বিশ্ববাজারে বাংলাদেশের সোনালী আঁশ পাটের কদর অনেকদিন থেকেই। আধুনিক প্রযুক্তিতে এবার বগুড়ার কৃষকের ক্ষেতে ফলানো তোষা জাতীয় সোনালী আঁশ বা পাট থেকে তৈরি করা হচ্ছে বিশেষ ধরনের সুতা। বাংলাদেশি এই পাটের সুতার অমিত সম্ভাবনার হাতছানি দেখা দিয়েছে বিশ্ববাজারে।
কৃষকের উৎপাদিত পাট একহাত ঘুরে যাচ্ছে বগুড়ার ‘নর্থ বেঙ্গল গোল্ডেন ফাইবার অ্যান্ড ডাইভারসিটি জুট মিলস লিমিটেড’ নামে একটি বিশেষায়িত পাটকলে। সেখানে তৈরি হচ্ছে বিশেষ ধরনের সুতা। দেশীয় পাটকলে তৈরি এই সুতা রপ্তানি হচ্ছে ইউরোপ, অস্ট্রেলিয়া ও এশিয়ার ১০ থেকে ১২টি দেশে। দেশি পাটের সুতা রপ্তানি করে আয় হচ্ছে বিপুল অঙ্কের বৈদেশিক মুদ্রা।
পাট থেকে সুতা তৈরির বিশেষায়িত এই পাটকল স্থাপিত হয়েছে বগুড়া শহর থেকে প্রায় ২০ কিলোমিটার দূরে তালোড়া রেলস্টেশন সংলগ্ন এলাকায়। উদ্যোক্তা সুভাষ প্রসাদ গ্রামীণ জনপদে এই পাটকল স্থাপন করেছেন। বাংলার আলোর সাথে আলাপকালে তিনি বলেন, ‘বর্তমানে কারখানায় পাট থেকে প্রায় ২০ ধরনের সুতা উৎপাদন করা হচ্ছে। এসব সুতা রপ্তানিকারকের মাধ্যমে সরাসরি পাঠানো হচ্ছে জাপান, চীন, উত্তর কোরিয়া, ইতালি, আমেরিকা, লন্ডন, ব্রিটেন, অস্ট্রেলিয়া, সিঙ্গাপুর, জার্মানি, বেলজিয়ামসহ বিশ্বের ১০ থেকে ১২টি দেশে। কারখানাটিতে বর্তমানে কস সুতা উৎপাদন হলেও গড়ে প্রতিদিন ৫০ টন পর্যন্ত সুতা উৎপাদন সম্ভব হবে।’
কারখানায় উৎপাদিত এসব সুতার দাম বৈদেশিক বাজারে মানভেদে প্রতি পাউন্ড ৬০০ ডলার থেকে ৩২০০ ডলার পর্যন্ত। কৃষকের কাছ থেকে ২৪০০ থেকে ২৫০০ টাকা দরে পাট কেনা হয়। পাটের দাম বেশি হওয়ার কারণে সুতা উৎপাদন একটু কম হচ্ছে। পাট কারখানার এই সুতা বিদেশে পাঠানো ছাড়াও দেশেও নানা কাজে ব্যবহৃত হচ্ছে।
সুভাস বলেন, ‘দেশি পাট থেকে তৈরি সুতার বিশ্ববাজারে প্রচুর চাহিদা রয়েছে। জাপানে টাটামি সুতার কদর অন্যরকম। বেলজিয়ামে রয়েছে কালার কোটেড সুতার চাহিদা। প্রতিমাসে পর্যায়ক্রমে বিভিন্ন দেশে এখন গড়ে আট থেকে ১০ কন্টেইনার সুতার চালান পাঠানো হচ্ছে। সরকারের পর্যাপ্ত সহযোগিতার ফলেই এমনটা সম্ভব হয়েছে।