1. অন্যরকম
  2. অপরাধ বার্তা
  3. অভিমত
  4. আন্তর্জাতিক সংবাদ
  5. ইতিহাস
  6. এডিটরস' পিক
  7. খেলাধুলা
  8. জাতীয় সংবাদ
  9. টেকসই উন্নয়ন
  10. তথ্য প্রযুক্তি
  11. নির্বাচন বার্তা
  12. প্রতিবেদন
  13. প্রবাস বার্তা
  14. ফিচার
  15. বাণিজ্য ও অর্থনীতি

আশ্রয়ণের নতুন সাড়ে ৬৫ হাজার ঘর : মজবুত করে বানাতে বাড়ছে ব্যয়

বিশেষ প্রতিবেদক : ইবার্তা টুয়েন্টিফোর ডটকম
বৃহস্পতিবার, ৩১ মার্চ, ২০২২

মুজিববর্ষে গৃহহীনদের মধ্যে বিনা মূল্যে বাড়ি বিতরণের যে কর্মযজ্ঞ চলছে, তার মধ্যে তৃতীয় ধাপে ৬৫ হাজার ৪৭৪টি ঘরের পেছনে খরচ হচ্ছে প্রথম ও দ্বিতীয় ধাপের তুলনায় অনেক বেশি।

এই ঘরগুলোর নির্মাণকৌশল প্রথম দুই ধাপের তুলনায় ভিন্ন। এ কারণে এগুলো বেশি টেকসই হবে বলে জানাচ্ছেন প্রকল্পসংশ্লিষ্টরা।

গত বছরের জানুয়ারি ও জুনে বরাদ্দ দেয়া ঘরের কলামগুলো ইটের তৈরি হলেও এবার ব্যবহার করা হচ্ছে রডযুক্ত ঢালাই করা পিলার। ঘরগুলোর ফাউন্ডেশনের নিচেও ঢালাই দেয়া হয়েছে, যা আগে দেয়া হয়নি। এসব কারণেই মূলত বেড়েছে বরাদ্দ।

প্রথম ধাপে ১ লাখ ৭০ হাজার টাকা এবং দ্বিতীয় ধাপে ১ লাখ ৯০ হাজার টাকা করে ঘর নির্মাণের পর বরাদ্দের অপ্রতুলতার বিষয়টি সামনে আসে।

২০২১ সালের ২১ জানুয়ারি প্রথম ধাপে ৬৬ হাজার ১৮৯ জনের হাতে বিনা মূল্যের ঘর তুলে দেয়া হয়। দ্বিতীয় ধাপে গত ২০ জুন থেকে ৫৩ হাজার ৩৪০টি পরিবারের মধ্যে ঘর বিতরণ শুরু হয়।

দুই ধাপে নির্মিত ঘরের সংখ্যা ১ লাখ ১৭ হাজার ৩২৯টি। এর মধ্যে বেশ কয়েকটি ঘর ভেঙে পড়ার, কোথাও কোথাও জমি লাগোয় মাটি ধসে পড়া, কোথাও কোথাও লোকালয় থেকে অনেক দূরে নির্মাণের কারণে বরাদ্দপ্রাপ্তদের সেখানে থাকার অনীহার বিষয়টি উঠে আসে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের তত্ত্বাবধানে নির্মিত এই ঘরগুলোর একটি অংশ নিয়ে অভিযোগ ওঠার পর প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে তদন্ত দল গঠন করা হয়। তারা সরেজমিন পরিদর্শন করে সরকারপ্রধানকে প্রতিবেদন দিয়েছে। তাদের সুপারিশের ভিত্তিতে বেশ কিছু পরিবর্তন আনা হয়।

কর্মকর্তারা জানাচ্ছেন, তৃতীয় ধাপে একেকটি ঘরের জন্য বরাদ্দ ধরা হয়েছে ২ লাখ ৫৯ হাজার ৫০০ টাকা। প্রথম ও দ্বিতীয় ধাপের তুলনায় এবারের ঘরগুলোর নকশায়ও আনা হয়েছে পরিবর্তন। এই ধাপে জমি নির্বাচনের ক্ষেত্রেও সতর্কতা অবলম্বন করা হয়েছে।

আগামী ১০ মে গৃহহীনদের হাতে ঘরগুলো হস্তান্তর করার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে।

ঢাকার সাভার উপজেলার শিমুলিয়া ইউনিয়নের গোহাইলবাড়ী আশ্র‍য়ণ কেন্দ্রে ১ দশমিক ৪১ একর জমিতে নির্মাণ হচ্ছে ৬৪টি ঘর। কাজ প্রায় শেষ, এখন চলছে রঙের কাজ। যারা বরাদ্দ পাচ্ছেন, তারা এসে কাজ দেখে যাচ্ছেন।

নদীভাঙনে বসতভিটা হারিয়ে বরিশালের মেহেদিগঞ্জের আব্দুল কাদির দেওয়ান এক যুগের বেশি সময় ধরে বসবাস করছেন সাভারের শিমুলিয়া ইউনিয়নে। যখন শরীরে বল ছিল, তখন কাজ করেছেন। এখন সেই শক্তি নেই। ফলে বাড়ি ভাড়া জোগানো তার জন্য কঠিন হয়ে গেছে। ঘর পাওয়া তার জন্য এক স্বস্তির বার্তা।

তিনি বলেন, ‘ঘর পাইতাছি, খুবই ভালো লাগতেছে। আল্লাহর রহমতে ঘর ভাড়াটা বাইচা যাইব। প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানাই।’

ঘর পছন্দ হইছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আল্লাহ দিলে খুব পছন্দ হইছে। আমরা দুইজন মানুষ এইহানে থাকুম।’

শিমুলিয়া ইউনিয়নে ভাড়া থাকেন আনোয়ারা বেগম। তার আবাসনসংকট আর থাকছে না। তিনি বলেন, ‘খুব খুশি হইছি। মনের ধারণা হয় নাই কখনও নিজে ঘরের মালিক হমু। দুই হাত ভইরা অন্তর দিয়া আশীর্বাদ করি।’

আগের দেয়া ঘরগুলোর সঙ্গে এবারেরগুলোর কী পার্থক্য জানতে চাইলে পরিবর্তন আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক আবু সালেহ মোহাম্মাদ ফেরদৌস খান বলেন, ‘এবার আরসিসি পিলার করা হয়েছে। ফাউন্ডেশনের নিচে সিসি ঢালাইসহ গ্রেড বিম দেয়া হয়েছে। দরজা-জানালার ওপরে পুরোটাই লিনটেন দেয়া হয়েছে।

‘সিমেন্ট ও বালুর চার অনুপাত একের মিশ্রণও নিশ্চিত করা হয়েছে। ঘরের চালা যাতে উড়ে না যায় সে জন্য অ্যাংকর রড পর্যাপ্ত পরিমাণে রাখা হয়েছে। সবকিছুর ফলে ঘরটি অধিকতর টেকসই।’

সাভার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাজহারুল ইসলাম বলেন, ‘দ্বিতীয় ধাপে মাটির নিচে গ্রেড বিম ছিল না, বর্তমানে আছে। বারান্দার কলামগুলো আগে ইট দিয়ে তৈরি ছিল, এবার রড দিয়ে আরসিসি কলাম তৈরি করছি। কাঠগুলো আগে আলকাতরা দেয়া ছিল না, এবার আলকাতরা দেয়া হয়েছে, যাতে ঘুণে না ধরে।’

শতভাগ স্বচ্ছতার ভিত্তিতে গৃহহীনদের বাছাই করা হয়েছে জানিয়ে শিমুলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এ বি এম আজহারুল ইসলাম সুরুজ বলেন, ‘যাদের বরাদ্দ দেয়া হচ্ছে, তাদের আসলেই ঘরবাড়ি নাই, গৃহহীন। তাদেরকে বাছাই করে ইউএনওর কাছে তালিকা দিয়েছি।’

বিনা মূল্যে বিতরণের জন্য ১ লাখ ৮২ হাজার ৮০৩টি ঘরের জন্য সরকার ব্যয় করছে মোট ৩ হাজার ৯৭১ কোটি ৬ লাখ ৮৩ হাজার টাকা।

১৯৯৭ সাল থেকে চলতি অর্থবছর পর্যন্ত সরকারি আশ্রয়ণ কেন্দ্রে পুনর্বাসিত পরিবারের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৭ লাখ ৮ হাজার ৩টি৷ প্রতিটি পরিবারের সদস্য পাঁচজন ধরলে সুবিধাভোগী দাঁড়ায় ৩৫ লাখ ৪০ হাজার ১৫ জন।


সর্বশেষ - রাজনীতি