আফগানিস্তানের বিপক্ষে নিউ জিল্যান্ডের জয়ের পরেই মূলত শেষ হয়ে যায় বিরাট কোহলিদের বিশ্বকাপ। তখনো ভারতের সুপার টুয়েলভের একটি ম্যাচ বাকি। সোমবার পুঁচকে নামিবিয়ার বিপক্ষে সেই ম্যাচ জয় দিয়ে আক্ষেপের আইসিসি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ শেষ হলো।
সুপার টুয়েলভে প্রতিদ্বন্দ্বী পাকিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচ হেরে মূলত ভারতের দুঃস্বপ্নের শুরু। ১০ উইকেটে তারা হেরে যায় বাবর আজমদের কাছে। নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে পরের ম্যাচে যেখানে ঘুরে দাঁড়ানোর কথা সেখানেও উলটো হেরে যায় ৮ উইকেটে। এই দুই ম্যাচের হারেই লেখা হয়ে যায় কোহলিদের বিশ্বকাপ এপিটাপ।
এরপর আফগানিস্তান ও স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে বড় জয়ের পর নতুন করে দানাবাঁধে আশা। তবে তা নির্ভর করে আফগানিস্তান-নিউ জিল্যান্ডের ম্যাচের ওপর। কিন্তু আফগানরা হেরে যাওয়াতে সব শেষ হয়ে যায়। হতাশা ঘিরে ধরে ভারতীয় শিবিরে।
নামিবিয়ার বিপক্ষে ম্যাচটি হয়ে দাঁড়ায় শুধু নিয়মরক্ষার। আগের দিন নির্ধারিত অনুশীলন থাকলেও সেটি বাতিল করে কোহলির দল। চারদিক থেকে আসতে থাকে সমালোচনার তীর। এদিকে প্রথমবার টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে খেলেছে দল। সুপার টুয়েলভের ৫টি ম্যাচের মধ্যে তারা জিতেছে স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচে।
দুবাই আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে আজ টস জিতে নামিবিয়াকে ব্যাটিংয়ে পাঠান বিরাট কোহলি। ৮ উইকেট হারিয়ে দলটি তোলে ১৩২ রান। টার্গেটে খেলতে নেমে ২৮ বল হাতে রেখে ৯ উইকেটে জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে ভারত। শুরু দুর্দান্ত খেলতে থাকে ভারত। রোহিত শর্মা-লোকেশ রাহুলের ওপেনিং জুটি থেকেই আসে ৮৬ রান। ৩৭ বলে ৭টি চার ও ২টি ছয়ে ৫৬ রান করেন। টি-টোয়েন্টিতে রোহিতের এটি ২৪তম ফিফটি। এরপর মাঠে কোহলির আসার কথা থাকলেও তিনি আসেননি।
ক্রিজে আসেন সূর্যকুমার যাদব। এরপর ম্যাচ শেষ করে আসেন রাহুল-সূর্যকুমার। দুজনের দ্বিতীয় উইকেটের জুটি থেকে আসে ৩৩ বলে ৫০ রান। রাহুল ৩৬ বলে ৫৪ ও সূর্যকুমার ১৯ বলে ২৫ রানে অপরাজিত ছিলেন। ৪টি চার ও ২টি ছয়ে ৫৪ রান করেন রাহুল। টি-টোয়েন্টিতে এটি ১৫তম ফিফটি রাহুলের। নামিবিয়ার হয়ে একটি উইকেট নেন ফ্রাইলিংক। এর আগে ডেভিড ভিসার ২৫ বলে ২৬ ও স্টিফেন বার্ডের ২১ বলে ২১ রানে ভর করে ১৩২ রান করে নামিবিয়া।
এ ছাড়া ফ্রাইলিংক ১৫, রুবেন ট্রাম্পেলমান ১৩ ও মাইকেল ফন লিঙ্গেন করেন ১৪ রান। ভারতের হয়ে সর্বোচ্চ ৩টি করে উইকেট নেন রবীন্দ্র জাদেজা ও রবিচন্দ্রন অশ্বিন। ২ উইকেট জমা হয় পেসার যসপ্রীত বুমরাহর ঝুলিতে। এই ম্যাচের মধ্য দিয়ে শেষ হচ্ছে টি-টোয়েন্টিতে ভারতের কোহলি যুগ। বিশ্বকাপের আগেই তিনি ঘোষণা দিয়েছিলেন ক্রিকেটের সংক্ষিপ্ত সংস্করণে আর অধিনায়কত্ব করবেন না তিনি। তবে খেলে যাবেন।
এই ম্যাচসহ ৫০তম টি-টোয়েন্টিতে কোহলি নেতৃত্ব দিয়েছেন ভারতকে। ৩২ বছর বয়সী এই ক্রিকেটার জয় পেয়েছেন ৩০টি টি-টোয়েন্টি ম্যাচে। এ ছাড়া শেষ হচ্ছে কোচ রবি শাস্ত্রীর যুগও। বিশ্বকাপের পর থেকে তিনি আর ভারতের কোচ থাকছেন না।
চার বছর মেয়াদে শাস্ত্রীর সাফল্য নেই আইসিসির ইভেন্টে। অস্ট্রেলিয়ায় টানা দুটি টেস্ট সিরিজ জয় এবং ইংল্যান্ডে একই সংস্করণে সাফল্য, দেশের মাটিতে তিন মৌসুম ধরে দাপটই বলার মতো। ২০১৯ সালের ওয়ানডে বিশ্বকাপে তো সেমিফাইনালেই থেমে যায় চ্যাম্পিয়ন হওয়ার মিশন।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
নামিবিয়া: ২০ ওভারে ১৩২/৮ (ভিসা ২৬, বার্ড ২১, ফন লিনগেন ১৪, এরাসমস ১২, ফ্রাইলিঙ্ক ১৫*, ট্রাম্পেলমান ১৩*। (বুমরাহ ৪-০-১৯-২, অশ্বিন ৪-০-২০-৩, জাদেজা ৪-০-১৬-৩, চাহার ৪-০-৩০-০)
ভারত: ১৫.২ ওভারে ১৩৬/১ (রাহুল ৫৪*, রোহিত ৫৬, সূর্যকুমার ২৫*; ফ্রাইলিঙ্ক ২-০-১৯-১, লফটি-ইটন ৪-০-৩১-০,ট্রাম্পেলমান ৩-০-২৬-০, ভিসা ২-০-১৮-০, শুলজ ১-০-১১-০, স্মিট ২-০-১৭-০ ফন লিনগেন ১.২-০-১৩-০)
ফল: ভারত ৯ উইকেটে জয়ী ম্যান অব দা ম্যাচ: রবীন্দ্র জাদেজা