বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট থেকে বাৎসরিক রাজস্ব আসবে ৪০০ কোটি টাকা
বাংলাদেশের জন্য গর্ব বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটের বাণিজ্যিক ব্যবহার শুরু হচ্ছে শিগগির। এরই মধ্যে স্যাটেলাইটটি থেকে সুফল ঘরে আসতে শুরু করেছে। দেশের সরকারি সম্প্রচার মাধ্যম বাংলাদেশ টেলিভিশন- বিটিভি প্রথমবারের মতো স্যাটেলাইটটির মাধ্যমে টিভি সম্প্রচার শুরু করেছে।
বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটে সর্বমোট ৪০টি ট্রান্সপন্ডার রয়েছে। বিশ্ব বাজারে ট্রান্সপন্ডারের মূল্য সময়ের সঙ্গে প্রতিনিয়ত ওঠানামা করে। বর্তমান বাজারমূল্য অনুযায়ী বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাটের সব ট্রান্সপন্ডার থেকে বছরে ৪০ মিলিয়ন থেকে ৫০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার রাজস্ব আসবে বলে আশা করা যাচ্ছে। যা বাংলাদেশি টাকায় আনুমানিক ৩শ ৫০ থেকে ৪শ কোটি টাকা।
ইতোমধ্যে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ ব্যবহার করে বিভিন্ন টিভি চ্যানেল তাদের সম্প্রচার কাজ সম্পন্ন করতে পারছে। রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন চারটি টিভি চ্যানেল (বিটিভি, বিটিভি ওয়ার্ল্ড, সংসদ টিভি, বিটিভি চট্টগ্রাম) সরাসরি অনুষ্ঠান সম্প্রচার করছে।
এছাড়া ‘বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ এর মাধ্যমে ই-লার্নিং, টেলিমেডিসিন, ই-কৃষির মতো নতুন নতুন সেবার সুযোগ রয়েছে। এছাড়াও যেকোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও আপদকালীন সময় বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটের মাধ্যমে নিরবচ্ছিন্ন টেলিকমনিকেশন সেবা দেওয়া যাবে। দেশের দুর্গম ও প্রত্যন্ত অঞ্চলে ইন্টারনেট সুবিধা সম্প্রসারণ করা যাবে। যেমন- চিকিৎসাসেবায় স্যাটেলাইট ব্যবহারের ব্যবস্থা নেওয়া যাবে। ইতোমধ্যে আবহাওয়া পূর্বাভাস প্রাপ্তির সুবিধা নেওয়া হচ্ছে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট থেকে।
বর্তমানে শুধু দেশি টেলিভিশন চ্যানেলগুলোই বছরে আনুমানিক ৮ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বিদেশি স্যাটেলাইট প্রতিষ্ঠানগুলোকে ভাড়া দিয়ে আসছে। এছাড়াও অন্য প্রতিষ্ঠানও বিদেশি স্যাটেলাইট থেকে সেবা নিয়ে আসছে। বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটি-১ ব্যবহারের মাধ্যমে উল্লিখিত খাতে ব্যয় করা বিরাট অঙ্কের বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় হবে।
এদিকে দেশের প্রথম এই কৃত্রিম উপগ্রহ ব্যবহারে প্রথমবারের মতো নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে সমঝোতা স্মারক ও চুক্তিসই করেছে বিসিএসসিএল। এই চুক্তির মাধ্যমে নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন সংস্থার অধীনস্থ বন্দর, ফেরিঘাট, জাহাজ ও অন্যান্য স্থাপনায় বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ থেকে প্রয়োজনীয় সেবা দেয়া হবে।
প্রসঙ্গত, গত ১২ মে বাংলাদেশ সময় মধ্যরাতে মহাকাশ পানে তীব্র গতিতে ছুটে যায় বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইট। যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডা থেকে উৎক্ষেপণের ১০ দিন পর তার নিজস্ব অবস্থানে (অরবিট স্লট) পৌঁছে। গত সাড়ে ৩ মাস ধরে তার পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলছে। ফ্রান্সের থ্যালেস অ্যালেনিয়া স্পেসের কাছ থেকে কেনা হলেও এটি পরিচালিত হবে গাজীপুর ও রাঙামাটি