বাংলাদেশ রেলওয়ের বৃহত্তম প্রকল্প পদ্মা সেতু রেললিংক প্রকল্পের যশোর অংশের কাজ দ্রুত এগিয়ে চলছে। ইতোমধ্যে ৬০ শতাংশ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। এখন চলছে রেলট্র্যাক বসানোর কাজ। ২০২৪ সালের মধ্যে সব কাজ সম্পন্ন হবে বলে জানিয়েছেন প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা।
প্রকল্প সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, পদ্মা সেতু উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের যোগাযোগ ব্যবস্থার নতুন দিগন্তের সূচনা হয়েছে। সড়কপথে এখন সাড়ে তিন ঘণ্টায় যশোর থেকে ঢাকায় যাওয়া যাচ্ছে। চলমান রেললিংক প্রকল্পের কাজ শেষ হলে রেলপথে যশোর থেকে তিন থেকে সাড়ে তিন ঘণ্টায় ঢাকায় যাওয়া যাবে।
বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে চায়না রেলওয়ে গ্রুপ লিমিটেড প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে। ঢাকা থেকে যশোর পর্যন্ত ১৭২ কিলোমিটার রেলপথ নির্মাণের কাজ দুটি ডিভিশনের আওতায় চলছে। প্রথম ডিভিশন ঢাকা থেকে ভাঙ্গা পর্যন্ত কাজ করছে এবং দ্বিতীয় ডিভিশন কাজ করছে ভাঙ্গা থেকে যশোর পর্যন্ত।
ইতোমধ্যে দ্বিতীয় ডিভিশনের আওতায় যশোর অংশে প্রায় ১১ কিলোমিটার নতুন রেলপথের জন্য এমব্যাংকমেন্ট বেড নির্মাণ, ১৯টি কালভার্ট ও একটি রেলসেতু নির্মাণের কাজ শেষ হয়েছে। সেইসঙ্গে তিনটি রেলস্টেশনের নির্মাণকাজ চলছে।
কাজের অগ্রগতির বিষয়ে চায়না রেলওয়ে গ্রুপের স্ট্রাকচার ইঞ্জিনিয়ার সোহাগ আলী বলেন, ‘ডিভিশন-২ ইউনিটের এমব্যাংকমেন্টের কাজ প্রায় শেষ। একটা ব্রিজের কাজও শেষ হয়েছে। শুধুমাত্র রেললাইনের কাজ বাকি। ইতোমধ্যে এই অংশের ১৯টি কালভার্টের কাজ শেষ হয়ে গেছে।’
প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, সম্প্রতি শুরু হয়েছে রেলট্র্যাক বসানোর কাজ। ইতোমধ্যে যশোর-রূপদিয়া রেলস্টেশন এলাকায় নতুন ট্র্যাক বসানোর কাজ শেষ হয়েছে। স্টেশনের অদূরে চলছে খুলনা রেলপথের সঙ্গে নতুন রেলপথের সংযোগের কাজ। শিগগিরিই নতুন পথেও বসানো হবে রেলট্র্যাক। আগামী বছরের মধ্যে সব কাজ সম্পন্ন করা সম্ভব হবে।
এখন রেলস্টেশন নির্মাণের কাজগুলো চলছে বলে জানালেন চায়না রেলওয়ে গ্রুপ লিমিটেডের এমব্যাংকমেন্ট ইঞ্জিনিয়ার মহিদুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘এই অংশের যতগুলো স্ট্রাকচারের কাজ বিশেষ করে কালভার্ট, আন্ডারপাসের কাজ শতভাগ সম্পন্ন হয়েছে। এখন স্টেশনের কাজগুলো চলছে। শিগগির স্টেশনের কাজও শেষ হয়ে যাবে।’
এখন রেলট্র্যাক বসানোর কাজ চলছে উল্লেখ করে মহিদুল ইসলাম বলেন, ‘রূপদিয়া স্টেশন থেকে রেলট্র্যাক বসানোর কাজ শুরু হয়েছে। ধীরে ধীরে ঢাকা অভিমুখে রেলের স্লিপারগুলো বসাতে বসাতে যাবো। আশা করছি, নির্ধারিত সময়ে অর্থাৎ, ২০২৪ সালের মধ্যে সম্পূর্ণ কাজ শেষ হয়ে যাবে।’
চায়না রেলওয়ে গ্রুপের তথ্যমতে, ঢাকা থেকে পদ্মা সেতু হয়ে যশোর পর্যন্ত ১৬২ কিলোমিটার নতুন রেলপথ নির্মাণে ৪১ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ রয়েছে। এর মধ্যে ২১ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ করছে চীন ও ২০ হাজার কোটি বাংলাদেশের।