কিশোরগঞ্জের সাত পৌরসভা নির্বাচনে বিএনপি’র নজিরবিহীন ভরাডুবির ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনা এ এলাকার রাজনীতিকসহ নানা শ্রেণী-পেশার মানুষের কাছে বছরের শ্রেষ্ঠ আলোচিত ঘটনা হিসেবে ঠাঁই পেয়েছে। এ নিয়ে নানা পথ ও মতের মানুষের পাশাপাশি বিএনপি’র নেতাকর্মী ও সমর্থকদের মধ্যে চলছে নানা আলোচনা-সমালোচনা ও বিচার-বিশ্লেষণ।
পুলিশি তল্লাশির মাধ্যমে নেতাকর্মী ও সমর্থকদের মধ্যে আতংক বিস্তারের কারণে এ পরিস্থিতি হয়েছে বলে বিএনপি’র শীর্ষ নেতাদের অভিযোগ। তবে দুর্বল নেতৃত্ব আর দলে বহুধা বিভক্তির কারণে অসংখ্য প্রভাবশালী নেতাকর্মীর নির্বিকার ভূমিকাকে প্রধান কারণ হিসেবে চিহ্নিত করেছে দলটির তৃণমূলের নেতাকর্মী ও সমর্থকরা। অপরদিকে, জ্বালাও-পোড়াও, বোমাবাজি ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডকে প্রত্যাখ্যান করে চলমান উন্নয়নের রাজনীতির পক্ষে নাগরিক সমাজ রায় দিয়েছে বলে মনে করছেন অনেকে।
কিছু বিচ্ছিন্ন ঘটনা ব্যতীত ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত পৌরসভা নির্বাচনটি শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠিত হয়েছে। তবে আগেভাগেই বিএনপি নির্বাচনে ব্যাপক কারচুপি ও কেন্দ্র দখলের মতো ঘটনা ঘটার আশংকা প্রকাশ করেন। এ কারণে তারা ভোটযুদ্ধের প্রস্তুতিতে পিছিয়ে পড়েন।
বিএনপির প্রভাবশালী নেতাকর্মীদের অধিকাংশই পালন করে নির্বিকার ভূমিকা। এ দুর্বল অবস্থানের কারণে কোথাও কোথাও প্রতিপক্ষ দলের প্রার্থীরা বিএনপি’র প্রভাবশালী নেতাকর্মীদেরও তাদের পক্ষে কাজে লাগানোর সুযোগ পায়। নেতৃত্ব নিয়ে দলীয় অন্তর্দ্বন্দ্ব ও দ্বিধা বিভক্তির কারণে সাংগঠনিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়া বিএনপি এ পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে ব্যর্থ হয়। দৃশ্যত বাজিতপুর পৌরসভায় বিভিন্ন অভিযোগ এনে দুপুরের আগেই মাঠ ছেড়ে দেয় বিএনপি ও স্বতন্ত্র প্রার্থী। অন্যদিকে, বাজিতপুর, কটিয়াদী ও হোসেনপুরে বিএনপি’র অনেক নেতাকর্মী সমর্থকদের আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীর পক্ষে কাজ করতে দেখা যায়। ২০১১ সালের পৌরসভা নির্বাচনে এ জেলার ৮টি পৌরসভার মধ্যে বিএনপি সমর্থিত মেয়র প্রার্থীরা ৫টিতে এবং আওয়ামী লীগ সমর্থিত মেয়র প্রার্থীরা ৩টিতে বিজয়ী হয়। এবার অনুষ্ঠিত ৭টি পৌরসভা নির্বাচনেই ভরাডুবি হয় বিএনপি মনোনীত প্রার্থীদের।