মানুষ সর্বোচ্চ কতটুকু খেতে পারে, কয়টা জামা পরতে পারে, কয়টা ঘরে থাকতে পারে- এসব ভেবে একসময় মনে হতো সাফল্য ও সচ্ছলতার পেছনে দৌড়ানো বুঝি অর্থহীন। কিন্তু মানুষ তো কেবল খাওয়া-পরা-থাকার জন্য নয়। আত্মিক শান্তি বড়ো বিষয়। সাফল্য এবং সচ্ছলতার মধ্যে একধরনের আরাম আছে। মানুষ সেই সাফল্য ও সচ্ছলতা অর্জনের জন্যই ক্রমাগত ছুটে চলে। এমন নয় যে এর পুরোটা সে ভোগ করতে পারবে, অর্জিত টাকা দিয়ে সারাদিন দামি হোটেলে খাবে, দামি ব্রান্ডের গাড়িতে চড়বে কিংবা দামি পরিধান ব্যবহার করবে। একজীবনে মানুষ খুব অল্পই ভোগ করতে পারে। তবুও সাফল্য ও সচ্ছলতার পিছে আমরা যে ছুটে চলি এর কারণ সফলতা ও সচ্ছলতা আপনার মনে অন্যরকম এক আরাম এনে দেয়। আমি পারি, আমার আছে, আমার হাত পাততে হয় না, আমি স্বনির্ভর, আমি ইচ্ছাকে পূর্ণতা দিতে পারি- হীনম্মন্যতাবোধ কাটিয়ে মনের মধ্যে এই বোধের উদ্ভব খাদ্য, পরিধান কিংবা আবাসের চেয়ে কম প্রশান্তির নয়।
নিজের সুখ পুরোপুরি বিসর্জন দিয়ে, উদয়াস্ত পরিশ্রম করে সন্তান, সন্তানের সন্তান, সন্তানের সন্তানের সন্তানের জন্য সম্পদ জমিয়ে জমিয়ে পাহাড় গড়ার কতটা প্রয়োজন? প্রজন্মের পর প্রজন্মকে সম্পদশালী করার দায়িত্ব আপনার কাঁধে কে দিলো? সন্তানের জন্য পাহাড়সম সম্পদ না গড়ে সন্তানকে সম্পদ হিসাবে তৈরি করা অধিকতর লাভজনক এবং টেকসই নয় কি?
সাফল্য ও সচ্ছলতার আরাম উপভোগের জন্য অত্যাবশকীয় হলো শারীরিক ও মানসিক সুস্থতা। সাফল্য ও সচ্ছলতা অর্জনের পরিকল্পনা করার পাশাপাশি অতীব গুরুত্বপূর্ণ হলো সুস্থতা লাভের জন্য পরিকল্পনা গ্রহণ করা। স্বাস্থ্য নিয়ে কতোটা সচেতন আমরা?
সুখের জন্য প্রয়োজন সুস্বাস্থ্য, সাফল্য, সচ্ছলতা ও সুসম্পর্ক। এর কোনোটির ব্যত্যয় হলে সুখ থেকে যাবে অধরা। সবার জীবন সুখের হোক- এই প্রত্যাশা আমার।
লেখক : এম আমির হোসেন – চিকিৎসক