আব্দুল্লাহ হারুণ জুয়েল
বাংলাদেশের জন্য এলার্মিং নিউজ হচ্ছে রোহিঙ্গাদের মাধ্যমে এইডস সংক্রমণের ঝুঁকি। আর এই এইচআইভি এইডস বাংলাদেশে ছড়াচ্ছে জামাত-শিবিরের নেতাকর্মীরা। বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত ও জরীপ বিশ্লেষণ করলে যে চিত্রটি পাওয়া যায় তাতে জামাতের পাশাপাশি বিএনপির উপরও এইডস সংক্রমণের দায় বর্তায়।
বিশ্বে এইডসের দেশ থাইল্যান্ড নয়, বার্মা। “এইচআইভি ইনফেকশনস” ও বার্মা/মায়ানমার নিয়ে বেশ কিছু প্রতিবেদন রয়েছে। “বার্মা মিলিটারি সিক্রেট” নামীয় অনেক রিপোর্ট রয়েছে যা বিশ্ব থেকে আড়াল করে বার্মিজরা। বার্মিজদের মধ্যে এইডস আক্রান্তের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। পৃথিবীতে একমাত্র মায়ানমার আর্মিতে এইডস আক্রান্তদের চাকুরিতে বহাল রাখা হয়, এমন কি এইডস আক্রান্তদেরও আর্মিতে যুক্ত করা হয়। বার্মিজ আর্মিকে বিভিন্ন প্রদেশের কয়েকটি ফ্রন্টে বিদ্রোহীদের সাথে লড়াই করতে হচ্ছে। এইডস ব্যাটেলিয়ান, সুইসাইড স্কোয়াডের মত প্রতিপক্ষ দমনে ভূমিকা রাখে।
বাংলাদেশের মানুষ পৃথিবীর যেকোন দেশের মানুষের তুলনায় সংযমী, তাই তুলনামূলকভাবে সংক্রামক যৌন রোগের প্রকোপও কম।
বিশ্বে প্রথম এইডস শনাক্ত করা হয় ১৯৮১ সালে। বাংলাদেশে সনাক্ত হয় ১৯৮৯ সালে এবং আক্রান্ত ব্যক্তি ছিলেন বিদেশি। মূলত ১৯৯৩ সালের পর থেকে এইডস রোগীর সংখ্যা বাড়তে শুরু করে।
২০০৮ সাল পর্যন্ত সরকারী হিসাবে বাংলাদেশে এইডস রোগীর সংখ্যা ১৪৯৫। ইউএন-এইডসসহ বিভিন্ন সংস্থার হিসাবে এইডস রোগীর সংখ্যা ১১ হাজার। পরিসংখ্যান অনুসারে এদেশের মানুষ এইডসে আক্রান্ত হয়েছে দেশের বাইরে; বিদেশে কর্মরত থাকাকালে, কিংবা ভ্রমণকালে। অন্যান্যরাও আক্রান্ত হয়েছে এদের মাধ্যমেই।
মূল বিষয়ে আসি। আজকের অনেক পত্রিকাতেই এইডস সংশ্লিষ্ট দুটি সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। একটি সংবাদে এইডস রোগির সংখ্যা উল্লেখ রয়েছে ১১ হাজার। অপর সংবাদে বলা হয়েছে, আরও দুজন এইডস আক্রান্ত রোহিঙ্গার কথা। এইডস আক্রান্ত রোহিঙ্গার সংখ্যা দাড়ালো ১৮৯ জনে। এ দু’শ এইডস রোগির সন্ধান পাওয়া গেছে অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে যাওয়ার কারণে। অর্থাৎ, হাসপাতালে ভর্তি না হলে এরা শরণার্থীদের সাথে মিশে থাকতো। অর্থাৎ, আট লক্ষ রোহিঙ্গা শরণার্থীদের মধ্যে বিপুল সংখ্যক রোহিঙ্গা রয়েছে এই্ডস আক্রান্ত।
এইডস আক্রান্ত রোগির সংখ্যা ২০০৮ থেকে ২০১৫ পর্যন্ত মোটামুটি ১১ হাজারেই স্থিতিশীল রয়েছে। গত একমাসে প্রকাশিত রিপোর্টে এ সংখ্যা দেখা যাচ্ছে ১২ হাজার। বাংলাদেশ এইডসের যে ঝুঁকিতে পড়েছে তা মোটা দাগে কয়েকটি ভাগে ভাগ করা যায়।
১. বাংলাদেশে এইডস নিয়ে প্রকাশিত যেকোন প্রতিবেদনে আক্রান্ত বড় অংশ প্রবাসী শ্রমিক হিসেবে উল্লেখ রয়েছে। রোহিঙ্গা নিয়ে বিএনপি-জামাতের মিশন নতুন নয়। ৯২ সাল থেকে এদেশে আসা রোহিঙ্গাদের ভোটার করা হয়েছে নির্বাচনের জয়ী হতে। প্রায় আট লাখ রোহিঙ্গাকে বাংলাদেশী পাসপোর্টে বিদেশ পাঠিয়েছে বিএনপি-জামাতের নেতারা। আমি মনে করি এরাই এইডসের আমদানিকারক।
২. রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিতে বিদেশিদের চেয়ে সরকারকে বেশি চাপ দিয়েছে বিএনপি, জামায়াত, হেফাজতসহ বামদলগুলিও। খালেদা জিয়া সীমান্ত খুলে দেয়ার দাবি জানিয়েছে। তাদেরকে ৭১-এর বাঙালিদের সাথে তুলনা করা হয়েছে। বিজামাতি প্রত্যেকের প্রোফাইল দেখুন রোহিঙ্গা নিয়ে কি করেছে। তাদের আশ্রয় না দিলে এরা নিশ্চিতভাবে সরকার পতনের আন্দোলন ডাকতো!
৩. রোহিঙ্গাদের বড় অংশকে গণধর্ষণ করেছে মায়ানমার আর্মি ও বার্মিজ রাজাকারেরা। বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের আগেও তাদের উপর নির্যাতন চলেছে। মায়ানমারের আর্মির যে এইডস রোগ রোহিঙ্গাদের মধ্যে সংক্রমিত হয়েছে, তা জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মীদের মাধ্যমে এদেশের জনগণকেও সংক্রমিত করার ঝুঁকি রয়েছে।
কিছুদিন আগে আমরা “ত্রিশ আলেমের রোহিঙ্গা বিবাহ” মিশনের কথা জেনেছি, ফেসবুকে বিএনপি-জামাতের ইভেন্ট দেখেছি যেখানে “অসহায় রোহিঙ্গা বোনদের অন্তত একজনকে নিকাহ” করার আবেদন জানানো হয়েছিল। যারা রোহিঙ্গাকে বিবাহ করতে স্ত্রীর অনুমতি পায়নি তাদের কটাক্ষও করা হয়েছে। কক্সবাজারে জামাত নেতাদের বাসা থেকে রোহিঙ্গা নারী উদ্ধার করার সংবাদ এসেছে। রোহিঙ্গা নারী নিয়ে ধরা পড়া সকলে জামাত বা বিএনপির। কাফের মওদুদী দাসী ভোগ করা ইসলামসস্মত করতে এবং মুতআ বা খন্ডকালীন বিবাহের নামে প্রস্টিটিউশন জায়েজ করতে থিসিস লিখেছে। সাইদীর লুইচ্চামির এত প্রমাণ থাকার পরও তার জন্য জীবন উৎসর্গ করতে প্রস্তুত জামাতের নারীরাও।
আমার ধারণা এদেশে এইডসের বিস্তারে মুখ্য ভূমিকা রেখেছে রোহিঙ্গারা। মওদুদীর অনুসারী জামাত-শিবির রোহিঙ্গাদের সাথে আনন্দ ফুর্তি ও লুইচ্চামি করাকে জায়েজ মনে করে – বাংলাদেশে এইডস সংক্রমণের সবচেয়ে বড় ঝুঁকি এটিই।