প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভবিষ্যতে ইউএস বাংলা এয়ারলাইন্সের মতো বিমান দুর্ঘটনা এড়াতে প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে তাঁর সভাপতিত্বে উচ্চপর্যায়ে এক জরুরি সভায় শেখ হাসিনা ইন্টারন্যাশনাল এভিয়েশন সেফটি রেগুলেশন্স যথাযথভাবে অনুসরণের জন্য মন্ত্রণালয় এবং সংশ্লিষ্ট বিভাগ ও এয়ারলাইন্স অপারেটরদের নির্দেশ দেন।
বৈঠকে বিমান দুর্ঘটনার সার্বিক পরিস্থিতি প্রধানমন্ত্রীকে অবহিত করা হয়।
নেপালে ইউএস বাংলা এয়ারলাইন্সের বিমান বিধ্বস্ত হওয়ার ঘটনাকে ‘খুবই দুর্ভাগ্যজনক’ উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দলের নেতাকর্মীদের দুর্ঘটনায় হতাহতদের পরিবারের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘ইতোমধ্যে আমি আমাদের দলের নেতাকর্মীদের বিমান দুর্ঘটনায় হতাহতদের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করার নির্দেশ দিয়েছি এবং তাদের কাছে আমাদের সমবেদনা পৌঁছে দিতে বলেছি। আমরা তাদের সহায়তা করার চেষ্টা করছি।
শেখ হাসিনা এর আগে বুধবার সকালে উচ্চপর্যায়ে এক সভায় বলেন, সরকার কাঠমান্ডুতে বিমান দুর্ঘটনায় হতাহতদের স্মরণে বৃহস্পতিবার একদিনের রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করেছেন।
আজ বৃহস্পতিবার সারাদেশে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখা হচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, এছাড়া শুক্রবার সারাদেশে সকল ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান এবং মসজিদ, মন্দির, গির্জা, প্যাগোডাসহ সকল উপাসনালয়ে বিশেষ প্রার্থনা করা হবে।
প্রধানমন্ত্রী এ ধরনের পরিস্থিতির মোকাবেলায় দক্ষতা আরো বৃদ্ধির প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। তিনি বিমান বিধ্বস্তের এই ঘটনাকে ‘আমাদের জন্য বড় একটি দুর্ঘটনা’ উল্লেখ করে দেশবাসীকে এ মুহূর্তে ধৈর্য্য ধরার অনুরোধ করেন।
প্রধানমন্ত্রী বিমানের যাত্রী, পাইলট ও ক্রু এবং পরিকল্পনা কমিশনের দুই কর্মকর্তাকে ‘আমাদের মেধাবী সন্তান’ উল্লেখ করে তাদের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেন এবং নেপালের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি আহতদের যথাযথ চিকিৎসা নিশ্চিত করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি নির্দেশ দেন।
পুড়ে যাওয়া রোগীদের বাংলাদেশে ভালো চিকিৎসার ব্যবস্থা থাকায় দুর্ঘটনায় দগ্ধ নেপালি নাগরিকদের এদেশে চিকিৎসা প্রদানের জন্য প্রধানমন্ত্রী সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেন।
এই দুর্ঘটনায় জীবন ও সম্পদহানিতে গভীর শোক প্রকাশ করে বিদেশ সফর সংক্ষিপ্ত করে দেশে ফিরে আসেন।
সোমবার বিকেলে কাঠমান্ডুতে ত্রিভূবন আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে অবতরণকালে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের একটি বিমান বিধ্বস্ত হয়ে আগুন ধরে যায়। এতে বিমানের কমপক্ষে ৫১ জন আরোহী নিহত হয়।
প্রধানমন্ত্রী এর আগে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং বেসামরিক বিমান চলাচল মন্ত্রণালয়কে সক্রিয়ভাবে সম্পৃক্ত করে যৌথভাবে দুঘর্টনা পরবর্তী পরিস্থিতি মোকাবেলায় দু’দেশের কর্তৃপক্ষের জন্য ক্ষেত্র তৈরি করতে নেপালের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেন।
আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে বুধবার সন্ধ্যায় দলের সভায় বলেন, আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা বিমান দুর্ঘটনায় হতাহতদের পরিবারগুলোর বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে অবহিত হবে এবং দল তাদের কিভাবে সহায়তা করতে পারে তার একটি উপায় খুঁজে বের করবে।
এদিকে নিহতদের সনাক্ত করতে পুলিশের একটি বিশেষজ্ঞ দল কাঠমান্ডু যাবে এবং ডিএনএ পরীক্ষা করে নিহতদের মৃতদেহ নিয়ে আসবে বলে জানা গেছে। আহতদের চিকিৎসার জন্য কাঠমান্ডুতে বাংলাদেশ থেকে একটি মেডিকেল টিম পাঠানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে। বেসামরিক বিমান চলাচল মন্ত্রী শাহজাহান কামাল বর্তমানে কাঠমান্ডুতে রয়েছেন। সেখানে তিনি বিভিন্ন বিষয় সমন্বয় করছেন এবং বিভিন্ন বিষয়ে আমাদেরকে তথ্য দিচ্ছেন। তিনি ঢাকায় ফিরে আসার পর বিস্তারিত জানান যাবে।