মরুর দেশ দুবাইয়ে উট নিয়ে মাতামাতির শেষ নেই। আর তাতে এবার নতুন মাত্রা যোগ করেছে ক্লোনিং প্রযুক্তি। যার মাধ্যমে পাওয়া যাচ্ছে পছন্দের উটের প্রতিলিপি। সুন্দরী কিংবা দৌড়বিদ উট, ঠিক যেমনটা গ্রাহক চান। বেশ কয়েক বছর আগে থেকেই দুবাইতে প্রাণীর ক্লোনিং নিয়ে কাজ শুরু হয়েছে। তবে চাহিদার কারণে বর্তমানে বেশ জমজমাট ব্যবসায় পরিণত হয়েছে উট ক্লোনিং। বিক্রিও হচ্ছে বেশ চড়া দামে।
সুন্দরী উট চান? নাকি সেরা দৌড়বিদ উট? নাকি উন্নত কোনো প্রজাতির? গ্রাহকের চাহিদাকে গুরুত্ব দিয়ে দুবাইতে কৃত্রিম পদ্ধতিতে জন্ম দেয়া হচ্ছে উট। মূলত অঞ্চলটিতে উট নিয়ে নানান প্রতিযোগিতার চল রয়েছে। কখনো আয়োজন করা হয় উটের দৌড় প্রতিযোগিতা, কখনও সৌন্দর্য প্রতিযোগিতা। আবার কখনো উটের ফেস্টিভ্যাল।
উন্নত জাতের উটের তাই বেশ চাহিদা সেখানে। তবে কৃত্রিম নানা উপায়ে উটের শরীরের বিভিন্ন অংশ পরিবর্তনের চেষ্টা করা হলে দেখা দেয় পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া। সেই তুলনায় ক্লোনিং প্রযুক্তি সম্পূর্ণ নিরাপদ বলে দাবি গবেষকদের।
দুবাইয়ের রিপ্রোডাক্টিভ বায়োটেকনোলজি সেন্টারের পরিচালক নিসার আহমেদ ওয়ানি বলেন, ক্লোনিংয়ে নতুন কিছু করা হয় না। শুধুমাত্র প্রাকৃতিক প্রজনন প্রক্রিয়াটিতেই নতুন কিছু যোগ করার চেষ্টা করা হয়। এটিকে আপনি প্রাকৃতিক প্রজননের সহায়ক প্রযুক্তি বলতে পারেন। এখানে আপনি যা দেখছেন সবই দৌড়ে বিজয়ী বা কোনো সুন্দরী প্রতিযোগিতার বিজয়ী উটের ক্লোন। তাই এদের আপনি সেরাদের সেরা বলতেই পারেন।
তিনি আরও বলেন, অন্যান্য প্রযুক্তির থেকে এটি সম্পূর্ণ নিরাপদ। কারণ এখানে আমরা কোনো প্রাণীর সম্পূর্ণ জেনেটিক কপি তৈরি করতে পারি। যা অন্য কোনো প্রক্রিয়ায় সম্ভব নয়।
ক্লোনিংয়ে সাধারণত প্রতি ১০০টি ভ্রূণের মধ্যে ৫ থেকে ৬ টি সফল হয় জন্মদানে। জন্ম নেয়া বাচ্চা উটের মধ্যে দাতা উটের সব বৈশিষ্ট্যও দেখা যায়। ল্যাবের কোষব্যাংকে জমা রাখা হয় হাজারো ভ্রূণ। যেগুলো ১০ থেকে ৫০ বছর পর্যন্ত সক্রিয় থাকে। এতে করে বিলুপ্তপ্রায় উটের জাত সংরক্ষণের সুযোগও তৈরি হয়েছে।
দুবাইয়ের বায়োটেকনোলজি সেন্টারের পরিচালক নিসার আহমেদ ওয়ানি বিশ্বে প্রথম উটের সফল ক্লোনিং করেন ২০০৯ সালে। জন্ম হয় বিশ্বের প্রথম ক্লোনিং উট ইনজাজের।