আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র, বাংলাদেশ (আইসিডিডিআর,বি) এর সহকারী বিজ্ঞানী ফারহানা সুলতানা তার প্রস্তাবিত- টেকসই মাসিক স্বাস্থ্যের জন্য পাটের সেলুলোজ-ভিত্তিক স্যানিটারি প্যাড ও মেশিন উদ্ভাবনের জন্য আন্তর্জাতিক পুরস্কার জিতেছেন।
আইসিডিডিআর,বি এর অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে প্রকাশিত একটি বিবৃতিতে বলা হয়, বাংলাদেশ জুট মিলস কর্পোরেশনের বৈজ্ঞানিক উপদেষ্টা ড. মোবারক আহমেদ খানের সহযোগিতায় ফারহানা সুলতানা পাটের সেলুলোজ-ভিত্তিক ডিসপোজেবল স্যানিটারি প্যাড ও তৈরির মেশিন উদ্ভাবনের প্রস্তাবনা করেছেন।
আর এই প্রস্তাবের জন্য চতুর্থ ইনোভেশন পিচ প্রতিযোগিতায় গ্র্যান্ড পুরস্কার জিতেছেন ফারহানা। আমেরিকান সোসাইটি ফর ট্রপিক্যাল মেডিসিন অ্যান্ড হাইজিন (এএসটিএমএইচ) প্রতিবছর এই প্রতিযোগিতার আয়োজন করে।
ফারহানা সুলতানা জানান, দেশের বর্জ্য ব্যবস্থাপনাও যথেষ্ট উন্নত নয়। এখন পর্যন্ত বাজারে যেসব প্যাড বিক্রি হচ্ছে, তার বেশির ভাগই পরিবেশবান্ধব নয়। ফলে, ব্যবহৃত প্যাড নিয়ে একধরনের ঝুঁকি তৈরি হয়েছে। তাই তিনি পরিবেশবান্ধব স্যানিটারি প্যাডের বিষয়টিতে গুরুত্ব দিচ্ছেন।
ভারতের একটি গবেষণার উদ্ধৃতি দিয়ে ফারহানা জানান, বাজারে বাণিজ্যিকভাবে যেসব স্যানিটারি প্যাড বিক্রি হয় তার প্রতিটিতে ৩ দশমিক ৪ গ্রাম প্লাস্টিক থাকে। জীবনভর একজন নারী প্যাড ব্যবহার করলে গড়ে প্লাস্টিক ব্যবহারের পরিমাণ হবে ২৩ কেজি। যা মাটির সঙ্গে মিশে যেতে সময় লাগবে ৫০০ থেকে ৮০০ বছর।
তাই পাটের সেলুলোজ নারীদের স্বাস্থ্যবিধির জন্য হতে পারে একটি বিকল্প সমাধান। পাটের সেলুলোজ একটি নতুন উপাদান। তবে বর্তমানে দেশে প্যাড তৈরির কোনো মেশিন নেই।
এর আগেও প্লাস্টিকের ব্যবহার কমিয়ে পাট দিয়ে প্যাড তৈরি প্রকল্পের জন্য ইসলামিক ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের পক্ষ থেকে ১ লাখ মার্কিন ডলার (প্রায় ৮৪ লাখ টাকা) মূল্যমানের পুরস্কার জিতেছিলেন ফারহানা সুলতানা।
প্রসঙ্গত, ড. মোবারক আহমেদ খান বাংলাদেশ পাটকল করপোরেশনের (বিজেএমসি) প্রধান বৈজ্ঞানিক উপদেষ্টা হিসেবে কর্মরত। তিনি পাট থেকে সোনালি ব্যাগ, পাটের তৈরি জুটিন নামক ঢেউটিন, পাটের তৈরি হেলমেট ও টাইল্স উদ্ভাবন করেছেন। এই বিজ্ঞানী জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী। অপরদিকে, ফারহানা সুলতানা একই বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী।