প্রভাবে দেশের পোল্ট্রি ও ডেইরি শিল্পে যে ক্ষতিসাধন হয়েছে সে ক্ষতি পূরণের লক্ষ্যে এ শিল্পের মালিকদের প্রণোদনা দেয়া হবে। সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রীর এই ঘোষণায় এ শিল্পের মালিকরা উচ্ছ্বসিত হয়েছেন। তারা বলছেন, এটা ভালো একটা খবর। করোনায় ব্যাপকহারে ক্ষতি হওয়ার পর ডেইরি এবং পোল্ট্রি শিল্পের মালিকরা চরমভাবে ভেঙে পড়েছিলেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রোববার সংবাদ সম্মেলনে বলেন, পোল্ট্রি, ডেইরি ও মৎস্যসহ বিভিন্ন সেক্টরে করোনার প্রভাবের কারণে যারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন তারা প্রণোদনা পারেন। ভবিষ্যতে ব্যবসা চালাতে তাদের কোনো অসুবিধা হবে না। ৯ ভাগ হারে ঋণ পাবেন। এই ঋণের সুদ ৪.৫ ভাগ সরকার এবং ৪.৫ ভাগ মালিকপক্ষ বহন করবে।
সিরাজগঞ্জ জেলার শাহজাদপুরের ডেইরি ও দুগ্ধখামারি পরিচালক আবদুস সামাদ ফকির বলেন, সরকার যে প্রণোদনা দিয়েছে বা সাড়ে ৪ ভাগ হারে যে ঋণ দেয়ার কথা বলছে তা মাঠপর্যায়ে বাস্তবায়ন হলে খামারিরা খুশি হবে। এছাড়া আমরা যে পণ্য উৎপাদন করছি তা ঠিকমতো বাজারজাতকরণ করতে পারলে খামারিরা লাভবান হবে।
তিনি বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সাধারণ কৃষকদের ভাগ্য পরিবর্তন করার জন্য এবং মানুষের পুষ্টির অভাব দূর করার জন্য মিল্কভিটা স্থাপন করেছিলেন। তার যে উদ্দেশ্য ছিল সে উদ্দেশ্য বাস্তবায়ন করাই হবে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নপূরণ।
শেরপুর জেলার ডেইরি খামারিরা বলেন, খামারিরা চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পরও প্রধানমন্ত্রী খামারিদের যে সুযোগ দিতে চেয়েছেন সে সুযোগ পেলে খামারিরা আবার ঘুরে দাঁড়াতে পারবে।
তিনি বলেন, সর্বোচ্চ চাই না। ন্যূনতমভাবে বেঁচে থাকার সুযোগ চাই। সরকারিভাবেই যদি কিছু দুধ বিক্রির সুযোগ করে দেয়া হয়, কিছু মিষ্টির দোকান পর্যায়ক্রমে খোলা রাখা, গো-খাদ্যের দোকান খোলা রাখার ব্যবস্থা করলে আমরা বেঁচে থাকতে পারব, ঘুরে দাঁড়াতে পারব।
খামারি ও ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের মতে, গরু কেনার জন্য কম সুদে ঋণ দিলে খুশি হবে খামারিরা। কারণ করোনার কারণে যেভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সরকারের সহায়তা ছাড়া ঘুরে দাঁড়ানো সম্ভব না। ঋণ ছাড়া আর ব্যবসা চালু করার মতো কোনো শক্তি নেই। সরকার যদি আমাদের কম সুদে ঋণ দেয় বা প্রণোদনা দেয় তাহলে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলতে পারবে।
উল্লেখ্য, করোনার কারণে পোল্ট্রি ও ডেইরি শিল্পে প্রায় দুই হাজার ৬২ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। এর মধ্যে পোল্ট্রি শিল্পে এক হাজার ১৫০ কোটি টাকা এবং ডেইরি শিল্পে ৯১২ কোটি টাকা।
পোল্ট্রি ও ডেইরি শিল্পের সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, করোনার প্রভাব অব্যাহত থাকলে ক্ষতির পরিমাণ আরও বাড়বে। ফলে দেশের অনেক খামারির টিকে থাকা কঠিন হয়ে পড়বে। গত ১৬ দিনের একটি হিসাব ধরে এই ক্ষয়ক্ষতি নির্ধারণ করা হয়েছে।