বাংলাদেশ থেকে ২০২১ সালে জাপানে ১০২ কোটি ৯১ লাখ ডলারের তৈরি পোশাক রপ্তানি করা হয়েছে। এক বছরের ব্যবধানে রপ্তানি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৩২ কোটি ৩৮ লাখ ডলার। এ সময় প্রবৃদ্ধি হয়েছে প্রায় ২৯ শতাংশ। তবে শুধু জুলাই থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত গত ছয় মাসের হিসাব ধরলে এই রপ্তানির পরিমাণ ৭৫ কোটি ৪৭ লাখ ডলার দাঁড়ায়। গত অর্থবছরের একই সময়ের হিসাবে প্রবৃদ্ধি হয়েছে সাড়ে ৪২ শতাংশের বেশি।
কয়েক মাস ধরে জাপানের বাজারে যে গতিতে রপ্তানি বেড়েছে তাতে আশায় বুক বাঁধছেন এ দেশের গার্মেন্ট উদ্যোক্তারা। ইউরোপ-আমেরিকার মতো গতানুগতিক বাজারের পাশাপাশি নতুন এই মার্কেটে নিজেদের ভবিষ্যৎ দেখছেন তাঁরা। তৈরি পোশাক মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএর প্রথম সহসভাপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম মনে করেন, ২০৩০ সাল নাগাদ একসময়ের অপ্রচলিত এই বাজারেই বর্তমানের ১০ গুণ তৈরি পোশাক রপ্তানি হবে।
ইন্টারন্যাশনাল ট্রেড সেন্টারের (আইটিসি) দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ২০২১ সালে জাপানের তৈরি পোশাকের বাজার ছিল ২৩.৮৩ বিলিয়ন ডলার। এর মধ্যে চীনের দখলে ছিল ৫৮.৩২ শতাংশ। এর পরের তিন দেশ যথাক্রমে ভিয়েতনাম (১৪.৪৯ শতাংশ), বাংলাদেশ (৪.৮৯ শতাংশ) ও কম্বোডিয়া (৪.৬৪ শতাংশ)।
বাংলাদেশে ইউনিক্লোর পণ্যের অন্যতম বৃহৎ সরবরাহকারী প্যাসিফিক জিন্স গ্রুপ। তারা ২০১০ সাল থেকে জাপানের সর্ববৃহৎ রিটেইলার জায়ান্টের সঙ্গে কাজ করছে। তবে এই গ্রুপ জাপানের বাজার আরো সম্প্রসারণের পরিকল্পনা নিয়েছে। এই পরিকল্পনার অংশ হিসেবে ৭ জানুয়ারি থেকে নিজেদের কর্মকর্তা ও কর্মীদের জাপানের ভাষা শেখানোর উদ্যোগ নিয়েছে। প্রথম ব্যাচে ১৬ জন সপ্তাহে দুই দিন করে ছয় মাস প্রশিক্ষণ নেবেন। নিজেদের কর্মীদের জাপানি ভাষা প্রশিক্ষণের গুরুত্ব তুলে ধরে প্যাসিফিক জিন্স গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ মোহাম্মদ তানভীর বলেন, ‘যদিও অনেক দিন ধরে আমরা জাপান মার্কেটে কাজ করছি; কিন্তু সম্ভাবনাময় বাজারটিতে ব্যবসার আরো প্রসার ঘটানোর সুযোগ রয়েছে। আমাদের যে কর্মীরা সরাসরি জাপানি বায়ারের সঙ্গে কাজ করবে তাদের এই প্রশিক্ষণের আওতায় আনব।’
চট্টগ্রাম চেম্বারের সহসভাপতির দায়িত্ব পালন করা সৈয়দ তানভীর বলেন, ‘জাপানিরা হুটহাট করে কোনো কাজ করে না। বাংলাদেশে যদি তাদের কাজের গতি বাড়ে, সেটা নিশ্চয়ই অনেক পর্যবেক্ষণ ও ভেবে-চিন্তে নেওয়া সিদ্ধান্ত। এ ক্ষেত্রে আমাদের দেশের কারখানাগুলোও এখন জাপানি বায়ারের কোয়ালিটি লেবেল মেইনটেন করার মতো যোগ্যতা অর্জন করেছে।’