আফগানিস্তান থেকে সেনা প্রত্যাহারে যুক্তরাষ্ট্রের সিদ্ধান্ত ‘নির্বুদ্ধিতা’ বলে মনে করেন যুক্তরাজ্যের সাবেক প্রধানমন্ত্রী টনি ব্লেয়ার। মার্কিন এই সিদ্ধান্ত আফগানিস্তান এবং দেশটির নাগরিকদের জন্য মর্মান্তিক, বিপজ্জনক ও অপ্রয়োজনীয় বলে উল্লেখ করেছেন তিনি। রবিবার ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
আফগানিস্তান তালেবানের নিয়ন্ত্রণে যাওয়ার পর এই প্রথম এ বিষয়ে মুখ খুললেন টনি ব্লেয়ার। নিজের ওয়েবসাইটে এ নিয়ে একটি বিবৃতি প্রকাশ করেছেন তিনি। সেখানেই এসব কথা বলেন সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী।
আফগানিস্তান থেকে মার্কিন ও মিত্রদের সেনা প্রত্যাহারের ঘটনা ‘জিহাদি সংগঠনগুলোর জন্য উল্লাসের’ বলে বিবৃতিতে উল্লেখ করেছেন টনি ব্লেয়ার। আফগানিস্তানে অভিযানের সময় অনেক আফগান নানাভাবে যুক্তরাজ্যকে সহায়তা করেছে। তাদের তালেবানের হাত থেকে নিরাপদে সরিয়ে না নেওয়া পর্যন্ত যুক্তরাজ্যের সেনারা দেশটিতে অবস্থান করবে বলে জানান তিনি।
২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের টুইন টাওয়ারে সন্ত্রাসী হামলার পর আফগানিস্তানে সন্ত্রাসবিরোধী অভিযান চালানো হয়। অভিযানে যুক্তরাষ্ট্রের পাশাপাশি অংশ নেয় মিত্রবাহিনীগুলো। মিত্রদের মধ্যে ছিল যুক্তরাজ্যও। সে সময় দেশটির প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্বে ছিলেন টনি ব্লেয়ার। এর ২০ বছর পর এসে আফগানিস্তান থেকে চূড়ান্ত ধাপে সেনা প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।
আফগানিস্তান থেকে সেনা প্রত্যাহারের মার্কিন সিদ্ধান্তকে রাজনৈতিক বলে মনে করেন টনি ব্লেয়ার। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন তাঁর নির্বাচনী প্রচারের সময় আফগানিস্তান থেকে সেনা প্রত্যাহারের ইঙ্গিত দিয়েছিলেন। সে সময় তিনি বলেছিলেন, ‘কোনো আমেরিকান যদি দেশে ফিরতে চান, আমরা আপনাকে ফিরিয়ে আনব।’ রাজনৈতিক ওই স্লোগানকে বোকামি বলে উল্লেখ করেছেন টনি ব্লেয়ার। ওই স্লোগানকে বাস্তবে রূপ দিতেই সেনা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত বলে ধারণা তাঁর।
১৫ আগস্ট কাবুল দখলের মধ্য দিয়ে আফগানিস্তান নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নেয় তালেবান। এর মধ্যেই পূর্বঘোষণা অনুসারে ৩১ আগস্টের মধ্যে আফগানিস্তান থেকে সব মার্কিন সেনা সরিয়ে নেওয়ার প্রক্রিয়া চালিয়ে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। তবে এ সময়ের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র ও মিত্রশক্তিগুলোকে সহায়তাকারী হাজার হাজার আফগান ও তাঁদের পরিবারকে সরিয়ে নেওয়া কার্যত অসম্ভব বলে বার্তা সংস্থা এএফপিকে জানিয়েছেন ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) বৈদেশিক নীতিবিষয়ক প্রধান জোসেফ ব্যারেল।