নাটোরে জমিতে সৌরবিদ্যুতের মাধ্যমে সেচের ব্যবস্থা করেছে বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন (বিএডিসি)। এর মাধ্যমে বর্তমানে ৩০ বিঘা জমিতে সেচে খরচ পড়ছে তিন হাজার টাকা। আর প্রায় ১২ লাখ টাকার সৌরবিদ্যুতের সেচ পাম্প স্থাপনের জন্য কৃষকদের বিএডিসিকে পরিশোধ করতে হয় মাত্র ১০ হাজার টাকা। তবে আগে স্থানীয়দের দিয়ে প্রতি বছর সেচ দিতে খরচ পড়তো প্রায় এক লাখ টাকা বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।
বিএডিসি (সেচ) নাটোর রিজিওনের সহকারী পরিচালক নাসিম আহমেদ বলেন, নাটোরের বিভিন্ন ফলের বাগান ও সবজির জমি সৌর বিদ্যুতের সেচ পাম্পের আওতায় আনছেন তারা। ১২টি সৌর প্যানেলের মাধ্যমে তৈরি হচ্ছে ৬ দশমিক ৭ কিলোওয়াট বিদ্যুৎ। আর এই বিদ্যুৎ দিয়ে ১২০ ফিট মাটির নিচে স্থাপন করা ৩ দশমিক ৬ কিলোওয়াটের মোটর দিয়ে প্রতি সেকেন্ডে ৫ লিটার পানি উত্তোলন করা হয়। আর উত্তোলন করা পানি পাঠানো হয় বাগানে স্থাপিত পানির ট্যাংকিতে। এরপর ট্যাংকিতে জমানো পানি দিয়ে সেচ দেয়া হয়।
সদর উপজেলার আহমদপুর এলাকার কৃষক গোলাম মোস্তফা বলেন, সেচের জ্বালানির দাম বাড়ায় তার ৩০ বিঘা ফলের বাগানে বছরে ১২টি সেচ দিতে প্রায় এক লাখ টাকা খরচ হতো। এখন বছর শেষে বিএডিসিকে দিতে হয় মাত্র তিন হাজার টাকা।
সদর উপজেলার খোলাবাড়িয়া এলাকার কৃষক খাদেম বলেন, একটি সৌর বিদ্যুতের সেচ পাম্প থেকে প্রতিদিন ৪০ থেকে ৪৫ বিঘা ফলের বাগানে সেচ দেন তারা।
বিএডিসি (সেচ) নাটোর রিজিওনের নির্বাহী প্রকৌশলী সাজ্জাদ হোসেন বলেন, প্রতিটি সৌরবিদ্যুতের সেচ পাম্প স্থাপনে ১১ লাখ ৫০ হাজার টাকা খরচ হলেও এটি স্থাপনে কৃষকদের কাছ নেয়া হয় মাত্র ১০ হাজার টাকা। আর সমবায়ের মাধ্যমে কৃষকরা পাম্পটি পরিচালনা করেন।
তিনি আরও বলেন, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি তেলের সাশ্রয় করতে সেচের ক্ষেত্রে নবায়ন যোগ্য জ্বালানি ব্যাবহার শুরু করেছে বিএডিসি। পাশাপাশি সেচ খরচ কম হওয়ায় ২০২৪ সালের মধ্যে ১০০টি সৌরবিদ্যুতের সেচ পাম্প স্থাপন করবে বিএডিসি। আর এই সময়ে মধ্যে সৌরবিদ্যুতের সেচ পাম্প থেকে সাড়ে তিন হাজার বিঘার ফলের বাগান চাষ দেয়া হবে।
২০২২ সালে জেলায় ১৪ টি সৌরবিদ্যুতের সেচ পাম্প স্থাপন করা হয়েছে। আর চলতি বছর স্থাপন করা হবে ৫০টি। প্রতিটি সৌরবিদ্যুৎ সেচ পাম্প থেকে টানা ২০ বছর পানি উত্তোলন করা সম্ভব বলে জানায় বিএডিসি।