1. অন্যরকম
  2. অপরাধ বার্তা
  3. অভিমত
  4. আন্তর্জাতিক সংবাদ
  5. ইতিহাস
  6. এডিটরস' পিক
  7. খেলাধুলা
  8. জাতীয় সংবাদ
  9. টেকসই উন্নয়ন
  10. তথ্য প্রযুক্তি
  11. নির্বাচন বার্তা
  12. প্রতিবেদন
  13. প্রবাস বার্তা
  14. ফিচার
  15. বাণিজ্য ও অর্থনীতি

উন্নয়নশীল দেশের মধ্যে বাংলাদেশ এক উজ্জ্বল ব্যতিক্রম: বিশ্বব্যাংক

আবদুর রহিম হারমাছি : ইবার্তা টুয়েন্টিফোর ডটকম
বৃহস্পতিবার, ১৩ জানুয়ারি, ২০২২

বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতির আবার ভূয়সী প্রশংসা করেছে বিশ্ব আর্থিক খাতের মোড়ল সংস্থা বিশ্বব্যাংক। তাদের মতে, ‘উন্নয়নশীল দেশের মধ্যে বাংলাদেশ উজ্জ্বল ব্যতিক্রম হয়ে থাকবে।’

বিশ্বে করোনা সংক্রমণ ও আরও নানা কারণে ২০২২ ও ২০২৩ সালে সারা বিশ্বে প্রবৃদ্ধি কমবে বলে মনে করে সংস্থাটি। তবে বাংলাদেশ এর ব্যতিক্রম। এখানে প্রবৃদ্ধি বাড়ার পূর্বাভাস দিয়েছে বিশ্বব্যাংক।

মঙ্গলবার বিশ্বব্যাংকের সবশেষ ‘গ্লোবাল ইকোনমিক প্রসপেক্টাস’ বা ‘বৈশ্বিক অর্থনৈতিক সম্ভাবনা’ শীর্ষক প্রতিবেদন প্রকাশ হয়েছে। এতে বাংলাদেশ সম্পর্কে এই ইতিবাচক মূল্যায়ন করা হয়েছে।

গত এক যুগ ধরেই বাংলাদেশের উন্নয়নের প্রশংসা হচ্ছে বিশ্ব পরিমণ্ডলে। মুক্তিযুদ্ধের পর পশ্চিমা মূল্যায়ন ছিল এমন- বাংলাদেশ হবে বিশ্বের দারিদ্র্যের জাদুঘর। এই দেশে যদি উন্নয়ন সম্ভব হয়, তাহলে পৃথিবীর সব দেশেই উন্নয়ন সম্ভব।

তবে এই বাংলাদেশকে এখন বিশ্বের উদাহরণ হিসেবেই দেখাচ্ছে বিশ্বব্যাংকসহ অন্যান্য সংস্থা।

বাংলাদেশ সম্পর্কে নতুন এই মূল্যায়নের পেছনে রপ্তানি বাণিজ্যের পালে জোর হাওয়া, দেশীয় চাহিদা বৃদ্ধি, শ্রম আয় ও রেমিট্যান্স বৃদ্ধির বিষয়টি তুলে ধরা হয়েছে।

দাতা সংস্থাটি বলছে, করোনাভাইরাসের নতুন ধরন ওমিক্রনের বাড়বাড়ন্তের কারণে বিশ্ব অর্থনীতি হোঁচট খাচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মতো বড় দেশের চাহিদা কমে যাওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে উন্নয়নশীল দেশগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হবে। আর সাধারণ মানুষের জীবন আরও দুর্বিষহ করতে উচ্চ মূল্যস্ফীতি আরও অনেক দিন থাকবে।

তবে বাংলাদেশ ২০২১-২২ অর্থবছরের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ধরে রাখতে পারবে বলেই মনে করছে সংস্থাটি। তাদের আগের বছরের যে পূর্বাভাস ছিল, এবারও সেই ৬ দশমিক ৪ শতাংশ রেখেছে তারা।

অর্থনীতির বর্তমান গতিপ্রকৃতি বজায় থাকলে আগামী ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রবৃদ্ধির হার চলতি অর্থবছরের চেয়ে বেড়ে ৬ দশমিক ৯ হতে পারে বলে এ প্রতিবেদনে প্রাক্কলন করা হয়েছে।

অবশ্য বিশ্বব্যাংকের প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস সব সময় থাকে রক্ষণশীল। প্রতি বছর সরকার এর চেয়ে বেশি হারে প্রবৃদ্ধির কথা জানিয়ে থাকে। এমনকি অন্য দাতা সংস্থাগুলোও বিশ্বব্যাংকের চেয়ে বেশি প্রবৃদ্ধির হিসাব দিয়ে থাকে।

গত বছরের ৭ অক্টোবর প্রকাশিত আগের ষান্মাষিক প্রতিবেদনেও চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরে জিডিপি ৬ দশমিক ৪ শতাংশ বাড়তে পারে বলে প্রাক্কলনের তথ্য দিয়েছিল আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সহযোগী এই সংস্থাটি।

সরকার চলতি বছরে ৭ দশমিক ২ শতাংশ প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে।

মহামারির বিপর্যয় থেকে ঘুরে দাঁড়িয়ে চলতি অর্থবছরের বাজেটের লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ীই বাড়বে অর্থনীতির আকার বলে আশার কথা জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তাফা কামাল। গত ২০ ডিসেম্বর তিনি এসব উন্নয়ন সহযোগী সংস্থাকে ‘রক্ষণশীল’ বলে মূল্যায়ন করেন।

বিশ্বব্যাংকের চেয়ে একটু বাড়িয়ে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) চলতি অর্থবছরে ৬ দশমিক ৮ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হবে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে।

অপর দিকে আন্তর্জাতিক ঋণদাতা সংস্থা আইএমএফ বলছে, সংক্রমণের হার কমে আসায় এবং সরকারের অনুকূল নীতিসহায়তা অব্যাহত থাকায় চলতি অর্থবছরে এ হার হবে ৬ দশমিক ৬ শতাংশ।

সংস্থাটি গত ১৯ ডিসেম্বর এক প্রতিবেদনে বাংলাদেশের অর্থনীতি প্রতিবেশী দেশগুলোর তুলনায় দ্রুত ঘুরে দাঁড়ানোর কথা জানায়।

মঙ্গলবার বিশ্বব্যাংকের জুন পর্যন্ত প্রাক্কলনে বাংলাদেশের অর্থনীতির বিষয়ে বলা হয়েছে, ব্যক্তিগত ব্যয় ও ভোগ বাড়ার পাশাপাশি সেবা খাতের কার্যক্রম বৃদ্ধি এবং তৈরি পোশাকের ওপর ভর করে শক্তিশালী রপ্তানি আয় অর্থনীতিকে গতিশীল রেখেছে; যা প্রবৃদ্ধির মূল চালিকাশক্তি।

এ সময়ে অভ্যন্তরীণ চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় এবং জ্বালানির দাম বেড়ে যাওয়ায় বাংলাদেশ রেকর্ড পরিমাণ বাণিজ্য ভারসাম্যের মুখোমুখি হয়েছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।

বাংলাদেশের পূর্বাভাস অপরিবর্তিত থাকলেও দক্ষিণ এশিয়ায় ২০২১ সালে প্রবৃদ্ধি বাড়ার প্রাক্কলন করেছে বিশ্বব্যাংক।

তবে নতুন করে কোভিডের বিস্তারে বিশ্ব অর্থনীতিতে ধীর গতি দেখা দিতে পারে বলে আভাস দিয়েছে সংস্থাটি।

মহামারি থেকে ঘুরে দাঁড়িয়ে ২০২১ সালে ৫ দশমিক ৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হলেও ভাইরাসের নতুন সংক্রমণে তা ২০২২ সালে ৪ দশমিক ১ শতাংশে নেমে যেতে পারে বলে প্রতিবেদনে আভাস দেয়া হয়েছে।

বাংলাদেশের মাথাপিছু আয় বৃদ্ধির হার ২০২১-২৩ সময়ে অনেকটাই কমে আসবে বলে পূর্বাভাস দেয়া হয়েছে প্রতিবেদনে। ২০১০-১৯ সালে দেশের মানুষের মাথাপিছু আয় বৃদ্ধির হার ছিল ৪ শতাংশ, কিন্তু ২০২১-২৩ সালে তা কমে ২ শতাংশের নিচে নেমে আসবে।

পোশাক রপ্তানিতে নতুন মাইলফলক

বিশ্বের সবচেয়ে বড় অর্থনীতির দেশ যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে পোশাক রপ্তানিতে নতুন ইতিহাস গড়েছে বাংলাদেশ।

প্রথমবারের মতো দেশটিতে এক বছরে তৈরি পোশাক রপ্তানি করে ৬০০ কোটি (৬ বিলিয়ন) ডলারের বেশি আয় করেছেন বাংলাদেশের উদ্যোক্তারা। বিদায়ী ২০২১ সালের প্রথম ১১ মাসে (জানুয়ারি-নভেম্বর) ৬৩৬ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক রপ্তানি হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রে। বর্তমান বিনিময় হার (প্রতি ডলার ৮৬ টাকা) হিসাবে টাকার অঙ্কে এই অর্থের পরিমাণ প্রায় ৫৪ হাজার ৬৯৬ কোটি টাকা।

করোনা মহামারির মধ্যেও গত বছরের পুরোটা সময় ধরে পোশাক রপ্তানিতে রমরমা অবস্থা ছিল বাংলাদেশের। একের পর এক রেকর্ড হয়েছে। এমন ভালো বছর আর কখনোই পার করেনি বাংলাদেশের তৈরি পোশাকশিল্প উদ্যোক্তারা।

বিদায়ী বছরের এক মাসের হিসাব এখনও পাওয়া যায়নি। তবে, ১১ মাসের তথ্য বিশ্লেষণ করে এটা নিশ্চিত করে বলা যায় যে ২০২১ সালে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে তৈরি পোশাক রপ্তানি ৭০০ কোটি ডলার (৭ বিলিয়ন) ছাড়িয়ে যাবে।

রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) তথ্যে দেখা যায়, চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে (জুলাই-ডিসেম্বর) প্রায় ২০ বিলয়ন ডলারের পোশাক রপ্তানি করেছে বাংলাদেশ। যা গত অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে ২৮ দশমিক ০২ শতাংশ বেশি। সবশেষ ডিসেম্বর মাসে ৪ দশমিক ০৪ বিলিয়ন ডলারের পোশাক রপ্তানি হয়েছে। প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৫২ দশমিক ৫৭ শতাংশ।

লেখক : আবদুর রহিম হারমাছি – লেখক ও সাংবাদিক।


সর্বশেষ - রাজনীতি