1. অন্যরকম
  2. অপরাধ বার্তা
  3. অভিমত
  4. আন্তর্জাতিক সংবাদ
  5. ইতিহাস
  6. এডিটরস' পিক
  7. খেলাধুলা
  8. জাতীয় সংবাদ
  9. টেকসই উন্নয়ন
  10. তথ্য প্রযুক্তি
  11. নির্বাচন বার্তা
  12. প্রতিবেদন
  13. প্রবাস বার্তা
  14. ফিচার
  15. বাণিজ্য ও অর্থনীতি

মুজিবনগর অস্থায়ী সরকারের কর্মতৎপরতা

ইবার্তা সম্পাদনা পর্ষদ : ইবার্তা টুয়েন্টিফোর ডটকম
শুক্রবার, ১২ ফেব্রুয়ারি, ২০২১

বাংলাদেশের সরকার গঠনের খবরটি জাতির মনোবল বহুগুণে বাড়িয়ে দেয়। যুদ্ধরত বাংলাদেশের পরিপূর্ণ কর্তৃপক্ষ হিসেবে মুজিবনগর সরকার দায়িত্ব পালন করতে থাকে । পশ্চিমবঙ্গ, ত্রিপুরা, আসাম ও মেঘালয়ের শরণার্থী ক্যাম্প, মুক্তিযোদ্ধাদের প্রশিক্ষণ শিবির থেকে শুরু করে অবরুদ্ধ স্বদেশের সকল শ্রেণির মানুষের মধ্যে আনন্দের বন্যা বয়ে যায়। আওয়ামী লীগের নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি এবং সীমান্ত অতিক্রমকারী নেতৃবৃন্দ ভারত সীমান্তের রিফিউজি ও ইয়থ ক্যাম্পগুলো তদারক করতে থাকেন। তারা নিজ নিজ এলাকায় মুক্তিবাহিনীর সশস্ত্র ইউনিটগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করেন এবং সমন্বিতভাবে কাজ শুরু করেন।
সরকার গঠনের পর থেকেই প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীনের মন্ত্রিসভা যুদ্ধ পরিচালনার দিকে নজর দেন। ভারত সরকার ইতিমধ্যে কলকাতার ৮ থিয়েটার রোডে (বর্তমান শেক্সপিয়র সরণি) বাংলাদেশ সরকারের জন্য একটি বাড়ি বরাদ্দ করে। বাড়িটি ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বিএসএফের আঞ্চলিক অফিস হিসেবে আগে ব্যবহৃত হয়েছে। এদিকে মুজিবনগর সরকার ও আওয়ামী লীগের মুখপাত্র হিসেবে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র ও সাপ্তাহিক জয়বাংলা পত্রিকা কলকাতা থেকে পূর্ণ উদ্যমে কাজ শুরু করে। একই সঙ্গে ‘আকাশবাণী কলকাতা কেন্দ্র ব্যাপক ভূমিকা রাখতে থাকে। ভারতের কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকার এবং দেশের সকল পত্রপত্রিকা পরিপূর্ণভাবে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধকে সমর্থন দান করে।
বাংলাদেশের শরণার্থী সমস্যা ভারতের সেদিনকার দুর্বল অর্থনীতি ও সামাজিক কাঠামোর ওপর বড় ধরনের চাপ সৃষ্টি করে। এরপরও শরণার্থীদের দেখাশোনার সর্বাত্মক দায়িত্ব নেয় দেশের কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকার। সাধারণ মানুষ ও সকল রাজনৈতিক দল এগিয়ে আসে রিফিউজিদের সাহায্য করতে। বিদেশ থেকে ত্রাণ সামগ্রী আসতে শুরু করে সীমিতভাবে। ভারতীয় অঞ্চলগুলোতে শরণার্থীদের দেখাশোনার জন্য জনপ্রতিনিধিদের মধ্যে দায়িত্ব অর্পণ করে মুজিবনগর সরকার। এসব জনপ্রতিনিধিরা রিফিউজি ক্যাম্প এবং ‘ইয়থ ক্যাম্পগুলো দেখাশোনা করতে থাকেন। সরকার যুদ্ধরত সশস্ত্র বিচ্ছিন্ন ইউনিটগুলোকে সুসংহত করে সেগুলোকে একটি কেন্দ্রীয় কমান্ডের অধীনে আনতেও বিশেষ ভাবে মনোযোগী হয়। এ পর্যায়ে অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম, প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদ, অর্থমন্ত্রী ক্যাপ্টেন এম. মনসুর আলী, স্বরাষ্ট্র ও ত্রাণমন্ত্রী এএইচএম কামরুজ্জামান এবং প্রধান সেনাপতি অবসরপ্রাপ্ত কর্নেল আতাউল গনি ওসমানী (পরে জেনারেল) বিভিন্ন রণাঙ্গন পরিদর্শনে যেতে থাকেন।
এদিকে আব্দুল মান্নান এমএনএ-এর নেতত্বে সরকারের তথ্য, বেতার ও ফিল্ম বিভাগ পুরোদমে কাজ শুরু করে। দেশত্যাগী সাংবাদিক, লেখক, চলচ্চিত্রকার, অভিনেতা ও শিল্পী-কলাকুশলীরা বেশির ভাগই তখন কলকাতা কিংবা আগরতলায়। এরা মুক্তিযুদ্ধের প্রচার কর্মকাণ্ডে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে থাকেন। স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র’ ও জয়বাংলা’ পত্রিকাকে তাঁরা স্বল্পদিনেই কার্যকর প্রচার মাধ্যমে পরিণত করেন। বিশ্বজনমত গঠনে সরকারের প্রচার বিভাগ গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে।
মুজিবনগর সরকারের অনুরোধে মে মাসের প্রথম দিক থেকে ভারত সরকার মুক্তিবাহিনীর প্রশিক্ষণ ও তাদের অস্ত্র-গোলাবারুদ সরবরাহের দিকে মনোযোগী হয়। সীমান্ত সংলগ্ন বিভিন্ন ভারতীয় অঞ্চলে মুক্তিবাহিনীর ক্যাম্প গড়ে উঠতে থাকে। শুরু হয় দেশত্যাগী তরুণদের ব্যাপক প্রশিক্ষণ কার্যক্রম | ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বিএসএফ সীমান্ত ব্যবস্থাপনা ও মুক্তিবাহিনীর প্রশিক্ষণে যুক্ত হয়। বেঙ্গল রেজিমেন্ট, ইস্ট পাকিস্তান রাইফেলস্ ও বাঙালি পুলিশের সদস্যগণ- যারা পাকিস্তানের পক্ষ ত্যাগ করে ভারতে আশ্রয় নিয়েছিলেন তারাও যুব তারুণ্যকে অস্ত্র প্রশিক্ষণ দেন। মাত্র কয়েক সপ্তাহের প্রশিক্ষণের পর এইসব তরুণেরা দলে দলে পাকিস্তান হানাদার বাহিনীর অবস্থানগুলোর ওপর আক্রমণ পরিচালনা করতে থাকে।
 
সূত্রঃ বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে ভারত, তথ্য ও দলিল (পশ্চিমবঙ্গ) https://www.facebook.com/historyofbd/photos/a.117206563537752/160930439165364/
গ্রন্থনা ও সম্পাদনাঃ হারুন হাবিব


সর্বশেষ - রাজনীতি