কোনো রাজনৈতিক উদ্দেশ্য নেই, কোটা সংস্কারের দাবি মেনে নিলেই ক্লাসে ফিরে যাবে এমন দাবি করে জয় বাংলা স্লোগান দিয়ে গড়ে উঠছিল কোটা সংস্কার আন্দোলন। আন্দোলনের সংগঠকরা অত্যন্ত দরিদ্র পরিবারের সন্তান হলেও এ আন্দোলনের সূত্র ধরে সংগঠকদের চলাফেরায় আসে আভিজাত্য, হাতে ওঠে আইফোন। সম্প্রতি খালেদ মহিউদ্দিনের সঙ্গে সাক্ষাতকারে নুর করোনায় এক কোটি টাকা সাহায্য দেয়ার কথা বলেছে। ত্রাণ, চিকিৎসা ও রাজনীতির নামে বিভিন্ন মানুষের কাছ থেকে তোলা টাকায় ব্যবসা করা হচ্ছে বলে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন সংগঠনের অনেকে। টাকার স্রোতে ভেসে ডাকসু নির্বাচন পেরিয়ে তারা এখন জাতীয় রাজনীতির মাঠে নেমেছে। তবে মুখে নীতি ও সততার কথা বলা ছাত্র পরিষদ নেতাদের ঘৃণ্য ও অসৎ চরিত্রের তথ্য ফাঁস করে দিচ্ছে সাবেক নেতাকর্মীরাই।
নিজেদের ‘সৎ চরিত্রবান’ দাবি করে উগ্রবাদী চেহারা নিয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে আন্দোলনের মাধ্যমে সরকারকে ফেলে দেয়ার হুঙ্কার দিলেও এখন বেড়িয়ে আসছে কথিত ছাত্র অধিকার পরিষদের আসল চেহারা। শীর্ষ কয়েক নেতার স্বেচ্ছাচারিতা নিয়ে দিনের পর দিন অসন্তোষ থাকলেও এবার প্রকাশ্য বিরোধে জড়িয়ে পরেছেন প্রথম সারির নেতাকর্মীরাই। নারী সহকর্মীকে ধর্ষণ ও করোনাকালে ও বন্যার সময় মানুষের দেয়া ত্রানের অর্থ লুটপাট ও শিবির সংশ্লিষ্ট রাশেদকে আহবায়ক করা নিয়ে প্রতিবাদে সোচ্চার হয়েছেন বিক্ষুদ্ধ নেতাকর্মীরা। রাশেদকে ‘জানোয়ার’ অভিহিত করে তাকে আহবায়ন করলে পদত্যাগের হুমকি দিয়েছেন নেতারা।
কোটা আন্দোলনের সময়েই সংগঠনটির অনেকের বিরুদ্ধে জামায়াত শিবির সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ উঠেছিলো। রাশেদ, ফারুক, মশিউর ও আতাউল্লাহ সহ কয়েকজনের জামাত শিবির সংশ্লিষ্টতার তথ্য প্রমাণ সোশ্যাল মিডিয়াতেই দেখা গেছে। বার বার অস্বীকার করলেও জামাতি সিম্পটম থেকে তারা মুক্ত হতে পারে নি তাই যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের কারণে এটর্নি জেনারেলের প্রতি ক্ষোভ, শেখ হাসিনার জন্মদিন নিয়ে কটাক্ষ, জামায়াতের রাজনীতি বন্ধের কারণে পিঠের চামড়া তুলে নেয়ার হুমকি প্রদানসহ ফেসবুকের বিভিন্ন স্ট্যাটাসে তাদের জামাত ঘনিষ্ঠতার প্রমাণ পাওয়া যায়।
বলা হয়ে থাকে, শিবির সংশ্লিষ্টরা ও তার নারী বিরোধী উগ্রবাদী নানা কর্মকান্ডের কারনেই তাকে সংগঠনটির আহবায়ক করতে পারেনি তার সহযোগীতারা। অভিযোগ আছে, এই আন্দোলনের অন্যতম নেতা রাশেদ খান এক সময় শিবিরের সক্রিয় নেতা। রাশেদের আদর্শ সম্পর্কে আরও নিশ্চিত হওয়া যায় তার সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ফেসবুকের বিভিন্ন স্ট্যাটাসের মাধ্যমে। প্রমাণ মিলেছে কোটা নেতাদের এ্যাকাউন্ট থেকে শিবিরের বিভিন্ন পেজে লাইক-কমেন্ট শেয়ার থেকেও।
রাশেদ, ফারুক ও তারেক সহ শীর্ষ কয়েক নেতার বিরুদ্ধে স্বোচ্ছাচারিতাসহ নানা অপকর্মের অভিযোগ থাকলেও প্রতিবাদ করার সাহস দেখায়নি কেউই। যারা কথা বলার চেষ্টা করেছেন তাদের সংগঠন থেকে বের করে দিয়েছেন। এরপর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রতিবাদকারি নেতা কর্মীদের বিরুদ্ধে সংঘবন্ধভাবে চালানো হয়েছে আপপ্রচার। নারী সহকর্মী কেউ প্রতিবাদ করলে একই পদ্ধতিতে করা হয়েছে তার চরিত্রহরন। ফলে সম্মান হারানো ভয়ে কেউ প্রকাশ্য বিরোধে জড়ায়নি। এবার সংগঠনের নারী সহকর্মীর ধর্ষন ও ধর্ষনে সহযোগীতার মামলা দায়েরের পর একই ধরনের অভিযোগ তুলেছেন ভুক্তভোগী ঐ ঢাবি ছাত্রীও।
তবে এবার সহকর্মীকে ধর্ষনের ঘটনাকে ঘিরে এবার প্রতিবাদমূখর অনেকেই। কেবল তাই নয়, গত কয়েকদিনে একের পর এক প্রতিবাদী অবস্থানের জানান দিয়ে মূখোশের আড়ালে শীর্ষ নেতাদের অপকর্ম ফাঁস করে দিচ্ছেন তারা। সংগঠনের অন্যতম এক যুগ্ম আহবায়ন এ পি এম সুহেল জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে নিরাপদ সড়ক আন্দোলন (নিসআ) এর কর্মসূচি থেকে বলেছেন, সারা বাংলাদেশে যে ধর্ষণের ঘটনাগুলো ঘটতেছে লাগাতার সেগুলোর প্রতিবাদে মানববন্ধনে দাড়িয়েছি।।এই ধর্ষণের কালচারকে রুখে দাড়াতে। ঘটনাগুলো মানুষ বিভিন্নভাবে বিভিন্নদিকে ডাইভার্ট করতে চায়, এটার প্রতিবাদেও নিরাপদ সড়ক আন্দোলন মানববন্ধনে দাড়িয়েছে।
তিনি বলেছেন, ‘আপনারা আরেকটি জিনিস জেনে অবাক হবেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফাতেমা আক্তার নামে একজন শিক্ষার্থী তিনিও ধর্ষণের একটি অভিযোগ এনেছেন ছাত্র অধিকার পরিষদের বিরুদ্ধে।’
‘আমিও ছাত্র অধিকার পরিষদের হয়ে জেলখানায় গিয়েছি, গত ডাকসু হামলায় ছাদ থেকে পড়ে যাওয়ার পর আমার মাথায় প্রায় ৫০টির মতো সেলাই ছিল,আমার মেরুদন্ড ভেঙ্গে গিয়েছিল। যে অভিযোগটি মেয়েটি এনেছে সে অভিযোগটি অনেক আগের, সে আমরা যারা ছাত্র অধিকার পরিষদের ছিলাম আমাদেরকে জানিয়েছিল, বিষয়টি সমাধানের জন্য চেষ্টাও করেছিলাম। কিন্তু পরবর্তীতে মেয়েটিকে বিভিন্ন ধরণের হুমকি দেয়া হয়। কারা কারা হুমকি দিয়েছে তা মেয়েটি ইতোমধ্যে এজহারে উল্লেখ করেছে।’
সুহেল বলেন, ‘ মেয়েটি কিন্তু তার মামলায় বলেছিল যে, সে যদি তার সঙ্গে যে অন্যায় হয়েছে সেটা যদি কাউকে বলে বা বলতে চায় তাহলে তারা তাদের নির্দিষ্ট একটি গ্রুপের মাধমে মেয়েটিকে পতিতা বলে প্রচার করবে। এবং আমরা কিন্তু সেটাই দেখেছি। মামলার পর পরেই ফেসবুকে মেয়টিকে পতিতা বলে প্রচার করা হয়েছে। ভিক্টিম ব্লেমিং এর মাধ্যমে মেয়েটিকে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত করার একটা পায়তারা কিন্তু আমরা দেখেছি। যারা দেশে ধর্ষণের নামে যা চলতেছে তা চলতে দেয়া যাবে না। আমাদের মা বোনরা আজ কোথাও নিরাপদ না। তাদের নিরাপত্তা দেয়া দায়িত্ব আমাদের, রাষ্ট্রের। রাষ্ট্র যদি এই নিরাপত্তা দিতে না পারে তাহলে এই রাষ্ট্রকাঠামো থাকার কোনো প্রয়োজন নাই। অবিলম্বে যত ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে, সবগুলোর সুষ্ঠু তদন্ত করে দোষীদের শাস্তি দিতে হবে।’
ফেসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রতিবাদী নেতারা সোচ্চার হচ্ছেন। যেখানে পাল্টাপাল্টি বক্তব্যে রেরিয়ে আসছে বিরোধ আ অপকর্মের নানা তথ্য। সংগঠনের অন্যতম এক নেতা মো. তারেক রহমান ফেসবুক পোস্টে লিখেন, ‘বলছি খেলা হবে, খেলা হবেই। অঘোষিত যুদ্ধ চলবে। নূর-রাশেদ-ফারুক আমার কিছুই করতে পারবে না। এই দেশের জনগণ আমার পাশে আছে। আর কিছু লোকজন আমার খেয়ে পেছনে বাঁশ দেয়।’
এপিএম সোহেল তার এক ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন, ‘ কিসের খেলার কথা বলেছিলেন কোটা আন্দোলনের সময় গ্রুপ বেঁচে দেয়া, নিজে গা ঢাকা দিয়ে গোয়েন্দা আটকের নাম করে লাইভে এসে আন্দোলন না করতে নিষেধ করা প্রিয় তারেক ভাই?
আর হাফেজ, সত্যের উড়োজাহাজ যে অন্য মেয়েকে আমার নামে অভিযোগ দিতে বলে কয়দিন আগেই ধরা খেয়েছে, সেই মুন্তাসীরই বা কিসের ভিত্তিতে হাসান আল মামুনকে ধর্ষক হিসেবে প্রমাণ করতে চেয়েছিল? সিরিয়াসলি ম্যান? হাউ কিউট নোটঃ মিথ্যাসীর(মুনতাসির) বলেছে সে রাগের মাথায় হাসান আল মামুনকে ধর্ষক বলেছিল। সেটা তার বলা ঠিক হয় নাই। গোপন সূত্রে পাওয়া খবর মেয়েটির সাথে কয়েকবার যোগাযোগও করেছিল মিথ্যাসীর।’
এক চ্যাট গ্রুপে কোটা সংস্কার আন্দোলনের যুগ্ম আহ্বায়ক মুনতাসির মাহমুদ লিখেছেন, ‘হাসান আল মামুন একজনকে ধর্ষণ করছে ১০০%। আমি প্রমাণ করবো। আর সে(হাসান আল মামুন) আমারটা করবে। চ্যালেঞ্জ”। উত্তরে মুনতাসির মাহমুদকে হাসান আল মামুন বলেন, ‘তুমি চাইলেই আমি তোমার আর এই মেয়ে ছবি সবার সামনে দিয়ে তোমার মানহানি করবো না আমি। আমার কাছে ছবি আছে।’
এদিকে জানা গেছে, করোনাকালে ও বন্যার সময় মানুষের দেয়া ত্রানের অর্থ লুটপাট ও শিবির সংশ্লিষ্ট রাশেদকে আহবায়ক করা নিয়ে প্রতিবাদে সোচ্চার হয়েছেন বিক্ষুদ্ধ নেতাকর্মীরা। চলতি বছরের মে মাসে ছাত্র অধিকার পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক মো. তারেক রহমান স্বাক্ষরিত এক বিশেষ বিজ্ঞপ্তি ফাঁস হয়ে গেছে। সংগঠনের প্যাডে লেখা বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ফারুক হাসান ও মুহাম্মদ রাশেদ খান নিন্মোক্ত অপরাধ করেছিল ও শাস্তি দেয়া হয়েছিল: ১) ত্রাণ কার্যের জরুরি তহবিল গঠনকালীন নিষেধাজ্ঞা শর্তেও তারা ব্যক্তিগত লেনদেন করেছিল। ২) এর জন্য লঘু শাস্তি হয়েছে তাদের, পাশাপাশি বলা হয়েছে এর পড়েও লেনদেন চালালে কঠিন শাস্তি হবে। ৩) তারা উভয়েই কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তকে উপেক্ষা করে তাদের কাজ চালিয়ে যায়।
এর ফলে সংগঠনে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয় ও সংগঠনের ফান্ড সংগ্রহ ব্যাহত হয়। ফলে সারা দেশের দুস্থদের জন্য ত্রাণ কর্মসূচিতে ব্যাঘাত ঘটে। তাদের এই আর্থিক অনাচারের পুনরাবৃত্তি হিসেবে, তাকে কেন্দ্রীয় ও শাখা কমিটির পরামর্শে বহিষ্কার করা হলো।
‘এটা না দেয়াই ভাল ছিল’ একজনের এমন এক বক্তব্যের প্রেক্ষিকে এপিএম সোহেল বলেন, সংগঠনের স্বার্থেই তো এগুলো প্রকাশ না করে নিজের মতো ছিলাম। আকাম করছে মাইয়ার লগে, মাইয়াকে হুমকি দিছে। এখন মাইয়া মামলা করছে, আর দোষ দেয় আমার উপরে। এই সংগঠনের শুরু থেকে আমার বিতর্কিত কিছু নেই। ওদের বাটপারির বিরুদ্ধে বলতাম দেখে আমার নামে মিথ্যা ব্লেম দিয়ে সরাইছিল। তাও তো চুপ ছিলাম। চাপাইনবাবগঞ্জ প্রোগ্রাম করে আটক হবারও বেশিদিন হয় নাই। এটা আমার রক্তের সংগঠন। ফাঁস হওয়া আরেক স্ক্রিনশটে খুলনা জেলা ছাত্র পরিষদের সভাপতি তামান্না ফেরদৌস শিখা বলেন, ‘রাশেদ আহ্বায়ক হলে আমি পদত্যাগ করবো। খুলনা ধ্বংস করে দিবে এই জানোয়ার।’
সংগঠনের বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মীরা এর সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচারের দাবি জানিয়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। সংগঠনের এক যুগ্ম আহ্বয়াক এপিএম সোহেল বলেছেন, ‘অভিযোগকারী মেয়েটি ছাত্রলীগ বা অন্য কোনো রাজনৈতিক সংগঠনের নয়। সে আমাদের ছাত্র অধিকার পরিষদেরই একনিষ্ঠ একজন শুভাকাক্সক্ষী।’ নিজ সংগঠনের নেতাদের উদ্দেশ্য করে তিনি বলেছেন,‘ এই মেয়েটা সমাধাণের জন্য তোমাদের কাছে কান্নাকাটি করে নাই? তোমরা তাকে আদালতে যাওয়ার হুংকার দিয়েছিলো এই ভেবে যে সহজ সরল মেয়ে হয়তো আদালতে যাবে না আর বিষয়টা সামনে আসলেও জনপ্রিয়তা দিয়ে ঢেকে দিবা।’
এপিএম সোহেল বলেন, অভিযোগকারী শুরুতেই যখন শুধুমাত্র সংগঠনের ঢাবি অধ্যয়নরত কয়েকজনকে নিয়ে সমাধানে বসেছিল, সেখানে থাকে হুমকি বা অপমান না করলে সেই মেয়ে ঢাবির বাইরে গিয়ে আমাদের কাউকে জানাইত না। সমাধান করলে বিষয়টা এতদূর আসতো না। যখন ঢাবির নেতাকর্মীদের কাছে বিচার না পেয়ে উল্টো হয়রানির শিকার হয়, তখন সে ঢাবির বাইরে আমরা যারা সংগঠনের নেতৃস্থানীয় ছিলাম , জুন জুলাইয়ের দিকে আমাদেরকে জানায়। আমরা মেসেঞ্জারের চ্যাটগ্রুপ খুলে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করলে নুরল হক নূর, হাসান আল মামুন ও সাইফুল সহ অন্যান্যরা আমাদেরকে ষড়যন্ত্রকারী বলে আখ্যা দেয়।
খুলনার ছাত্র অধিকার পরিষদের আহ্বায়ক মো. আমিনুর রহমান সংগঠনের শীর্ষ নেতাদের উদ্দেশ্য করে লিখেছেন, শোনো ভাইয়ারা (ফেসবুক) গ্রুপ এখনও দুইটা এক্টিভ আছে। যার একটার এডমিন আমি আছি যেখানে হাসান আল মামুন আর নাজমুল হাসান সোহাগকে নিয়ে বিচার বসানো হয়েছিলো। যেখানে হাসান আল মামুন ভুক্তভুগিকে আদালতে যেতে বলেছে। তিনি প্রশ্ন করেন, আজ সেই হাসান আল মামুন পলাতক কেনো? নিজেই বলছে আদালতে যেতে এখন নিজেই উধাও। প্রমাণ করে দাও যে, মামলা মিথ্যা ,, আমরাও চাই মামলা মিথ্যা প্রমাণিত হোক।
উল্লেখ্য, গত সোমবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজের ওই ছাত্রী সাধারণ ছাত্র অধিকার পরিষদের আহ্বায়ক হাসান আল মামুনকে প্রধান আসামী করে নুরুল হক নূর সহ ছয় জনের বিরুদ্ধে লালবাগ থানায় অভিযোগ দায়ের করে। হাসান আল মামুন ওই ছাত্রীকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ধর্ষণ করেছেন বলে তাদেরই সংগঠনের এক কর্মীর দায়ের করা মামলায় অভিযোগ করা হয়। মামলায় অন্য আসামীরা হলেন দুই যুগ্ম আহ্বায়ক নাজমুল হাসান সোহাগ এবং সাইফুল ইসলাম, ঢাবি শাখার সহ-সভাপতি নাজমুল হুদা ও কর্মী ঢাবি শিক্ষার্থী আবদুল্লাহ হিল বাকি।
এরপর সাধারণ ছাত্র অধিকার পরিষদের ভুক্তভোগী ওই ছাত্রী রাজধানীর কোতয়ালী থানায় আরেকটি মামলা দায়ের করেন। মামলায় ওই ছয় জনকেই আসামি করা হয়। দ্বিতীয় মামলায় পরস্পর যোগসাজশে অপহরণ, ধর্ষণ, ধর্ষণে সহযোগিতা এবং হেয়প্রতিপন্ন করতে ডিজিটাল মাধ্যমে অপপ্রচার চালানোর অভিযোগ আনা হয়েছে। কোতোয়ালি থানার ওসি মিজানুর রহমান জানান, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন এবং ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে ছয়জনকে আসামি করে মামলাটি দায়ের হয়েছে। মামলায় চলতি বছরের ৯ ফেব্রুয়ারি রাত পৌনে আটটার দিকে কোতোয়ালি থানাধীন সদরঘাট হোটেল এ্যান্ড রেস্টুরেন্টে ওই ছাত্রীকে ধর্ষণ করার অভিযোগ করা হয়েছে আসামিদের বিরুদ্ধে।
কিন্তু ঘটনার পর এখন পর্যন্ত কোন আসামী গ্রেফতার হয়নি। বরং প্রকাশ্যে সরকার বিরোধী উগ্রবাদী তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছেন আসামীরা। একের পর এক তথ্য প্রমান বেড়িয়ে পরলেও আটকের পরিবর্তে মামলার বাদী ছাত্রীর বিরুদ্ধে বিকৃত অপপ্রচার চালিয়ে যাচ্ছে।