একক দেশ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাজেটের আশপাশে কেউ না থাকলেও মজার ব্যাপার হল জনসংখ্যা বিবেচনায় ও দেশের মোট বাজেটে সামরিক বাজেটের অংশ হিসাব করলে ইসরায়েল ও সৌদি আরবের তুলনায় অনেকটাই পেছনে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
পিস রিসার্চ ইনস্টিটিউটের তথ্য অনুযায়ী ২০১৬ সালে সামরিক ব্যয় বাবদ সারা পৃথিবীতে ১.৬৯ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার খরচ করা হয়েছে। এর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র একাই ব্যয় করেছে ৬১১ বিলিয়ন ডলার যা ছিল ২০১৫ সালের তুলনায় ১.৭ শতাংশ বেশি। যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাজেট সর্বোচ্চে উঠেছিল ২০১০ সালে। সেই তুলনায় ২০১৬ সালের বাজেট ২০ শতাংশ কম ছিল।
সামরিক বাজেট বৃদ্ধির দিক থেকে সবার চেয়ে এগিয়ে রয়েছে চীন। বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম সামরিক বাজেটের এই দেশটির সামরিক খাতে ব্যয় ১১৮ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। পিস রিসার্চ ইনস্টিটিউটের তথ্য অনুযায়ী তারা ব্যয় করেছে ২১৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার যা তার প্রতিবেশী ভারতের চেয়ে প্রায় চার গুণ বেশি। সামরিক খাতে ৫৬ বিলিয়ন ডলার ব্যয় করে সারা বিশ্বে পঞ্চম স্থানে রয়েছে ভারত।
বৈশ্বিকভাবে তৃতীয় সর্বোচ্চ সামরিক বাজেট রাশিয়ার। ২০১৬ সালে দেশটি সামরিক খাতে ৬৯ বিলিয়ন ডলার ব্যয় করেছে।
আর মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর মধ্যে সর্বোচ্চ সামরিক বাজেট সৌদি আরবের। চতুর্থ অবস্থানে থেকে ২০১৬ সালে তারা ব্যয় করেছে ৬৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। দেশটি ২০০২ সালের পর থেকেই ক্রমাগত সামরিক ব্যয় বাড়িয়েছে। তবে ২০১৫ সালের সাথে তুলনায় ২০১৬ সালে তাদের সামরিক বাজেট প্রায় ৩০ শতাংশ কম ছিল।
দু দুটি বিশ্বযুদ্ধের ময়দান ইউরোপে সামরিক ব্যয়ের দিক থেকে এক নম্বরে রয়েছে ফ্রান্স। সারা পৃথিবীতে ষষ্ট অবস্থানে থেকে ২০১৬ সালে তারা ব্যয় করেছে ৫৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। আর ফ্রান্সের প্রতিবেশী যুক্তরাজ্য ও জার্মানি রয়েছে যথাক্রমে সপ্তম ও অষ্টম অবস্থানে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পর পাউন্ডের অবমূল্যায়নের কারণে দেশটির প্রকৃত সামরিক ব্যয় হ্রাস পেয়েছে।
অন্যদিকে ২০১৬ সালে ২.৯ শতাংশ সামরিক ব্যয় বৃদ্ধি করেছে ইউরোপের শীর্ষ অর্থনীতির দেশ জার্মানি। চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা মের্কেলের চেষ্টায় এমনটা হয়েছে বলে প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।
দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার মধ্যে শীর্ষ দশের মধ্যে রয়েছে জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়া। উত্তর কোরিয়া, দক্ষিণ কোরিয়া, চীন ও জাপানের মধ্যে চলমান উত্তেজনার কারণে এই অঞ্চলে সামরিক ব্যয় বৃদ্ধি পাচ্ছে।
তথ্য বলছে, ২০১৫ সালের তুলনায় ২০১৬ সালে বৈশ্বিকভাবে ০.৪ শতাংশ বেশি সামরিক ব্যয় হয়েছে। ২০১৬ সালে মোট বৈশ্বিক উৎপাদনের ২.২ শতাংশ সামরিক খাতে ব্যয় করা হয়েছে যা জনপ্রতি হিসাবে ২২৭ ডলারের সমান। যুদ্ধ, নিরাপত্তা হুমকি, তেলের দাম ও আয়-ব্যয়ের তারতম্যের কারণে সামরিক খাতে বাজেট কম বেশি হয়।