বিভিন্ন ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর ভাষা ও সংস্কৃতি উন্নয়নে বিশেষ প্রকল্প বাস্তবায়ন হতে যাচ্ছে। এসব প্রকল্প হাতে নেবে রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ। এ লক্ষ্যে আগামী এপ্রিলের মধ্যে বৈসাবির (পার্বত্য অঞ্চলের পাহাড়িদের ঐতিহ্যবাহী সামাজিক উৎসব) আগে সাতটি সম্প্রদায়ের সাতটি ভাষা শিক্ষার অভিধান তৈরি, বিভিন্ন ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর প্রাচীন অলংকার, ঐতিহ্যবাহী পোশাক সংরক্ষণ এবং ঐতিহ্যবাহী নাচ-গান প্রশিক্ষণের জন্য প্রকল্প প্রস্তাবনা পেশ করতে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীভিত্তিক সংগঠনগুলোর প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে। মঙ্গলবার জেলার বিভিন্ন ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর ভাষা ও সংস্কৃতি উন্নয়নে রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের এক মতবিনিময় সভায় এসব বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
সূত্র জানায়, সভায় বিভিন্ন ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর ভাষা, সংস্কৃতি, ঐতিহ্য সংরক্ষণে রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদকে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে প্রস্তাবনা তুলে ধরে বলা হয়, সরকার বিষয়টি নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে পার্বত্য জেলা পরিষদকে ক্ষমতা দিয়েছে। এ লক্ষ্যে রাঙামাটি জেলা সদরে বিভিন্ন ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক কমপ্লেক্স গড়ে তোলাসহ ভাষা ও সংস্কৃতি উন্নয়নে সংশ্লিষ্ট জনগোষ্ঠীর প্রত্যক্ষ অংশগ্রহণে বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করার জন্য আহ্বান জানানো হয়। এ বিষয়ে রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অংসুইপ্রু চৌধুরী বলেন, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর ভাষা, সংস্কৃতি রক্ষার সঙ্গে তাদের অস্তিত্ব নির্ভর করে। তাদের ভাষা, সংস্কৃতি সংরক্ষণ, চর্চা এবং বিকাশের জন্য জেলা পরিষদ ও ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক ইনস্টিটিউট যৌথভাবে কাজ করতে পারে। সরকার মাতৃভাষায় শিক্ষাদানের জন্য ২০১৭ সাল থেকে বিভিন্ন কার্যক্রম হাতে নিয়েছে। পাঠ্যপুস্তক প্রণয়ন করেছে। শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ দিতে প্রশিক্ষণ মডিউল তৈরি করেছে। মাতৃভাষায় শিক্ষাদানের জন্য প্রশিক্ষিত শিক্ষক তৈরি হচ্ছে। আমরা সবার সঙ্গে কথা বলে মাতৃভাষায় শিক্ষাদানে প্রতিবন্ধকতাগুলো চিহ্নিত করে সমাধানের জন্য কাজ করে যাচ্ছি। তিনি বলেন, ভাষার পাশাপাশি আমাদের সংস্কৃতি উন্নয়নেও কাজ করতে হবে। হারিয়ে যাওয়া জিনিস সংরক্ষণ করতে হবে। আধুনিকতাকে অবশ্যই স্বাগত জানাই, কিন্তু মূলকে বাদ দিয়ে নয়। প্রাচীন এবং আধুনিক দুটিকে সমন্বয় করে আমাদের এগোতে হবে। সরকার বসে আছে আমাদের সহায়তা দিতে।