সাহাদাত হোসেন পরশ: পেঁয়াজ ছাড়া ব্যঞ্জন- ভাবাই যায় না। তাই পেঁয়াজের দাম বাড়লে গণমাধ্যমে হৈচৈ পড়ে যায়। গত বছরের মাঝামাঝি থেকে এখন পর্যন্ত পেঁয়াজ কতবার যে সংবাদ শিরোনাম হয়েছে, তা তাৎক্ষণিকভাবে বলা মুশকিল। এ মোটেই বাড়াবাড়ি নয়। পেঁয়াজের দাম এখন কিঞ্চিৎ কমেছে। পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের ইকোনমিক ক্রাইম ইউনিট পেঁয়াজের দাম বৃদ্ধির কারণ অনুসন্ধান করেছে। তাদের পর্যবেক্ষণ প্রতিবেদনে উঠে এসেছে- বিশ্ববাজারে দাম বৃদ্ধি ও দেশীয় জোগান কম থাকায় নয়, কারসাজি করেই পেঁয়াজের দাম বাড়ানো হয়েছে। কখনও কখনও আমদানি মূল্যের দ্বিগুণ দামে ভোক্তারা পেঁয়াজ কিনতে বাধ্য হয়েছেন। কৃত্রিম সংকট তৈরি করতে পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী একশ্রেণির ব্যবসায়ী পেঁয়াজের অস্বাভাবিক মজুদও গড়ে তোলেন। মাঝখানে কয়েকটি স্তরে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন অসাধু ব্যবসায়ীরা। সিআইডির একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র এসব তথ্য জানায়।
বাণিজ্য সচিব শুভাশীষ বসুবলেন, পুলিশের ওই প্রতিবেদন পাওয়ার পর তা পর্যালোচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। অনেক সময় অতি মুনাফার লোভে বাড়ানো হয়েছে দাম।
এ ব্যাপারে সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার মোল্যা নজরুল ইসলাম বলেন, হঠাৎ করে পেঁয়াজের দাম বাড়ার কারণ অনুসন্ধান করে সিআইডি বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পেয়েছে। দেশের চারটি বন্দরের মাধ্যমে পেঁয়াজ আমদানির রেকর্ড ও দাম পর্যালোচনা করা হয়েছে। কেন আমদানি মূল্যের সঙ্গে খুচরা বাজারে দামের বিশাল ফারাক- এ ব্যাপারে যৌক্তিক কোনো ব্যাখ্যা দিতে পারেননি ব্যবসায়ীরা।
সিআইডির দায়িত্বশীল সূত্র জানায়, আমদানির রেকর্ড জানতে প্রথমে তারা বেনাপোল, হিলি, সোনামসজিদ ও ভোমরা বন্দর কর্তৃপক্ষকে চিঠি দেয়। গত এক বছরে তাদের বন্দরের মাধ্যমে কী পরিমাণ পেঁয়াজ কী দামে কারা আমদানি করেছে, তা জানতে চাওয়া হয়েছিল।
হিলি বন্দর থেকে পাওয়া প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে দেখা যায়, জুলাইয়ে ভারত থেকে আনা বেশিরভাগ চালানের প্রতি কেজি পেঁয়াজের দাম পড়েছে ১০ থেকে ১৩ টাকা। আগস্টে আমদানি করা প্রতি কেজির সর্বনিম্ন দাম পড়ে ১১ টাকা। ওই মাসে কিছু চালানের প্রতি কেজি পেঁয়াজের সর্বোচ্চ দাম পড়ে ৩৯ টাকা। তবে আগস্টে আসা অধিকাংশ চালানের প্রতি কেজি পেঁয়াজের দাম পড়ে ১২ টাকা। সেপ্টেম্বরে ভারত থেকে আসা প্রতি কেজি পেঁয়াজের গড় মূল্য ছিল ১২ থেকে ২৫ টাকার ভেতরে। তবে ওই মাসে বেশিরভাগ চালানের প্রতি কেজি পেঁয়াজের দাম ছিল ২২ ও ২৫ টাকা। গত অক্টোবরে ভারত থেকে কেনা প্রতি কেজি পেঁয়াজের দাম পড়ে ২০ থেকে ৩৩ টাকার ভেতরে। তবে বেশিরভাগ পেঁয়াজের দাম প্রতি কেজিতে ছিল ২৫ টাকা। নভেম্বরে এসে প্রতি কেজি পেঁয়াজের গড় দাম ছিল ২৫ থেকে ৪১ টাকা। তবে ২৫ নভেম্বরের পর কিছু চালানের পেঁয়াজের দাম পড়ে প্রতি কেজি ৭১ টাকা।
সংশ্নিষ্টরা বলছেন, বন্দরে পেঁয়াজের চালান আসার পর সরকারি কিছু খরচসহ আনুষঙ্গিক ব্যয় বাবদ প্রতি কেজিতে আরও এক টাকা খরচ হয় আমদানিকারদের। এ ছাড়া এসব পেঁয়াজ বন্দর থেকে রাজধানী পর্যন্ত আসতে কেজিপ্রতি আরও এক থেকে দেড় টাকা খরচ হয়ে থাকে। এর পর আমদানিকারকরা পাইকারি ব্যবসায়ীদের কাছে এসব পেঁয়াজ বিক্রি করেন। পাইকারি ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে তা খুচরা ব্যবসায়ীদের কাছে পৌঁছে। সব মিলিয়ে ভারত থেকে আমদানি করার পর তিন-চার হাত হয়ে পেঁয়াজ ভোক্তার কাছে পৌঁছে।
সিআইডির পর্যবেক্ষণ প্রতিবেদনে বলা হয়, তদন্তকালে পেঁয়াজ আমদানির সঙ্গে সংশ্নিষ্ট দেশের একাধিক ব্যবসায়ী পুলিশের কাছে জিজ্ঞাসাবাদে অকপটে স্বীকার করেন, কোনোভাবেই বাজারে পেঁয়াজের এই অগ্নিমূল্য হওয়ার কথা নয়।
তারা বলছেন, পাইকারি ও খুচরা ব্যবসায়ীরাই ভোক্তাদের পকেট কাটছেন। সব খরচসহ প্রতি কেজি পেঁয়াজে দুই টাকা করে লাভ করার লক্ষ্য থাকে তাদের। এ হিসাবে গত বছরের জুলাইয়ে ভারত থেকে আমদানি করা পেঁয়াজের দাম হওয়ার কথা সর্বোচ্চ ১৬ থেকে ১৮ টাকা। আগস্টে দাম হওয়ার কথা ছিল ১৭-১৮ টাকা। তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে ২৫-২৬ টাকা। সেপ্টেম্বরে ৩০-৩২ টাকা, অক্টোবরে ৩০-৩২ টাকা এবং নভেম্বরে ৫০ টাকা। ২৫ নভেম্বরের পর থেকে কিছু ক্ষেত্রে দাম হওয়ার কথা প্রতি কেজি ৮০ টাকা। তবে খুচরা বাজারে নভেম্বরে দেশি পেঁয়াজের দাম ছিল প্রতি কেজি ৭৮-৮০ টাকা, ভারতীয় পেঁয়াজ ৫৪-৫৮ টাকা। অক্টোবরে দেশি পেঁয়াজ প্রতি কেজি ৭৫-৯৫ টাকা এবং ভারতীয় পেঁয়াজ ৭০-৮০ টাকা।
তদন্ত-সংশ্নিষ্ট সিআইডির একাধিক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা জানান, আগস্টে সবচেয়ে বেশি পেঁয়াজ আমদানি করা হয়। এর পর থেকে পেঁয়াজের দাম কমার কথা ছিল। কিন্তু ওই মাসের পর দাম আরও বাড়তে থাকে। তদন্তে উঠে এসেছে, পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী আগস্টে বেশি চালান আসার পর তা মজুদ করে ফেলেন ব্যবসায়ীরা। এরপর বাজারে এক ধরনের কৃত্রিম সংকট তৈরি করে দাম বাড়ানো হয়।
সংশ্নিষ্টরা বলছেন, বছরে দেশের চাহিদার সিংহভাগ পেঁয়াজ স্থানীয়ভাবে উৎপাদন হচ্ছে। বছরে ১৭-১৯ লাখ টন পেঁয়াজ উৎপাদন হয়। বাকি চাহিদা আমদানিতে মিটছে। আমদানির প্রধান বাজার ভারত থেকে অধিকাংশ পেঁয়াজ আসে। গত বছরে ৭ থেকে ১১ লাখ টন পেঁয়াজ আমদানি হয়।
এ হিসাবে দেশে পেঁয়াজের চাহিদার তুলনায় সরবরাহ কম থাকার কোনো সুযোগ নেই। তবে প্রায়ই পেঁয়াজের সরবরাহ ঘাটতির কথা বলে হঠাৎ দাম বাড়িয়ে দেওয়া হয়। এখন রাজধানীর বিভিন্ন কাঁচাবাজারে গড়ে প্রতি কেজি দেশি ছোট পেঁয়াজ ৬৫-৭৫ টাকা ও বড় পেঁয়াজ ৮০-৮৫ টাকা এবং আমদানি করা পেঁয়াজ ৬০-৬৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
সিআইডি বলছে, এখন পর্যন্ত তারা পেঁয়াজ আমদানির সঙ্গে জড়িত দেশের অন্যতম প্রধান চারটি প্রতিষ্ঠানকে তাদের বক্তব্য উপস্থাপনের জন্য ডেকেছে। তাদের মধ্যে খুলনার হামিদ এন্টারপ্রাইজের আবদুল হামিদ ও বেনাপোলের জেবিসি ট্রেডার্সের ম্যানেজার মিহির মুখার্জি ঢাকায় সিআইডি কার্যালয়ে এসে তাদের মতামত উপস্থাপন করেছেন। গত বছর হামিদ এন্টারপ্রাইজ নয় হাজার টন ও জেবিসি ট্রেডার্স দুই হাজার টন পেঁয়াজ আমদানি করেছে। তারা সিআইডির কাছে বলেছেন, আমদানি ব্যয়ের সঙ্গে ভোক্তা পর্যায়ে যাওয়া পর্যন্ত দামের যে পার্থক্য, এটা অস্বাভাবিক। তাদের দাবি, মধ্যস্বত্বভোগী ও খুচরা ব্যবসায়ীদের কারণেই দাম বেড়েছে।
সিআইডি সূত্রে জানা গেছে, পেঁয়াজের দাম বৃদ্ধির কারসাজিতে আমদানিকারক ও পাইকারি ব্যবসায়ী যারা জড়িত, তাদের চিহ্নিত করা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে তাদের বক্তব্য নেওয়া হবে। তবে বক্তব্য সন্তোষজনক না হলে ফৌজদারি আইনে মামলা হবে।
সিআইডির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রফিকুল ইসলাম বলেন, সিআইডির পর্যালোচনায় পেঁয়াজের দাম বাড়ার পেছনে নানা কারসাজি ধরা পড়েছে। এখন সরকারের নীতিনির্ধারক মহলে আলোচনার পর জড়িতদের বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিং আইনে মামলা করা হবে।
বাণিজ্য সচিব শুভাশীষ বসুবলেন, পুলিশের ওই প্রতিবেদন পাওয়ার পর তা পর্যালোচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। অনেক সময় অতি মুনাফার লোভে বাড়ানো হয়েছে দাম।
এ ব্যাপারে সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার মোল্যা নজরুল ইসলাম বলেন, হঠাৎ করে পেঁয়াজের দাম বাড়ার কারণ অনুসন্ধান করে সিআইডি বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পেয়েছে। দেশের চারটি বন্দরের মাধ্যমে পেঁয়াজ আমদানির রেকর্ড ও দাম পর্যালোচনা করা হয়েছে। কেন আমদানি মূল্যের সঙ্গে খুচরা বাজারে দামের বিশাল ফারাক- এ ব্যাপারে যৌক্তিক কোনো ব্যাখ্যা দিতে পারেননি ব্যবসায়ীরা।
সিআইডির দায়িত্বশীল সূত্র জানায়, আমদানির রেকর্ড জানতে প্রথমে তারা বেনাপোল, হিলি, সোনামসজিদ ও ভোমরা বন্দর কর্তৃপক্ষকে চিঠি দেয়। গত এক বছরে তাদের বন্দরের মাধ্যমে কী পরিমাণ পেঁয়াজ কী দামে কারা আমদানি করেছে, তা জানতে চাওয়া হয়েছিল।
হিলি বন্দর থেকে পাওয়া প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে দেখা যায়, জুলাইয়ে ভারত থেকে আনা বেশিরভাগ চালানের প্রতি কেজি পেঁয়াজের দাম পড়েছে ১০ থেকে ১৩ টাকা। আগস্টে আমদানি করা প্রতি কেজির সর্বনিম্ন দাম পড়ে ১১ টাকা। ওই মাসে কিছু চালানের প্রতি কেজি পেঁয়াজের সর্বোচ্চ দাম পড়ে ৩৯ টাকা। তবে আগস্টে আসা অধিকাংশ চালানের প্রতি কেজি পেঁয়াজের দাম পড়ে ১২ টাকা। সেপ্টেম্বরে ভারত থেকে আসা প্রতি কেজি পেঁয়াজের গড় মূল্য ছিল ১২ থেকে ২৫ টাকার ভেতরে। তবে ওই মাসে বেশিরভাগ চালানের প্রতি কেজি পেঁয়াজের দাম ছিল ২২ ও ২৫ টাকা। গত অক্টোবরে ভারত থেকে কেনা প্রতি কেজি পেঁয়াজের দাম পড়ে ২০ থেকে ৩৩ টাকার ভেতরে। তবে বেশিরভাগ পেঁয়াজের দাম প্রতি কেজিতে ছিল ২৫ টাকা। নভেম্বরে এসে প্রতি কেজি পেঁয়াজের গড় দাম ছিল ২৫ থেকে ৪১ টাকা। তবে ২৫ নভেম্বরের পর কিছু চালানের পেঁয়াজের দাম পড়ে প্রতি কেজি ৭১ টাকা।
সংশ্নিষ্টরা বলছেন, বন্দরে পেঁয়াজের চালান আসার পর সরকারি কিছু খরচসহ আনুষঙ্গিক ব্যয় বাবদ প্রতি কেজিতে আরও এক টাকা খরচ হয় আমদানিকারদের। এ ছাড়া এসব পেঁয়াজ বন্দর থেকে রাজধানী পর্যন্ত আসতে কেজিপ্রতি আরও এক থেকে দেড় টাকা খরচ হয়ে থাকে। এর পর আমদানিকারকরা পাইকারি ব্যবসায়ীদের কাছে এসব পেঁয়াজ বিক্রি করেন। পাইকারি ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে তা খুচরা ব্যবসায়ীদের কাছে পৌঁছে। সব মিলিয়ে ভারত থেকে আমদানি করার পর তিন-চার হাত হয়ে পেঁয়াজ ভোক্তার কাছে পৌঁছে।
সিআইডির পর্যবেক্ষণ প্রতিবেদনে বলা হয়, তদন্তকালে পেঁয়াজ আমদানির সঙ্গে সংশ্নিষ্ট দেশের একাধিক ব্যবসায়ী পুলিশের কাছে জিজ্ঞাসাবাদে অকপটে স্বীকার করেন, কোনোভাবেই বাজারে পেঁয়াজের এই অগ্নিমূল্য হওয়ার কথা নয়।
তারা বলছেন, পাইকারি ও খুচরা ব্যবসায়ীরাই ভোক্তাদের পকেট কাটছেন। সব খরচসহ প্রতি কেজি পেঁয়াজে দুই টাকা করে লাভ করার লক্ষ্য থাকে তাদের। এ হিসাবে গত বছরের জুলাইয়ে ভারত থেকে আমদানি করা পেঁয়াজের দাম হওয়ার কথা সর্বোচ্চ ১৬ থেকে ১৮ টাকা। আগস্টে দাম হওয়ার কথা ছিল ১৭-১৮ টাকা। তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে ২৫-২৬ টাকা। সেপ্টেম্বরে ৩০-৩২ টাকা, অক্টোবরে ৩০-৩২ টাকা এবং নভেম্বরে ৫০ টাকা। ২৫ নভেম্বরের পর থেকে কিছু ক্ষেত্রে দাম হওয়ার কথা প্রতি কেজি ৮০ টাকা। তবে খুচরা বাজারে নভেম্বরে দেশি পেঁয়াজের দাম ছিল প্রতি কেজি ৭৮-৮০ টাকা, ভারতীয় পেঁয়াজ ৫৪-৫৮ টাকা। অক্টোবরে দেশি পেঁয়াজ প্রতি কেজি ৭৫-৯৫ টাকা এবং ভারতীয় পেঁয়াজ ৭০-৮০ টাকা।
তদন্ত-সংশ্নিষ্ট সিআইডির একাধিক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা জানান, আগস্টে সবচেয়ে বেশি পেঁয়াজ আমদানি করা হয়। এর পর থেকে পেঁয়াজের দাম কমার কথা ছিল। কিন্তু ওই মাসের পর দাম আরও বাড়তে থাকে। তদন্তে উঠে এসেছে, পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী আগস্টে বেশি চালান আসার পর তা মজুদ করে ফেলেন ব্যবসায়ীরা। এরপর বাজারে এক ধরনের কৃত্রিম সংকট তৈরি করে দাম বাড়ানো হয়।
সংশ্নিষ্টরা বলছেন, বছরে দেশের চাহিদার সিংহভাগ পেঁয়াজ স্থানীয়ভাবে উৎপাদন হচ্ছে। বছরে ১৭-১৯ লাখ টন পেঁয়াজ উৎপাদন হয়। বাকি চাহিদা আমদানিতে মিটছে। আমদানির প্রধান বাজার ভারত থেকে অধিকাংশ পেঁয়াজ আসে। গত বছরে ৭ থেকে ১১ লাখ টন পেঁয়াজ আমদানি হয়।
এ হিসাবে দেশে পেঁয়াজের চাহিদার তুলনায় সরবরাহ কম থাকার কোনো সুযোগ নেই। তবে প্রায়ই পেঁয়াজের সরবরাহ ঘাটতির কথা বলে হঠাৎ দাম বাড়িয়ে দেওয়া হয়। এখন রাজধানীর বিভিন্ন কাঁচাবাজারে গড়ে প্রতি কেজি দেশি ছোট পেঁয়াজ ৬৫-৭৫ টাকা ও বড় পেঁয়াজ ৮০-৮৫ টাকা এবং আমদানি করা পেঁয়াজ ৬০-৬৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
সিআইডি বলছে, এখন পর্যন্ত তারা পেঁয়াজ আমদানির সঙ্গে জড়িত দেশের অন্যতম প্রধান চারটি প্রতিষ্ঠানকে তাদের বক্তব্য উপস্থাপনের জন্য ডেকেছে। তাদের মধ্যে খুলনার হামিদ এন্টারপ্রাইজের আবদুল হামিদ ও বেনাপোলের জেবিসি ট্রেডার্সের ম্যানেজার মিহির মুখার্জি ঢাকায় সিআইডি কার্যালয়ে এসে তাদের মতামত উপস্থাপন করেছেন। গত বছর হামিদ এন্টারপ্রাইজ নয় হাজার টন ও জেবিসি ট্রেডার্স দুই হাজার টন পেঁয়াজ আমদানি করেছে। তারা সিআইডির কাছে বলেছেন, আমদানি ব্যয়ের সঙ্গে ভোক্তা পর্যায়ে যাওয়া পর্যন্ত দামের যে পার্থক্য, এটা অস্বাভাবিক। তাদের দাবি, মধ্যস্বত্বভোগী ও খুচরা ব্যবসায়ীদের কারণেই দাম বেড়েছে।
সিআইডি সূত্রে জানা গেছে, পেঁয়াজের দাম বৃদ্ধির কারসাজিতে আমদানিকারক ও পাইকারি ব্যবসায়ী যারা জড়িত, তাদের চিহ্নিত করা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে তাদের বক্তব্য নেওয়া হবে। তবে বক্তব্য সন্তোষজনক না হলে ফৌজদারি আইনে মামলা হবে।
সিআইডির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রফিকুল ইসলাম বলেন, সিআইডির পর্যালোচনায় পেঁয়াজের দাম বাড়ার পেছনে নানা কারসাজি ধরা পড়েছে। এখন সরকারের নীতিনির্ধারক মহলে আলোচনার পর জড়িতদের বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিং আইনে মামলা করা হবে।