হিরো আলমকে ‘জাহান্নামের আগুন’ দেওয়া হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন জনৈক আলেম। গতকাল আয়োজন করে আলোচিত ইউটিউবার আশরাফুল আলম ওরফে হিরো আলমের হাতে উপহারের গাড়ির চাবি ও কাগজপত্র হস্তান্তর করেন শিক্ষক মখলেছুর রহমান। উপহারের গাড়ি আনতে গিয়েও বরাবরের মতোই নেতিবাচক কাজের শিরোনাম তিনি। অতিরিক্ত গতিতে গাড়ি চালিয়ে পথেই মামলা খেয়ে ২৫ হাজার টাকা জরিমানা গুনেছেন।
মখলেছুর রহমান যে গাড়িটি হিরো আলমকে উপহার দেন তার রেজিস্ট্রেশন নম্বর ঢাকা মেট্রো-চ ৫১-৪১০১। সিসি ১৮০০। সর্বশেষ ট্যাক্স প্রদান করা হয় ২০১৩ সালের ১৮ মার্চ। ওই বছরের ১৫ জুলাই গাড়ির ফিটনেস মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়। ফলে গাড়িটির ১০ বছরের বকেয়া হিসাবে সরকারি ফি দিতে হবে চার লাখ ৩৯ হাজার ৪৪৩ টাকা। বিগত ১০ বছর গাড়িটি অবৈধভাবে ব্যবহার করেছেন মখলেছুর রহমান। তবে ট্যাক্স পরিশোধের ‘ঝামেলা’ এড়াতে অনুষ্ঠানে চাবি হাতে পেয়ে হিরো আলম গাড়িটিকে গরিব মানুষের জন্য অ্যাম্বুল্যান্স বানানোর ঘোষণা দেন।
হবিগঞ্জের চুনারুঘাট উপজেলায় শিক্ষক মখলেছুর রহমানের দেওয়া ওই হিরো আলমকে দেওয়া উপহারের গাড়ি নিয়ে পাওয়া গেছে নতুন তথ্য। ২০১৩ সালের পর থেকে ওই গাড়ির ট্যাক্স বকেয়া এবং ফিটনেস হাল নাগাদ নেই। ফলে গাড়ির লাইসেন্স নবায়ন করতেই লাগবে চার লাখ ৩৯ হাজার ৪৪৩ টাকা। ফলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নতুন করে আলোচনা-সমালোচনা চলছে ওই উপহারের গাড়ি নিয়ে।
এবিষয়ে ইসলামি চিন্তাবিদ ও গবেষক আল্লামা আবদুল্লাহ হারুন বলেন, “গাড়িটির বর্তমান হালাত বৈধ নয়। ২০১৩ সাল থেকে গাড়ির জন্য ধার্যকৃত সরকারি ট্যাক্সের টাকা না দেয়া ইসলামের দৃষ্টিকোণ থেকে ‘জায়েজ’ হয় নি। সুরা বাকারায় আল্লাহ বলেছেন অবৈধভাবে অন্যের সম্পদ ভোগ না করতে। কর বকেয়া থাকা ফিটনেসবিহীন এই গাড়ি চললে জান ও মালের অনিষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।”
ইমাম আল মুয়াফ্ফাকের ফতোয়ার কথা উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, অবৈধ সম্পদ দান করে সেই জাহিল অধ্যক্ষ মূলত আত্মপ্রচার করতে চেয়েছে যা রিয়া তথা ছোট শিরকের সমতূল্য। হিরো আলমকে ‘জান্নামের আগুন’ উপহার দেয়া হয়েছে বলেও তিনি মন্তব্য করেছেন।
কথা হয় তথ্যপ্রযুক্তি ও সাইবার নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ ইফতেখার মোহাম্মদের সাথে। তিনি বলেন, “এসব কাজের সংবাদ ও ছবি যারা লাইক ও শেয়ার করে তারা অপরাধকে উৎসাহিত করছেন, একজন সচেতন নাগরিকের জন্য এটি অনুচিত। ”
বিআরটিএ হবিগঞ্জের সহকারী পরিচালক হাবিবুর রহমান বলেন, “গাড়ির লাইসেন্স নিয়মিত নবায়ন না করা হলে কত টাকা দিয়ে নবায়ন করতে হবে তা ব্যাংক হিসাব দিতে হবে। ২০১৩ সাল থেকে যদি গাড়িটির মেয়াদ উত্তীর্ণ হয় তাহলে বিপুল পরিমাণ টাকা বকেয়া দিতে হবে।”
তবে বৈধ কাগজপত্র ছাড়াই মখলেছুর পাঁচ বছর ওই গাড়ি ব্যবহার করেছেন বলে স্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, “গাড়িটি পাঁচ বছর যাবৎ কাগজ ছাড়াই চালিয়েছি। হিরো আলমও কাগজপত্র দেখে এবং সবকিছু জেনেই নিয়েছে। আর অ্যাম্বুলেন্স হিসাবে ব্যবহার করলে কাগজের প্রয়োজন নেই। দেশে এভাবে হাজার হাজার গাড়ি চলছে।”
