1. অন্যরকম
  2. অপরাধ বার্তা
  3. অভিমত
  4. আন্তর্জাতিক সংবাদ
  5. ইতিহাস
  6. এডিটরস' পিক
  7. খেলাধুলা
  8. জাতীয় সংবাদ
  9. টেকসই উন্নয়ন
  10. তথ্য প্রযুক্তি
  11. নির্বাচন বার্তা
  12. প্রতিবেদন
  13. প্রবাস বার্তা
  14. ফিচার
  15. বাণিজ্য ও অর্থনীতি

সার্চ কমিটি নিরপেক্ষতা দিতে সক্ষম

মর্তুজা হাসান সৈকত : ইবার্তা টুয়েন্টিফোর ডটকম
রবিবার, ৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২২

সব রাজনৈতিক দলের কাছে গ্রহণযোগ্য একটি নির্বাচন কমিশন গঠনের কাজটি যে কঠিন তাতে সন্দেহ নেই। এ জন্য প্রয়োজন ছিল একটি আইন। সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা থাকার পরও আগের কোনো সরকারই নির্বাচন কমিশন গঠনে আইন প্রণয়ন করেনি। তবে এ সংক্রান্ত একটি আইন করার বিষয়ে আগে থেকেই এ সরকার প্রস্তুতি নিচ্ছিল। কিন্তু নির্বাচন কমিশনের মেয়াদ শেষ হওয়ার মাত্র ২ মাস আগেও আইন প্রণয়নের বিষয়ে সরকারের জোরালো কোনো পদক্ষেপ না দেখে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সংলাপে অংশ নিয়ে ২৪টি রাজনৈতিক দল নির্বাচন কমিশন নিয়োগে আইন প্রণয়নের জোর দাবি জানায়। এ পরিস্থিতিতে সরকার আগে থেকে ফাইল ওয়ার্ক করে রাখা আইন প্রণয়নের জন্য কাজের গতি বাড়ায়। অবশেষে সব প্রক্রিয়া শেষ করে গত ২৭ জানুয়ারি বহুল আলোচিত ‘প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ আইন, ২০২২’ জাতীয় সংসদে পাস হয়েছে।

সেই আইনে নির্বাচন কমিশন গঠনের লক্ষ্যে সাংবিধানিক পদাধিকারীদের সমন্বয়ে ৬ সদস্যের একটি অনুসন্ধান কমিটি গঠনের বিধান রাখা হয়েছে। এ আইনে উল্লেখ করা হয়েছে, অনুসন্ধান কমিটির নেতৃত্বে থাকবেন আপিল বিভাগের একজন বিচারপতি আর সদস্য হিসেবে থাকবেন হাই কোর্ট বিভাগের একজন বিচারপতি, মহাহিসাব রক্ষক ও কর্মকমিশনের চেয়ারম্যান। বাকি দুটি পদে থাকবেন রাষ্ট্রপতি মনোনীত দুই বিশিষ্ট নাগরিক, যার মধ্যে থাকবেন একজন নারী। এখানে উল্লেখ্য যে, আপিল বিভাগ এবং হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতিদের নির্ধারণ করবেন প্রধান বিচারপতি।

এই আইন অনুসারে নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার নিয়োগে যোগ্য ব্যক্তি বাছাইয়ে আপিল বিভাগের বিচারপতি ওবায়দুল হাসানকে প্রধান করে গত শনিবার একটি অনুসন্ধান কমিটি গঠন করেছেন মহামান্য রাষ্ট্রপতি।

কমিটির অপর পাঁচ সদস্য হলেন হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি এস এম কুদ্দুস জামান, মহাহিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক মোহাম্মদ মুসলিম চৌধুরী (পদাধিকারবলে), সরকারি কর্ম কমিশনের চেয়ারম্যান সোহরাব হোসাইন (পদাধিকারবলে) এবং রাষ্ট্রপতির মনোনীত দুজন বিশিষ্ট নাগরিক সাবেক নির্বাচন কমিশনার মুহাম্মদ ছহুল হোসাইন ও কথাসাহিত্যিক অধ্যাপক আনোয়ারা সৈয়দ হক। এই অনুসন্ধান কমিটির সুপারিশ করা ১০ জনের মধ্য থেকেই রাষ্ট্রপতি একজনকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও চারজনকে নির্বাচন কমিশনার হিসেবে নিয়োগ দেবেন।

অনুসন্ধান কমিটির কাজ সম্পর্কে আইনের ৪(১) ধারায় বলা হয়েছে, এ কমিটি স্বচ্ছতা ও নিরপেক্ষতার নীতি অনুসরণ করে দায়িত্ব পালন করবে। আইনে বেঁধে দেয়া যোগ্যতা-অযোগ্যতা, অভিজ্ঞতা-দক্ষতা ও সুনাম বিবেচনা করে প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং নির্বাচন কমিশনার পদে নিয়োগের জন্য রাষ্ট্রপতির কাছে সুপারিশ করবে। এ অনুসন্ধান কমিটি প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও নির্বাচন কমিশনারদের প্রতি পদের জন্য দুজন করে ব্যক্তির নাম সুপারিশ করবে। কমিটি গঠনের ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে সুপারিশ রাষ্ট্রপতির কাছে জমা দিতে হবে। তবে আইনে ১৫ দিনের কথা বলা হলেও এবার পরিস্থিতির কারণেই ইসি গঠনে নাম প্রস্তাবের জন্য ১০ দিনও সময় পাচ্ছে না সার্চ কমিটি।

কারণ, আগামী ১৪ ফেব্রুয়ারি শেষ হচ্ছে বর্তমান নির্বাচন কমিশনের মেয়াদ। ওই দিনের মধ্যেই রাষ্ট্রপতিকে নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করতে হবে। সে কারণে এর আগেই রাষ্ট্রপতির কাছে ইসি গঠনে নাম প্রস্তাব করতে হবে অনুসন্ধান কমিটিকে।

সে হিসাবে অনুসন্ধান কমিটি যদি রাষ্ট্রপতির কাছে ইসি গঠনের জন্য উপযুক্ত ব্যক্তিদের নামের সুপারিশ ১৩ ফেব্রুয়ারিও জমা দিতে চায়, তাহলেও মোট ৯ দিন সময় পাবে কমিটি। এর আগেও দুই মেয়াদে অনুসন্ধান কমিটি গঠন করে তাদের সুপারিশের ভিত্তিতেই নির্বাচন কমিশন গঠন করেছেন রাষ্ট্রপতি। ওই সময় অনুসন্ধান কমিটিকে এক সপ্তাহেও কাজ শেষ করতে দেখা গেছে।

নির্বাচন বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছে, ১৪ ফেব্রুয়ারি বর্তমান নির্বাচন কমিশনের মেয়াদ শেষ হলেও তার কিছুদিন পর নতুন কমিশন নিয়োগ দিলেও তাতে আইনের কোনো ব্যত্যয় হবে না। এর আগেও নির্বাচন কমিশনের মেয়াদ শেষ হওয়ার কিছুদিন পর নতুন কমিশনের দায়িত্ব নেয়ার রেওয়াজ আছে।

গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা ও এর বিকাশে সুষ্ঠু এবং অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের বিকল্প নেই। সে নির্বাচন জাতীয় বা স্থানীয় যে পর্যায়েই অনুষ্ঠিত হোক। স্বাধীনতার পঞ্চাশ বছরে অনুষ্ঠিত ১১টি জাতীয় নির্বাচনের মধ্যে হাতেগোনা কয়েকটি জাতীয় নির্বাচন ছাড়া অনুষ্ঠিত বেশিরভাগ নির্বাচনই সুষ্ঠু ছিল না।

নির্বাচনে দলীয় সরকারগুলোর হস্তক্ষেপ রোধে ইসির ব্যর্থতা এবং সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন পরিচালনায় তাদের দৃঢ়তার অভাব ছিল এর মূল কারণ। এ কারণে এবারের আইনটি সব দিক বিবেচনা করেই করা হয়েছে। আইনটি বিশ্লেষণ করলে নিশ্চিত হওয়া যায় যে, অল্প সময়ের মধ্যে করলেও তা করা হয়েছে নানাদিক বিচার বিশ্লেষণ করে। তাই প্রত্যাশা থাকবে, এবারের অনুসন্ধান কমিটি এমন ব্যক্তিদের সিইসি এবং অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার পদে নিয়োগের সুপারিশ করুক, যাদের দ্বারা গঠিত কমিশন অতীতের গ্লানি মুছে ফেলে জাতিকে সুষ্ঠু নির্বাচন উপহার দিয়ে গণতন্ত্রের উন্নয়নে মূল্যবান ভূমিকা রাখবে।

এইদিকে, নতুন নির্বাচন কমিশন (ইসি) গঠনের দায়িত্ব পালনে অনুসন্ধান কমিটিকে আইন অনুযায়ী স্বচ্ছতা ও নিরপেক্ষতাকে সর্বোচ্চ প্রাধান্য দেয়ার আহ্বান জানিয়েছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। অনুসন্ধান কমিটি গঠনের প্রজ্ঞাপন জারির পর এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সংস্থাটি এই আহ্বান জানায়।

সংস্থাটি আরও বলেছে, একটি নিরপেক্ষ, গ্রহণযোগ্য ও দক্ষ নির্বাচন কমিশন গঠনের পেছনে যে সাংবিধানিক চেতনা অন্তর্নিহিত এবং এটিকে নিয়ে জনগণের যে প্রত্যাশা, তা পূরণে কোনোরকম ব্যত্যয় হওয়ার সুযোগ নেই। অন্যদিকে, নতুন নির্বাচন কমিশন (ইসি) গঠনের লক্ষ্যে গঠিত অনুসন্ধান কমিটির সবাই ‘ভালো লোক’ বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় পার্টির (জাপা) চেয়ারম্যান ও সংসদে বিরোধীদলীয় উপনেতা জি এম কাদের। তবে তিনি বলেন, এখন অনুসন্ধান কমিটি নির্বাচন কমিশন গঠনে কাদের নাম প্রস্তাব করবে, সেটি দেখার অপেক্ষায় রয়েছে দেশবাসী।

২০১২ এবং ২০১৭ সালে গঠিত দুটি অনুসন্ধান কমিটি নিয়ে অভিজ্ঞতার আলোকে অনেকেই বলছেন, অনুসন্ধান কমিটিতে সাধারণত সরকারের পছন্দসই ব্যক্তিদেরই সিইসি ও কমিশনার পদে নিয়োগ দেয়ার প্রস্তাব ওঠে। বর্তমান ও তার অব্যবহিত পূর্বের নির্বাচন কমিশন গঠনে অনুসন্ধান কমিটি তা-ই করেছে।

এবারও যে এ অবস্থার পুনরাবৃত্তি হবে না তার নিশ্চয়তা কোথায়? এর নিশ্চয়তা আছে। অনুসন্ধান কমিটিকে তার দায়িত্ব ও কার্যাবলি সম্পাদনের জন্য আইনের ৩(২) ধারায় সভার কার্যপদ্ধতি নির্ধারণের ক্ষমতা দেয়া হয়েছে। এই স্বাধীনতা ও ক্ষমতাকে কাজে লাগিয়ে অনুসন্ধান কমিটি আইনের কাঠামোর ভেতরে থেকেই স্বচ্ছ ও নাগরিক সমাজের অংশগ্রহণমূলক পন্থা অনুসরণের জন্য সৃজনশীল হতে পারে চাইলে। পাশাপাশি তারা সম্ভাব্য ব্যক্তিবর্গের যোগ্যতা যাচাইয়ে জনগণের মতামত ও অবস্থান জানার কৌশলও কাজে লাগাতে পারে।

মানে আইনটি এমনভাবে প্রণয়ন করা হয়েছে যে, স্বচ্ছতা ও নিরপেক্ষতার সঙ্গে সত্যিকারের অনুসন্ধানের মাধ্যমে যোগ্য, অভিজ্ঞ, সৎ ও সুনামসম্পন্ন ব্যক্তিদের নির্বাচন কমিশনে নিয়োগ দেয়ার জন্য সুপারিশ করা সম্ভব। তাছাড়া প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনারের নাম প্রস্তাবে আইন ও সংবিধান অনুসারে দায়িত্ব পালন করার প্রত্যয় জানিয়েছেন অনুসন্ধান কমিটির প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান। অনুসন্ধান কমিটির সুপারিশে যে নতুন নির্বাচন কমিশন গঠিত হবে, তা নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য হবে বলেও আশা করেন তিনি।

বলা হয়ে থাকে, সন্দেহ দূর করার সেরা উপায় হচ্ছে স্বচ্ছতা। আমরা আশা করি, অনুসন্ধান কমিটি স্বচ্ছতা অনুসরণের মাধ্যমে সব বিতর্কের অবসান ঘটিয়ে একটি গ্রহণযোগ্য কমিশন গঠনে তার ঐতিহাসিক দায়িত্ব পালনে সক্ষম হবে। যার মাধ্যমে বহুল আলোচিত এই আইনটিতে সম্ভাব্য অন্যান্য পদ্ধতির তুলনায় যে অধিকতর নিরপেক্ষতা এবং স্বচ্ছতার নিশ্চয়তা রয়েছে সেটাও প্রমাণ হবে।

লেখক : মর্তুজা হাসান সৈকত, প্রাবন্ধিক ও কলাম লেখক।
mortuza.hasan.shaikat@gmail.com


সর্বশেষ - রাজনীতি

নির্বাচিত

একই নিয়মে নিয়োগ ও পদোন্নতি দিতে বিধিমালা প্রণয়ন

নিত্যপণ্যের সরবরাহ বাড়াতে এলসি-ডলার প্রবাহ বৃদ্ধির তাগিদ

ইনডেমনিটি আইন : বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার বিচার নিয়ে যত টালবাহানা

এক দিনে রেকর্ডসংখ্যক বাংলাদেশি কর্মী গেলেন দক্ষিণ কোরিয়ায়

দেশে ফিরেছেন সেনাপ্রধান জেনারেল এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ

স্বল্পোন্নত থেকে টেকসই উত্তরণে বাংলাদেশকে সহায়তা দেবে ইইউ

বাংলাদেশে হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে শাখা খুলবে ভারতের ডিসান হাসপাতাল

খাসির মাংসের কোরমা তৈরি করবেন যেভাবে!

মৃত্যুর আগে বাবা বলেছেন- ‘এটি চেক নয়; স্বয়ং বঙ্গবন্ধু’

কর্ণফুলীর তীর ঘেঁষে গড়ে উঠবে আবাসন, বাণিজ্য ও পর্যটন শিল্প