পাঁচ দশকের পথচলার এক অনন্য মাহেন্দ্রক্ষণ অতিক্রম করছে বাংলাদেশ। স্বাধীনতাপূর্ব দারিদ্র্যপীড়িত, শোষিত-বঞ্চিত এক জাতি আজ এই অনন্য মুহূর্তে আজ উন্নয়নশীল দেশের স্বীকৃতির দ্বারপ্রান্তে। দেশের স্বাধীনতা সংগ্রাম থেকে শুরু করে উন্নয়নের পথে অগ্রযাত্রায় সব প্রতিবন্ধকতা অতিক্রম করে এগিয়ে যাওয়ার লড়াইয়ে যে রাজনৈতিক দলটি বারবার নেতৃত্ব দিয়ে গেছে, তার নাম আওয়ামী লীগ। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শের এই দলটির নেতৃত্বেই স্বাধিকার থেকে স্বাধীনতা, স্বনির্ভরতা থেকে মুক্তি শপথের উন্নয়নের মহামঞ্চে এক অদম্য অগ্রযাত্রায় আজ সামিল হয়েছে বাংলাদেশ। স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর পথ পেরিয়ে শতবর্ষের বাংলাদেশ হয়ে উঠবে উন্নত-সমৃদ্ধ আদর্শ গণতান্ত্রিক ও উন্নত রাষ্ট্র— সেই প্রত্যাশায় পথ চলছে বাংলাদেশ ও আওয়ামী লীগ।
দেশের কেবল প্রাচীন ও সর্ববৃহৎ রাজনৈতিক দলই নয়, রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলে থাকেন, বাংলাদেশের রাজনীতির মূলধারা বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয় ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ইতিহাস একসূত্রে গাঁথা। ১৯৪৯ সালে ২৩ জুন তৎকালীন পাকিস্তানের প্রকৃত অর্থে প্রথম বিরোধী দল হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে আওয়ামী লীগ। জন্মলগ্নে দলের নাম ছিল ‘পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগ’। দলীয় মূলনীতিতে ধর্মনিরপেক্ষতা গ্রহণের মাধ্যমে ১৯৫৫ সালে অসাম্প্রদায়িক রাজনৈতিক দল হিসেবে ‘পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী লীগ’ নামকরণ করা হয়। জন্মলাভের পর থেকেই এই জনপদে সমাজ-সংস্কৃতি-রাজনীতির সমন্বয় ও রাজনীতিতে সততা ও সম্প্রীতির আদর্শকে দলটি সর্বদা ধারণ করে এগিয়ে চলছে।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠাসহ বাঙালি জাতির যা কিছু শ্রেষ্ঠ অর্জন, তার মূলে এই রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠানটির নেতৃত্ব অনস্বীকার্য। তাই আওয়ামী লীগের ইতিহাস বাঙালি জাতির গৌরবোজ্জ্বল অর্জন ও সংগ্রামের ইতিহাস। হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী, মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, সৈয়দ নজরুল ইসলাম, তাজউদ্দিন আহমেদ, এম মনসুর আলী ও এএইচএম কামারুজ্জামানের মতো প্রাতঃস্মরণীয় জাতীয় নেতারাও দলটির প্রাণপুরুষ হিসেবে ইতিহাসে ঠাঁই করে নিয়েছেন।
জন্মলগ্ন থেকে ধর্মনিরপেক্ষ-অসাম্প্রদায়িক রাজনীতি, বাঙালি জাতীয়তাবাদ, গণতান্ত্রিক সংস্কৃতি, শোষণমুক্ত সাম্যের সমাজ নির্মাণের আদর্শ এবং একটি উন্নত-সমৃদ্ধ আধুনিক, প্রগতিশীল সমাজ ও রাষ্ট্রব্যবস্থা নির্মাণের রাজনৈতিক-অর্থনৈতিক-সামাজিক ও সাংস্কৃতিক দর্শনের ভিত্তি রচনা করে দলটি। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নির্দেশে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে মহান মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে অর্জিত হয় লাল-সবুজের স্বাধীনতা।
সাত দশকের লড়াই-সংগ্রামের অভিযাত্রায় বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ বাংলার মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার ও অর্থনৈতিক মুক্তির অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য নিরন্তর সংগ্রাম অব্যাহত রেখেছে। পাকিস্তান রাষ্ট্রে বাঙালির ন্যায্য দাবি আদায়ের নিরবিচ্ছিন্ন আন্দোলন, সংগ্রামের পাশাপাশি পাকিস্তানি ঔপনিবেশিক ধাঁচের রাষ্ট্রযন্ত্রের দুঃশাসন, শোষণ ও জাতি নিপীড়নের নিগড় থেকে বাঙালি জাতির মুক্তিসংগ্রামে এই দল ধারাবাহিকভাবে নেতৃত্ব দিয়ে এসেছে।
বায়ান্নর ভাষা আন্দোলন, চুয়ান্নর যুক্তফ্রন্ট নির্বাচন, গণতান্ত্রিক শাসনতন্ত্রের আন্দোলন, যৌথ নির্বাচন ব্যবস্থা, সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব, আইয়ুব শাসনামলে স্বৈরশাসনবিরোধী আন্দোলন, বাষট্টি ও চৌষট্টির শিক্ষা আন্দোলন, ছেষট্টির ঐতিহাসিক ছয় দফা আন্দোলন, আটষট্টির আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা, ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থান, সত্তরের নির্বাচনে ঐতিহাসিক বিজয়— এমন অসংখ্য আন্দোলন-সংগ্রামের ধারাবাহিকতায় আসে একাত্তর, বাঙালির স্বাধিকার-মুক্তি অর্জনের শেষ ধাপ।
একাত্তরের ৭ মার্চ রেসকোর্স ময়দানে (বর্তমান সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) লাখো জনতার উপস্থিতিতে বঙ্গবন্ধুর বজ্রকণ্ঠে ধ্বনিত হয়েছিল বাঙালির মুক্তির আকাঙ্ক্ষার সেই অমর বাণী— ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম।’ কালজয়ী সেই ভাষণই বাঙালিকে জানিয়েছিল, শোষণ-নিপীড়ন থেকে মুক্তির জন্য সশস্ত্র সংগ্রাম অত্যাসন্ন। আর তাই বঙ্গবন্ধুর ডাকে সাড়া দিয়ে শুরু হয় সর্বাত্মক অসহযোগ। এরপর ২৫ মার্চের সেই কালরাতে যখন বিশ্বকে স্তম্ভিত করে দিয়ে নিরীহ বাঙালির ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী, ২৬ মার্চের প্রথম প্রহরে জাতির পিতা স্বাধীনতার চূড়ান্ত ডাক দেন। শুরু হয় সশস্ত্র সংগ্রাম। সে রাতেই বঙ্গবন্ধুকে গ্রেফতার করে নিয়ে যাওয়া হয় পাকিস্তানে। দেশদ্রোহের মামলায় অভিযুক্ত করে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয় তাকে। বাংলাদেশের নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরা ১০ এপ্রিল বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে রাষ্ট্রপতি করে স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ সরকার গঠন করেন। ১৭ এপ্রিল মেহেরপুর বৈদ্যনাথ তলায় (বর্তমানে মুজিবনগর) শপথ গ্রহণ করে সেই নির্বাচিত সরকার।
আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন এই সরকারের অধীনে দীর্ঘ ৯ মাস অসীম সাহসিকতার সঙ্গে লড়াই করে ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর চূড়ান্ত বিজয় অর্জন করে বাঙালি জাতি। প্রতিষ্ঠিত হয় বাঙালির হাজার বছরের লালিত স্বপ্নের ফসল স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ। মুক্তির সেই ক্ষণেরও প্রায় একমাস পর পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী আন্তর্জাতিক চাপের মুখে বঙ্গবন্ধুকে মুক্তি দিতে বাধ্য হয়। মুক্ত দেশের মাটিতে ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি পা রাখেন জাতির পিতা।
দেশে ফিরেই যুদ্ধবিধ্বস্ত স্বাধীন-সার্বভৌম রাষ্ট্রকে পুনর্গঠনের কাজ শুরু করেন বঙ্গবন্ধু। তবে স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি ছিল সক্রিয়। তাদের ষড়যন্ত্র থেমে ছিল না। তাই জাতির জনক যখন দেশ গড়ার সংগ্রামে সাত কোটি মানুষকে নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন, তার অগ্রযাত্রা থামিয়ে দেওয়া হয় পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট। জাতির জনককে সপরিবারে হত্যা করে রঞ্জিত করা হয় বাংলার বুক। রাষ্ট্রক্ষমতায় চেপে বসে সামরিক শাসনের বেড়াজাল। সংবিধানের মূলনীতি-আদর্শ থেকে বিচ্যুত হয়ে দেশ পরিচালিত হতে থাকে। থমকে যায় গণতান্ত্রিক রাজনীতির পথচলা।
সত্তরের দশকে মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী দেশের রাজনৈতিক বাস্তবতায় আওয়ামীবিরোধী শক্তির উত্থান দেশের অগ্রযাত্রায় প্রতিবন্ধকতা তৈরি করে। স্বাধীনতার পরে আওয়ামী লীগেরই কিছু তরুণ নেতাকর্মী গড়ে তোলেন জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ)। বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্র স্লোগানে যাত্রা শুরু করলেও দূরদর্শী নেতৃত্বের অভাবে ও হঠকারিতায় তাদের রাজনৈতিক কার্যক্রম গণতন্ত্রের অভিযাত্রার পথ কঠিন করে তোলে। সত্তরের দশকের শেষ দিকে একই আওয়ামীবিরোধী সেন্টিমেন্ট নিয়ে সামরিক শাসকদের পৃষ্ঠপোষকতায় গড়ে ওঠে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)। সামরিক শাসকের পৃষ্ঠপোষকতায় গড়ে ওঠে জাতীয় পার্টিও। এসব দলের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ আনুকূল্যে দেশে উত্থান ঘটে মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতাকারী ইসলামি মৌলবাদী শক্তির।
একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের সময় মানুষ যেমন ত্যাগ স্বীকার করেছিল, স্বাধীনতার পরও কিছুকাল কোনো প্রাপ্তির আশা না করে দেশ গঠনে আত্মত্যাগ প্রয়োজন ছিল। কিন্তু বাংলাদেশের একটি শ্রেণি অতি দ্রুত অতি প্রাপ্তি-প্রত্যাশায় বিভ্রান্তির জাল বিস্তৃত করে। পৃথিবীর উদার গণতান্ত্রিক সংবিধানগুলোর একটি ছিল গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধান। কিন্তু পরবর্তী সময়ে বিভিন্ন সামরিক-বেসামরিক সরকার অনেকবার সংবিধানকে কাটাছেঁড়া করেছে। ফলে সুষ্ঠু গণতান্ত্রিক রাজনীতি বিকশিত হয়নি, প্রাতিষ্ঠানিক রূপ পায়নি সংসদীয় গণতন্ত্রও।
বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর তার সুযোগ্য কন্যা শেখ হাসিনার নেৃতত্বে মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও বাঙালি জাতির হারানো গণতান্ত্রিক অধিকার পুনরুদ্ধারের এক নবতর সংগ্রামের পথে যাত্রা শুরু করে আওয়ামী লীগ। আশির দশকের শেষ ভাগে ফের সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে রাজপথে তীব্র আন্দোলন গড়ে তোলে আওয়ামী লীগসহ দেশের রাজনৈতিক শক্তিগুলো। নব্বইয়ের দশকে ফের শুরু হয় সংসদীয় গণতন্ত্রের চর্চা। পঁচাত্তরের ২১ বছর পর ১৯৯৬ সালে ফের আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসে।
আজ বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সুশাসন, স্থিতিশীল অর্থনীতি, কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধি, উন্নয়নে দৃশ্যমান গতিশীলতা,ডিজিটাল বাংলাদেশ, শিক্ষার প্রসার, স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতকরণ, কর্মসংসংস্থান, বিদ্যুৎ উৎপাদন বৃদ্ধি, সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী, খাদ্য নিরাপত্তা, নারীর ক্ষমতায়ন, অবকাঠামো উন্নয়নসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে যুগান্তকারী উন্নয়নের ফলে বিশ্বের বুকে বাংলাদেশকে একটি আত্মমর্যাদাশীল জাতি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে।
আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা বলছেন, জন্মলগ্ন থেকে এখন পর্যন্ত আওয়ামী লীগের শক্তির উৎস জনগণ, শক্তির উৎস সংগঠনের তৃণমূল পর্যায়ের নেতাকর্মীরা। তাদের ইস্পাতদৃঢ় মনোবল ও ঐক্যবদ্ধতার ফলে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে কোনো ষড়যন্ত্র সফল হয়নি, কোনো কোনো সময় ষড়যন্ত্র সাময়িক সফল হলেও ফের লড়াই-সংগ্রাম-আন্দোলনের মধ্য দিয়ে দলকে এগিয়ে নিয়ে গেছেন তারা। দীর্ঘ এই পথ পরিক্রমায় এ দেশের সব গণতান্ত্রিক-প্রগতিশীল আন্দোলনের সাহসী মিছিলের নাম বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ।
স্বাধীনতার এই পাঁচ দশকের মধ্যে গণতান্ত্রিক সরকার ক্ষমতায় থাকার সুযোগ পেয়েছে তিন দশকের মতো সময়। এর মধ্যে দুই দশকই ক্ষমতায় ছিল আওয়ামী লীগ। জাতির জনক সময় পেয়েছিলেন মাত্র সাড়ে তিন বছর। বাকি সময়টুকু ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগকে নেতৃত্ব দিয়ে গেছেন বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা। সবশেষ গত ১২ বছর ধরেই দেশকে নেতৃত্ব দিয়ে যাচ্ছেন তিনি। দেশের অর্থনীতি থেকে শুরু করে সামাজিক-সাংস্কৃতিক খাত ও অবকাঠামোগত উন্নয়নের আজকের যে চিত্র, তার অনেকটাই অর্জিত এই একযুগে। বিশেষ করে অবকাঠামো ও যোগাযোগ খাতের এক সোনালি সময় পার করছে বাংলাদেশ। একই সময়ে কুশলী কূটনৈতিক তৎপরতায় বিভিন্ন দেশের সঙ্গে সম্পর্কের জায়গাগুলোও উন্নত করেছে আওয়ামী লীগ সরকার। ভারতের সঙ্গে ছিটমহল বিনিময়, সমুদ্রসীমায় নিজেদের অধিকার প্রতিষ্ঠা, বিভিন্ন দেশের সঙ্গে বাণিজ্য সম্পর্ক উন্নয়নের মতো বিষয়গুলোতে সাফল্যও এসেছে আওয়ামী লীগের হাত ধরেই।
দেশের পাঁচ দশকের পথচলায় চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের সামনে দাঁড়িয়ে আগামী দিনের চাহিদা ও নতুনত্বের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে পারাটাই এখন আওয়ামী লীগের সামনে চ্যালেঞ্জ। তবে সেই চ্যালেঞ্জ মেনে নিতে বিন্দুমাত্র আপত্তি নেই আওয়ামী লীগের। বরং আওয়ামী লীগই যেমন লড়াই-সংগ্রামের মাধ্যমে দেশের স্বাধীনতা এনেছে, তেমনি নতুন নতুন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে এই আওয়ামী লীগই একবিংশ শতাব্দীতে বাংলাদেশকে উন্নত দেশের কাতারে নিয়ে যাবে— এমনটিই বিশ্বাস দলের নেতাকর্মীদের। দলের সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনায় ‘রূপকল্প ২০৪১’ ও শত বছরের পরিকল্পনা ‘ডেল্টা প্ল্যান’ তারই প্রতিফলন— এমনটিই মনে করেন তারা।
দলটির সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেন বলেন, আওয়ামী লীগ নিছক একটি রাজনৈতিক দল নয়, আওয়ামী লীগ বাংলাদেশের স্বাধীনতার সংগ্রামে নেতৃত্ব দেওয়া সেই দল যা জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নীতি ও আদর্শ নিয়ে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। বঙ্গবন্ধু দেশের মানুষকে স্বাধীনতা এনে দিয়েছিলেন। কিন্তু তার চূড়ান্ত লক্ষ্য ছিল মানুষের মুক্তি— অর্থনৈতিক মুক্তি, সামাজিক-সাংস্কৃতিক মুক্তি। স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি বঙ্গবন্ধুকে তার স্বপ্ন পূরণ করতে দেয়নি। কিন্তু বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা তার পিতার সেই অপূর্ণ স্বপ্নকে পূরণ করতে কাজ করে যাচ্ছেন। দেশের মানুষকে একটি উন্নত জীবন উপহার দিতে যা কিছু করা প্রয়োজন, তিনি করে যাচ্ছেন। আওয়ামী লীগের প্রতিটি নেতাকর্মী শেখ হাসিনার কল্যাণমুখী রাজনৈতিক দর্শনকে ধারণ করেন। এই আওয়ামী লীগই দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবে।
দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, আওয়ামী লীগের রাজনীতির লক্ষ্য-উদ্দেশ্য একটিই— মানুষের কল্যাণ। জাতির পিতা তার সব ভাষণে বলেছেন, রাজনীতিতে তার পা রাখার একমাত্র কারণই হলো সাধারণ মানুষের অধিকার আদায়। বঙ্গবন্ধু যখন গণমানুষের নেতা হয়ে উঠলেন, তখনও তিনি এই ভূখণ্ডের মানুষের স্বাধীনতা আর মুক্তির জন্যই সংগ্রাম করে গেছেন। তার সুযোগ কন্যা আমাদের নেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও তার প্রতিটি বক্তব্যেই জনকল্যাণমুখী এই রাজনৈতিক দর্শনের কথাই বারবার বলে থাকেন। আমরা বিশ্বাস করি, পিতা ও কন্যার দেখানো পথ ধরেই আওয়ামী লীগ আরও শত বছর মানুষের কল্যাণে কাজ করে যাবে। আওয়ামী লীগ যেভাবে স্বাধীনতা এনেছে, সেই আওয়ামী লীগই আজ দেশকে উন্নয়নশীল দেশে রূপান্তরিত করেছে বাংলাদেশকে। আমরা বিশ্বাস করি, একটি উন্নত-সমৃদ্ধ বাংলাদেশের যে স্বপ্ন জাতির জনকের ছিল, সেটিও পূরণ করতে এই আওয়ামী লীগের বিকল্প নেই।
লেখক- নৃপেন রায়, সাংবাদিক।