নাজমুল হাসান
ভুক্তভোগী: আমি আওয়ামী লীগ করি, আমার পুরো পরিবার আওয়ামী লীগ করে। আমার ছেলে বর্তমান ছাত্রলীগের নেতা। আমরা মুক্তিযোদ্ধা পরিবার। আমার বাবা মুক্তিযুদ্ধে প্রাণ দিয়েছেন, ভাইয়েরা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার। আমি পঁচিশ বছর ধরে সরকারি সব নিয়ম-কানুন মেনে এখানে আছি। এইই আমার সম্বল। এর উপরে আমার সংসার চলে। আমাকে এখান থেকে তুলে দেবেন না। আমার পেটে লাথি দেবেন না। আওয়ামী লীগ করি বলে বিএনপি’র সময়েও অনেক ঝামেলা সহ্য করে এখানে টিকে রয়েছি। তারাও আমাকে তুলে দেবার মতো এত বড় অন্যায় করেনি। এই দোকানই আমার সব। আমাকে তুলে দেবেন না। সরকারি মালিকানার দোকানঘর। যেই থাকবে সেইই সরকারকে ভাড়া দিয়েই থাকবে। আমিও ভাড়া দিয়েই আছি। আমাকে তুলে দেবেন না। অনেকগুলো দোকানঘর। খালি করতে হলে অন্য ঘর আছে সেগুলি ব্যবহার করতে পারেন। আমরা আপনার ইলেকশন করি। প্লিজ দয়া করেন। আমাকে তুলে দেবেন না।
এমপি: তুমি দোকান ছেড়ে দেও, দরকার পড়লে আমি নিজে তোমারে দোকানঘর দেব, তুমি সেই ঘরে দোকান সরায়ে নিবা। কোন অসুবিধা হবে না। তুমি তো আমার নিজের লোক।
ভুক্তভোগী: আমারে যে ঘরটা দেবেন সেই ঘরটা তাহলে ওরে দেন। তাহলে তো আমাকে আর সরাতে হয় না। পুরোনো ব্যবসা। সরলে আমার খুব ক্ষতি হয়ে যাবে। আমাকে সরাবেন না প্লিজ।
এমপি: কিছু করার নাই। দোকানটা ওর লাগবে।
ভুক্তভোগী: ও তো ব্যবসা করে না। ও তো এরকম বহু যায়গা দখল করে খায়। ওকে দোকান দিলে আমার কী উপায় হবে? এটা তো আমার রানিং ব্যবসা।
এমপি’র চামচা: আপনি কি করে খাবেন সেটা কী আমরা বলে দেব! যা ইচ্ছে তাই করে খান। দোকান আমার লাগবে। আপনি দোকান ছেড়ে দেবেন।
ভুক্তভোগী: তোমার বড়ভাই আমার ঘনিষ্ঠ বন্ধু এবং ক্লাসমেট। তোমার আরেক বড় ভাই আমার ছোট ভাইয়ের বন্ধু। কয়েক যুগ ধরে আমাদের সম্পর্ক। তুমি আমার এতবড় ক্ষতি করে দোকানটা নিয়ে আরেক জনরে ভাড়া দিয়ে লাভ করতেও ছাড়লে না!
এমপি: দোকানটা যখন ওর লাগবে তখন তুমি ওটা ছেড়ে দেও।
*
গত পরষু ঘটে যাওয়া সত্য ঘটনা অবলম্বনে। আমি মাঝে মাঝে বলি, আওয়ামী লীগ খুব আত্মঘাতী।