শেখ হাসিনা বলেন, “আসলে উন্নয়নটা তখনই হবে দেশটাকে যদি কেউ চিনতে পারে, জানতে পারে, দেশের মানুষকে ভালোবাসতে পারে এবং উন্নতি যে অপরিহার্য দেশটার জন্য, সেটা যদি কারও চিন্তা-চেতনায় থাকে তখনই সেদেশের উন্নতি সম্ভব।
“বাংলাদেশের সীমিত সম্পদ, ভৌগলিক সীমারেখার তুলনায় জনসংখ্যা অনেক বেশি, এদেশে ধারাবাহিক গণতন্ত্র চলেনি, মিলিটারি ডিক্টেটররা বিভিন্ন কখনও দৃশ্যমান হয়ে আবার কখনও অদৃশ্যভাবে এই রাষ্ট্র পরিচালনা করেছে। ক্ষমতা যুদ্ধাপরাধী আর খুনিদের হাতে থাকলে সেই দেশের কখনও উন্নতি হওয়া সম্ভব না।”
প্রধানমন্ত্রী বলেন, “এই দেশের স্বাধীনতা আমরা অর্জন করেছি। এই স্বাধীনতাকে সুসংহত করা আর স্বাধীনতার সুফলটা যেন বাংলাদেশের প্রতিটি মানুষ, প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষের হাতে পৌঁছায় তার জন্য অর্থনৈতিকভাবে আমরা স্বাবলম্বি হব, কারও কাছে হাত পেতে চলব না। নিজের পায়ে চলব।
‘বাংলাদেশ অবকাঠামো উন্নয়ন তহবিল’ গঠন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “করোনাভাইরাস বিশ্ব অর্থনীতিতে প্রভাব ফেলেছে। কিন্তু এর মাঝেও আমাদের দেশকে আমাদের এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। আর সেই লক্ষ্য নিয়েই এই তহবিল গঠন।”
গ্লোবাল ভিলেজে এককভাবে কেউ চলতে পারে না জানিয়ে তিনি বলেন, “আজকে আমাদের পোর্ট..চট্টগ্রাম পোর্ট, মোংলা পোর্ট, এখন পায়রা পোর্ট, আবার মাতারবাড়িতেও অর্থাৎ মহেশখালি সেটাও একটা নতুন পোর্ট আমাদের তৈরি হচ্ছে। আমরা শুধু নিজে ব্যবহার করব না ইতিমধ্যে ভারত, নেপাল, ভুটান তাদেরকেও আমরা কিন্তু সুযোগ দিয়েছি।
চট্টগ্রাম বন্দরের সক্ষমতা বাড়াতে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, “পাশাপাশি মোংলা পোর্ট যখন চালু হয়েছে সাথে সাথে এই দুটো হলে আমাদের অর্থনীতিতে বিরাট অবদান রাখতে পারবে। কাজেই আমি মনে করি, এটা একটা বড় চ্যালেঞ্জ ছিল এবং সত্যি কথা বলতে, পায়রা পোর্ট যখন প্রথম করি তখন অনেকের কাছে শুনেছি- এটা চলবে না, এটা কিভাবে হবে, এটা কাজে লাগবে না। ইত্যাদি নানা কথা শুনতে হয়। তবে এটা ঠিক অনেক কিছু শুনতে হতে পারে, ওগুলো নিয়ে আমি চিন্তা করি না।”
দেশের উন্নয়নে তার সরকারের নেওয়া বিভিন্ন পরিকল্পনার কথাও অনুষ্ঠানে তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী। অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ‘বাংলাদেশ অবকাঠামো উন্নয়ন তহবিল’ এর উদ্বোধন করার পর তার মুখ্য সচিব আহমদ কায়কাউস প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, “আমাদের বাংলাদেশে একটি নবযুগের সূচনা হয়েছে।”
প্রধানমন্ত্রী বিআইডিএফ থেকে অর্থায়নের জন্য প্রথম অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প হিসেবে পায়রা বন্দরে রাবনাবাদ চ্যানেলের ক্যাপিটাল ও মেইনটেইনেন্স ড্রেজিং স্কিমটি গ্রহণ করেন। এই প্রকল্পের অর্থায়ন বিষয়ে অনুষ্ঠানে অর্থ বিভাগ, পায়রা বন্দর কর্তৃপক্ষ এবং সোনালী ব্যাংক লিমিটেডের মধ্যে একটি ত্রিপক্ষীয় ঋণ চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। অনুষ্ঠানে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল, নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির, অর্থ বিভাগের সচিব আব্দুর রউফ তালুকদার ডিভিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সংযুক্ত ছিলেন।