1. অন্যরকম
  2. অপরাধ বার্তা
  3. অভিমত
  4. আন্তর্জাতিক সংবাদ
  5. ইতিহাস
  6. এডিটরস' পিক
  7. খেলাধুলা
  8. জাতীয় সংবাদ
  9. টেকসই উন্নয়ন
  10. তথ্য প্রযুক্তি
  11. নির্বাচন বার্তা
  12. প্রতিবেদন
  13. প্রবাস বার্তা
  14. ফিচার
  15. বাণিজ্য ও অর্থনীতি

বাঙালী মধ্যবিত্তকে একাত্তরের ঐক্যে ঐক্যবদ্ধ করেছে শাহবাগ

ইমতিয়াজ মাহমুদ : ইবার্তা টুয়েন্টিফোর ডটকম
মঙ্গলবার, ৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

গণজাগরণ মঞ্চ বাংলাদেশের ইতিহাসে একটি অনন্য ঘটনা। অনন্য বললে একটু অস্পষ্ট হয়- ২০১৩ সনের ৫ ফেব্রুয়ারি বিশ্ববাসী জেনেছিল যে বাংলাদেশের যৌবন অটুট আছে এবং জাতির প্রয়োজনে যৌবন আসলেই উত্তাল হয়। কেউ কেউ বলেন বটে যে কেবল কাদের মোল্লা বা কেবল রাজাকারদের বিচার এইসব থেকেই গণজাগরণটা হয়েছিল। কথাটা আংশিকভাবে সত্যি বটে। কিন্তু প্রকৃত সত্যি হচ্ছে যে বাঙালীর গর্জে উঠার কারণ তৈরি হচ্ছিল দিনের পর দিন ধরে। আমাদের সবচেয়ে মহান যে অর্জন মুক্তিযুদ্ধ সেই যুদ্ধের অর্জন ও ত্যাগের মহিমাকে ওরা একপ্রকার ঠাট্টায় পরিণত করে ফেলেছিল প্রায়।। কাদের মোল্লার ঘটনা তো নিতান্ত সফুলিঙ্গ হিসাবে কাজ করেছে মাত্র।

আমি দেখতে পাই যে আপনারা গণজাগরণ মঞ্চ ও শাহবাগ নিয়ে নানাপ্রকার ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ করেন। আমি পড়ি মনোযোগ দিয়ে সেইসব বিশ্লেষণ। কারো মধ্যে আফসোস দেখি। কাউকে কাউকে বলতে শুনেছি যে আন্দোলনটার ফল তুলে আনা গেল না ইত্যাদি। বেশীরভাগ মানুষই হেফাজত ও ইসলামপন্থী ওদেরকে শাহবাগের বিপরীতে দাড় করিয়ে দেন- যেন ঐটাই ছিল মুল সংঘাত। না, এইগুলি কোন সহি বিশ্লেষণ নয়। সম্ভবত আপনার নিজের লক্ষ্যের সাথে বা নিজের ব্যর্থতার সাথে আন্দোলনের ফলাফল মিলিয়ে ফেলছেন। শাহবাগ একটি সফল আন্দোলন। শাহবাগে আমরা দাবী দাওয়ার কথা বলেছি বটে, কিন্তু দাবী আদায় শাহবাগ আন্দোলনের মুল লক্ষ্য ছিল না।

শাহবাগের গৌরবটা হচ্ছে বাঙালী মধ্যবিত্তকে ১৯৭১এর ঐক্যে পুনরায় ঐক্যবদ্ধ করতে পারা। যে কয়েকজন যুবককে আপনারা কেন্দ্রে দেখতেন, যে কয়েকজনকে আপনারা শ্লোগান দিতে দেখতেন বা যারা শুরুতে নেমে এসেছিলেন ওদের গৌরবজনক ভূমিকা তো অস্বীকার করা যাবে না। কিন্তু প্রকৃত গণজাগরণ ঘটিয়েছিল ঢাকার ও দেশের সব জায়গার মধ্যবিত্ত। পড়া দল বেঁধে এসেছে। কিন্তু না, বক্তৃতা শুনতে বা গান গাইতে বা অন্য কিছু করতে নয়, নিতান্ত নিজের কাছে নিজের দায় থেকে শাহবাগের পুণ্য ভূমিতে কেবল হাজিরা দিতে গিয়েছে ওরা- আছি। বাঙালী ঘুমায়নি, আমরা আছি, আমরা মরে যাইনি- কেবল এইটুকু সারা দুনিয়াকে জানিয়ে দিতে।

হেফাজত এবং ইসলামপন্থী নানারকম দল ও গ্রুপগুলি গণজাগরণে আতঙ্কিত হয়েছিল কেন? কারণটা তো খুব জটিল নয়। গণজাগরণ ছিল ১৯৭১এর পুনর্জাগরন- মানে কিনা মুসলমাদের রাষ্ট্রের ধারনার বিপরীতে সেক্যুলার একটি রাষ্ট্রের ধারণা, শোষণ বৈষম্যের অবসানের ধারণার জাগরণ। সেক্যুলার শোষণমুক্তি বা বৈষম্যের অবসান এইসব কথা আপনি যখনই প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে উচ্চারণ করবেন তখনই তো ওরা কেঁপে উঠবে, আতঙ্কিত হবে। এটাই কি স্বাভাবিক নয়। এইজন্যে গণজাগরণে ওরা আতঙ্কিত হয়েছিল আর আতঙ্কিত মানুষ যে কিরকম আচরণ করবে সেটার তো কোন ঠিক ঠিকানা নাই আরকি।

আমি আমার কথাটা বলি। আমি তো নিজেও একজন শাহবাগীই বটে। ২০১৩ সনে আমি বয়সে ঠিক একদম তরুণ ছিলাম না। গণজাগরণ আমাকে আবার আত্মবিশ্বাস ও চেতনায় উদ্বুদ্ধ করেছে। গণজাগরণের পড় সমতার লড়াই ও বৈষম্য দূর করার লড়াইটা আমার কাছে আর খুব দূরের লড়াই মনে হয় না। আমি এখন জানি যে বাংলাদেশে যৌবন এখনো জাগ্রত, লড়াইয়ের মাহেন্দ্রক্ষণে যৌবন ঠিকই জেগে ওঠে। আমাদের কাজ কেবল লড়াইটা জারি রাখা, চেতনাটা শানিত রাখা। দিন আমরা পালটাবোই- লড়াইটা সেইখানে নিয়ে যাবোই। কাল না হলেও পরশু তো বটেই- নিশ্চিত। শাহবাগ ঘুমায় না।

লেখক : ইমতিয়াজ মাহমুদ – আইনজীবী


সর্বশেষ - রাজনীতি