1. অন্যরকম
  2. অপরাধ বার্তা
  3. অভিমত
  4. আন্তর্জাতিক সংবাদ
  5. ইতিহাস
  6. এডিটরস' পিক
  7. খেলাধুলা
  8. জাতীয় সংবাদ
  9. টেকসই উন্নয়ন
  10. তথ্য প্রযুক্তি
  11. নির্বাচন বার্তা
  12. প্রতিবেদন
  13. প্রবাস বার্তা
  14. ফিচার
  15. বাণিজ্য ও অর্থনীতি

এক বছরে র‍্যাবের অভিযানে ১২০ জঙ্গি গ্রেফতার, আত্মসমর্পণ ৯ জন

নিউজ এডিটর : ইবার্তা টুয়েন্টিফোর ডটকম
বুধবার, ১০ জানুয়ারি, ২০২৪

গেল বছরেও (২০২৩ সালে) জঙ্গি দমনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখার কথা জানিয়েছে এলিট ফোর্স র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)। ২০২৩ সালে দেশের বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণ দেশি/বিদেশি অস্ত্র, গোলাবারুদ ও লিফলেট উদ্ধারসহ ১২০ জন জঙ্গি সদস্যকে গ্রেফতারের কথা জানায় তারা। একই সঙ্গে গেল বছরে জঙ্গি আত্মসমর্পণে বিশেষ উদ্যোগ র‌্যাব ডি-রেডিক্যালাইজেশন ও রিহ্যাবিলিটেশন কর্মপরিকল্পনা নেওয়া হয়। এতে ৯ জঙ্গি সদস্য র‌্যাবের কাছে ‘আত্মসমর্পণ’ করেছে।

র‌্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন মঙ্গলবার (৯ জানুয়ারি) রাতে এসব তথ্য জানান।

তিনি বলেন, ম্যানডেটের আলোকে প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে র‌্যাব জঙ্গিবাদবিরোধী অভিযান পরিচালনা করে আসছে। শুধুমাত্র অভিযান নয়; জঙ্গিবাদবিরোধী জনমত গড়তে ও জনসম্পৃক্ততা অর্জনে র‌্যাব ব্যাপক প্রচার-প্রচারণা করেছে। অন্যদিকে আভিযানিক প্রক্রিয়ায় গ্রেফতারের পাশাপাশি জঙ্গিদের অর্থের উৎস এবং অস্ত্র ও বিস্ফোরক প্রাপ্তি বন্ধ করতেও র‌্যাবের কার্যক্রম চলমান রয়েছে।

এছাড়া ২০২৩ সালে র‌্যাব জঙ্গি আত্মসমর্পণে বিশেষ উদ্যোগ র‌্যাব ডি-রেডিক্যালাইজেশন ও রিহ্যাবিলিটেশন কর্মপরিকল্পনা নিয়ে কাজ করেছে বলে জানিয়েছেন তিনি।

কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, জঙ্গি দমনে বাংলাদেশ আজ বিশ্বের বুকে রোল মডেল। জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রীর জিরো টলারেন্স নীতির আলোকে র‌্যাব জঙ্গিবিরোধী কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে। র‌্যাব প্রতিষ্ঠা থেকে এ পর্যন্ত ২ হাজার ৯৯৯ জন বিভিন্ন জঙ্গি সংগঠনের সদস্যদের গ্রেফতার করেছে র‌্যাব। এর মধ্যে ১ হাজার ৪৩৯ জন জেএমবি সদস্য। এরই ধারাবাহিকতায় ২০২৩ সালে র‌্যাবের অভিযানে ১২০ জন বিভিন্ন জঙ্গি সংগঠনের সদস্যদের গ্রেফতার করেছে র‌্যাব।

জঙ্গিদের বিরুদ্ধে র‌্যাবের নজরদারি ও জোড়ালো অভিযান অব্যাহত থাকবে বলেও জানান কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।

২০২৩ সালে র‌্যাবের উল্লেখ্যযোগ্য অভিযান

২০২৩ সালের ২৩ জানুয়ারি জঙ্গি সংগঠন ‘জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়া’র শুরা সদস্য ও সামরিক শাখার প্রধান শাখার প্রধান মাসুকুর রহমান ওরফে রনবীর ওরফে মাসুদ এবং আইইডি বা বোমা বিশেষজ্ঞ মো. আবুল বাশার মৃধা ওরফে আলমকে দেশি ও বিদেশি অস্ত্র ও গোলাবারুদসহ কক্সবাজারের কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্প সংলগ্ন এলাকা থেকে গ্রেফতার করে র‌্যাব।

গত বছরের ১২ মার্চ রাতে বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন ‘কেএনএফ’ এর ছত্রছায়ায় নতুন জঙ্গি সংগঠন ‘জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়া’র পার্বত্য অঞ্চলের প্রশিক্ষণ কমান্ডার দিদার হোসেন ওরফে চম্পাইসহ ৯ জনকে বান্দরবানের টংকাবতী এলাকা থেকে গ্রেফতার করে র‌্যাব। অভিযানে বিপুল পরিমাণে অস্ত্র ও গোলাবারুদ উদ্ধার করা হয়।

২০২৩ সালের ২৩ জুলাই রাতে নতুন জঙ্গি সংগঠন জামাতুল আনসার ফীল হিন্দাল শারক্বীয়ার আমির মো. আনিসুর রহমান ওরফে মাহমুদসহ ৩ সদস্যকে দেশি-বিদেশি আগ্নেয়াস্ত্র, বোমা তৈরির সরঞ্জাম ও নগদ অর্থসহ মুন্সিগঞ্জের লৌহজং এলাকা থেকে গ্রেফতার করে র‌্যাব।

২০২৩ সালের ৩০ আগস্ট রাতে নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন ‘আনসার আল ইসলাম’র খুলনা, বাগেরহাট ও গোপালগঞ্জ অঞ্চলের দাওয়াতী শাখার দায়িত্বপ্রাপ্ত ৫ সদস্যকে বাগেরহাট থেকে গ্রেফতার করে র‌্যাব।

গত বছরের ১৪ সেপ্টেম্বর রাতে রাষ্ট্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা ডিজিএফআইয়ের তথ্যের ভিত্তিতে র‌্যাব সদর দপ্তরের গোয়েন্দা শাখা ও র‌্যাব-১৩ এর আভিযানিক দল ঠাকুরগাঁও সদর এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে আনসার আল ইসলামের উত্তরাঞ্চলের দাওয়াতী শাখার দায়িত্বশীল মো. মুনতাসির বিল্লাহসহ (৩৬) ৪ জনকে গ্রেফতার করা হয়।

গেল বছরের ২৫ সেপ্টেম্বর রাতে গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে র‌্যাব-১ ও ডিজিএফআই এর যৌথ অভিযানে রাজধানীর উত্তরা, বনানী, বনশ্রী ও যাত্রাবাড়ি এলাকা থেকে নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গী সংগঠন ‘আনসার আল ইসলাম’র ঢাকা অঞ্চলের দাওয়াতী শাখার দায়িত্বপ্রাপ্ত মেজবাহ উদ্দিন চৌধুরী ওরফে আবু মাসরুরসহ ৬ জনকে গ্রেফতার করা হয়। উদ্ধার করা হয় ২টি ল্যাপটপ, ৬টি মোবাইলফোন, উগ্রবাদে সহায়ক পুস্তিকা ও সাংগঠনিক কার্যক্রম সংক্রান্ত ডায়রি ও নোট বই।

২৫ অক্টোবর রাতে র‌্যাব সদর দপ্তরের গোয়েন্দা শাখা ও র‌্যাব-৬ এর একটি আভিযানিক দল গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ঝিনাইদহ সদর এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে নাশকতার পরিকল্পনাকালে নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন ‘আনসার আল ইসলাম’ এর উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের দাওয়াতি শাখার দায়িত্বপ্রাপ্ত মো. ইয়াকুব হোসাইন ওরফে ইয়াকুব হুজুর (২১)সহ ৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়। উদ্ধার করা হয় বিভিন্ন উগ্রবাদী পুস্তিকা, গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্র, চাঁদা আদায়ের প্রমাণপত্র এবং মোবাইল ফোন ও সিম কার্ড।

২০২৩ সালের শেষের দিকে ১০ ডিসেম্বর রাতে রাষ্ট্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা ডিজিএফআইয়ের তথ্যের ভিত্তিতে র‌্যাব-১ এর একটি আভিযানিক দল নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন ‘আনসার আল ইসলাম’র রাজধানীর আশুলিয়া, সাভার, মানিকগঞ্জ, গাজীপুর ও ময়মনসিংহ অঞ্চলের প্রধান সমন্বয়কারী ও প্রশিক্ষণ শাখার প্রধান আব্দুর রাজ্জাক ওরফে ইসহাক ওরফে সাইবাসহ ৬ জনকে গ্রেফতার করা হয়।

বিপথগামীদের স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনতে র‌্যাবের কার্যক্রম

স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনতে জঙ্গিদের আত্মসমর্পণ ও পুনর্বাসন কর্যক্রম শুরু করে র‌্যাব। মূলত তখন থেকেই শুরু হয় বিপথগামী জঙ্গি সদস্যদের স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনতে র‌্যাবের তৎপরতা। র‌্যাব ডি-রেডিকেলাইজেশন ও রি-হ্যাবিলিটেশন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বিপথগামী জঙ্গিদের সমাজের মূল শ্রোত ধারায় ফিরিয়ে আনছে।

র‌্যাবের আহ্বানে সাড়া দিয়ে এখন পর্যন্ত ঢাকা, বগুড়া, রংপুর, কুষ্টিয়াসহ বিভিন্ন স্থানে আত্মসমর্পণের মাধ্যমে ৩১ জন বিপথগামী তরুণ-তরুণী জঙ্গিবাদ ছেড়ে সুস্থ ও স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসে। ২০২৩ সালের ২ জানুয়ারি ২০২৩ নব দিগন্তের পথে অনুষ্ঠানে মহাপরিচালক, র‌্যাব ফোর্সেস এর কাছে নতুন জঙ্গি সংগঠন জামায়াতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়া’র ৯ জন জঙ্গি বিনাশর্তে আত্মসমর্পণ করে।

হলি আর্টিজান ঘটনা পরবর্তী সময়ে র‌্যাব জঙ্গিদের গুরুত্বপূর্ণ নেতাদের গ্রেফতারে সক্রিয় ছিল। জঙ্গি সংগঠনের আমিরসহ গুরুত্বপূর্ণ নেতাদের বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়ে সাফল্য অর্জন করে র‌্যাব। এছাড়া র‌্যাবের অভিযানে কেন্দ্রীয় দাওয়াতী শাখা প্রধান, সূরা ও শরিয়া বোর্ড সদস্য, মহিলা শাখার নেতৃবৃন্দ এবং বেশ কয়েক জন অতি গুরুত্বপূর্ণ আইটি বিশেষজ্ঞকে গ্রেফতারের মাধ্যমে জঙ্গি সংগঠনকে দুর্বল করে দেয় র‌্যাব।

এভাবে র‌্যাবের সময়োচিত পদক্ষেপ ও গোয়েন্দা নজরদারি, অঙ্কুরেই নস্যাৎ করে দেয় জঙ্গি হামলা এবং হামলার সকল পরিকল্পনা। হলি আর্টিজান পরবর্তীতে র‌্যাবের তৎপরতায় ১ হাজার ৮৬৯ জঙ্গি সদস্য গ্রেফতার হয়। তার মধ্যে ৮৭৩ জন জেএমবি সদস্য ছিল।


সর্বশেষ - রাজনীতি