ময়মনসিংহে এবার প্রায় দ্বিগুণ জমিতে সরিষা চাষ হয়েছে। গত বছর জেলায় যেখানে সরিষা আবাদ হয়েছিল পাঁচ হাজার ২৪৬ হেক্টর জমিতে এবার সেই আবাদ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯ হাজার ২০৫ হেক্টরে। কম খরচে বেশি লাভ হওয়ায় কৃষকরা সরিষা আবাদে ঝুঁকেছেন বলে জানিয়েছেন কৃষিবিদরা।
জেলার সদর উপজেলার বোরোরচর গ্রামের কৃষক শামসুল হক ৩০ শতক জমিতে বারি ১৪ জাতের সরিষা আবাদ করেছেন। গত বছর ২০ শতক জমিতে সরিষা আবাদ করে ২০ হাজার টাকা মুনাফা পেয়েছিলেন। কম খরচে বেশি লাভ হওয়ায় এবার জমির পরিমাণ বাড়িয়ে ৩০ শতকে সরিষা আবাদ করেছেন। নভেম্বরের শুরুতে আমন ধান কাটার পরপরই তিনি সরিষা রোপণ করেন। এখন তার ক্ষেতজুড়ে হলুদের সমারোহ।
এবারও ভালো ফলন হবে জানিয়ে শামসুল হক বলেন, ‘সরিষা গাছে হলুদ ফুল ধরেছে। জানুয়ারির শেষ দিকে কিংবা ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহে সরিষা তোলা যাবে। সরিষা মাড়াই শেষে বোরো ধান আবাদ করবো। যেভাবে ফলন হয়েছে তাতে এবার ৩০ হাজার টাকা লাভ হবে বলে আশা করছি।’
শুধু শামসুল হক নন; জেলার অনেক কৃষক এবার সরিষা আবাদ করেছেন। সদরের গোপালনগর গ্রামের তালেব উদ্দিন জানান, সরিষার তেলের চাহিদা ও দাম বেড়ে যাওয়ায় সরিষা আবাদ করেছেন। এবার যে ফলন দেখা যাচ্ছে তাতে লাভবান হবেন বলে জানান তিনি।
কম খরচে বেশি লাভ হওয়ায় এবং ভোজ্যতেলের দাম বেড়ে যাওয়ায় দ্বিগুণ জমিতে কৃষকরা সরিষা আবাদ করেছেন বলে জানিয়েছেন ময়মনসিংহ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ মতিউজ্জামান।
তিনি বলেন, ‘ভোজ্যতেলের আমদানি নির্ভরতা কমাতে সরিষা আবাদে কৃষকদের উৎসাহিত করেছি আমরা। জেলার ৩৯ হাজার ৫০০ কৃষককে প্রণোদনা হিসেবে এক কেজি করে সরিষা বীজ দেওয়া হয়েছে। কৃষকরা বারি ১৪, বিনা-৪, ১৫ ও ১৭ জাতের সরিষা আবাদ করেছেন। এবার ফলন ভালো হয়েছে। আগামীতে কৃষকরা আরও বেশি জমিতে সরিষা আবাদ করবেন বলে আশাবাদী আমরা।’