পদ্মা সেতু, মেট্রোরেল, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র, দোহাজারী-ঘুমধুম রেল প্রকল্প, কর্ণফুলী টানেলসহ একের পর এক মেগা প্রকল্প উদ্বোধনের মাধ্যমে দেশের উন্নয়ন এখন অনেকটাই দৃশ্যমান। অবকাঠামো খাতের এসব মেগাপ্রকল্প যোগাযোগ ব্যবস্থার আমূল পরিবর্তন ঘটিয়েছে।
অর্থনীতিবিদরা বলছেন, দেশের যে উন্নয়ন হচ্ছে তা মেগা প্রকল্পগুলোর মাধ্যমে অনেকটাই দৃশ্যমান। পদ্মা সেতু, মেট্রোরেল, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের মতো মেগা প্রকল্পগুলো দেশের অবকাঠামো খাতের উন্নয়নের জন্য খুবই দরকার ছিল।
পদ্মা সেতু
দেশের অবকাঠামো খাতের বড় উন্নয়নের মধ্যে সবার ওপর পদ্মা সেতু। নানা চড়াই-উতরাই পেরিয়ে বাস্তবে রূপ নিয়েছে গর্বের এ সেতুটি। রাজধানীর সঙ্গে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার যোগাযোগ ব্যবস্থার আমূল পরিবর্তন ঘটিয়ে দেওয়া এ সেতুটি অর্থনীতিতেও বড় অবদান রাখছে। ২০১২ সালের জুনে বিশ্বব্যাংক তাদের ঋণ বাতিল করলে একই বছরের জুলাইয়ে বাংলাদেশ সরকার নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেয়। ২০১৪ সালের ১৭ জুন মূল সেতু নির্মাণ কাজের জন্য চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি লিমিটেডের সঙ্গে চুক্তি হয়। ২০১৫ সালের ১২ ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মুন্সিগঞ্জের মাওয়ায় বহুল প্রত্যাশিত পদ্মা সেতুর কাজ উদ্বোধন করেন। গত বছরের ২৫ জুন পদ্মা সেতু উদ্বোধন করেন শেখ হাসিনা।
আগে রাজধানী থেকে সড়কপথে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের যে জেলায় যেতে ৮-৯ ঘণ্টা সময় লাগতো, পদ্মা সেতু দিয়ে যান চলাচল চালুর পর সেখানে মাত্র ৪-৫ ঘণ্টায় চলে যাওয়া যাচ্ছে।
মেট্রোরেল
যোগাযোগ ব্যবস্থার আমূল পরিবর্তন ঘটিয়ে দেওয়া আরেক প্রকল্প মেট্রোরেল। যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ব্যুরো অব ইকোনমিক রিসার্চের হিসাবে বিশ্বের সবচেয়ে ধীরগতির শহর ঢাকা। মেট্রোরেলের কল্যাণে এই ধীরগতির শহরেই এখন খুব অল্প সময়ে কয়েকটি স্থানে যাতায়াত করা যাচ্ছে। মেট্রোরেলে উত্তরা থেকে মতিঝিলে আসতে সময় লাগছে মাত্র আধাঘণ্টা। রাজধানী ঢাকার বুকে মেট্রোরেল চলাচল করবে, একটা সময় বিষয়টি কল্পনাও করতে পারেনি দেশের বেশিরভাগ মানুষ।
মেট্রোরেল নিয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে মো. তারিকুল ইসলাম নামের একজন বলেন, ২০০৩ সাল থেকে ঢাকায় আছি। ঢাকায় মেট্রোরেল চলবে, তা কয়েক বছর আগেও কল্পনা করিনি। এখন সেই মেট্রোরেল বাস্তবে রূপ নিয়েছে। উত্তরা থেকে মাত্র আধাঘণ্টায় মতিঝিল আসা যায়। এটা আগে স্বপ্নেও ভাবিনি। পদ্মা সেতু, মেট্রোরেল, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের মাধ্যমে দেশের উন্নয়ন দৃশ্যমান। চেষ্টা করলে অনেক কিছুই করা যায়, তা এসব প্রকল্পের মাধ্যমে দৃশ্যমান হয়েছে। তবে মেট্রোরেল চলাচল আরও বাড়ানোর পদক্ষেপ নেওয়া উচিত।
রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র
২০১১ সালের নভেম্বরে রাশিয়ান ফেডারেশনের সঙ্গে বাংলাদেশ সরকারের স্বাক্ষরিত সহযোগিতা চুক্তি (আইজিএ) এবং প্রস্তুতিমূলক কাজের জন্য ২০১৩ সালের জানুয়ারিতে রাশিয়ান ফেডারেশনের সঙ্গে সরকারের স্বাক্ষরিত ৫০০ মিলিয়ন ডলারের ক্রেডিট চুক্তির ভিত্তিতে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ স্থাপন কেন্দ্র প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হচ্ছে। দুই পর্যায় মিলে ১ লাখ ১৮ হাজার ১৮০ কোটি ৮১ লাখ টাকা ব্যয়ে হবে। প্রকল্প সমাপ্ত করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ২০২৫ সালের ডিসেম্বরে। দুই ইউনিটের এ বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে ২ হাজার ৪শ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করা সম্ভব হবে।
দোহাজারী-ঘুমধুম রেল প্রকল্প