মাত্র ৩৫০ টাকার বিনিময়ে ঘুরে দেখা যাচ্ছে মৌলভীবাজারের প্রধান প্রধান দর্শনীয় স্থানগুলো। এটা সম্ভব হয়েছে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে চালু হওয়া ট্যুরিস্ট বাসের কারণে। এসব বাসে দল বেঁধে নির্বিঘ্নে ঘুরে বেড়াচ্ছেন পর্যটকরা। সার্বিক নিরাপত্তায় চলা এসব বাসে অর্থ ও সময় সাশ্রয় হওয়ায় ভ্রমণে স্বাচ্ছন্দবোধ করছেন পর্যটকরা। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, জেলার পর্যটন খাতকে আরও সমৃদ্ধ ও পর্যটকবান্ধব করতে ভূমিকা রাখবে এ উদ্যোগ।
কেবল দিগন্ত বিস্তৃত চা-বাগান বা সবুজ টিলা নয়। মৌলভীবাজারের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যকে বাড়িয়ে তুলেছে স্বচ্ছ, টলটলে জলের মাধবপুর লেক, পাখির কলতানে মুখর হাকালুকি হাওর ও বাইক্কার বিল। রয়েছে বন্যপ্রাণীর অভয়ারণ্য, জলপ্রপাত। জেলার সাতটি উপজেলায়ই আছে নয়নাভিরাম
পর্যটন স্পট। লেবু বাগান, সীতেশ দেবের চিড়িয়াখানা, সদর উপজেলার বর্ষিজোড়া ইকোপার্ক, রাজনগরের জলের গ্রাম অন্তেহরি, কুলাউড়ার গগনটিলা, লাঠিটিলার সবুজে মাখা অরণ্যাঞ্চল, বড়লেখার মাধবকু-, পরীকু- জলপ্রপাতের কারণে পর্যটকদের অন্যতম আকর্ষণ মৌলভীবাজার। এ জেলাকে আরও পর্যটকবান্ধব করতে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে চালু করা হয়েছে ট্যুরিস্ট বাস।
মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসক মীর নাহিদ আহসান বলেন, পর্যটকদের অনেকে যাতায়াত সমস্যার কারণে সব পর্যটন স্পট দেখতে পারেন না। তা ছাড়া অটোরিকশাচালকরা নিজেদের ইচ্ছামতো ভাড়া হাঁকেন। তাই পর্যটকদের সুবিধার্থে পর্যটক বাস চালু করা হয়েছে। এ বাস সার্ভিস চালুর ফলে মৌলভীবাজারের প্রতি পর্যটকদের আকর্ষণও বাড়বে। ভ্রমণপিপাসুদের আস্থা অর্জনে সক্ষম হলে ভবিষ্যতে বাসের সংখ্যা বাড়ানো হবে।
জেলা প্রশাসক কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, প্রতিদিন দুটি বাস জেলার বড়লেখা ও শ্রীমঙ্গল উপজেলা সদর থেকে ছাড়বে। পর্যটন স্পটগুলো পর্যটকদের ঘুরিয়ে দেখিয়ে ফের ছেড়ে যাওয়া স্থলে ফিরে আসবে। প্যাকেজ ১-এর আওতায় রয়েছে চা-বাগান, গগণটিলা, মাধবপুর লেক ও হাকালুকি হাওর। জনপ্রতি ভাড়া ৩০০ টাকা। কেউ দুপুরের খাবার খেতে চাইলে ১০০ টাকা যোগ করে ভাড়া হবে ৪০০ টাকা। এ প্যাকেজের বাস প্রতিদিন সকাল ৯টায় শ্রীমঙ্গল থেকে যাত্রী নিয়ে বড়লেখার উদ্দেশে ছাড়বে।
প্যাকেজ ২-এর আওতায় রয়েছে লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান, মাধবপুর লেক, বন্যপ্রাণী সেবা ফাউন্ডেশন, বাইক্কাবিল। জনপ্রতি ভাড়া ৩৫০ টাকা। যারা দুপুরের খাবার খাবেন তাদের ৪৫০ টাকা করে দিতে হবে। একই সময়ে দ্বিতীয় প্যাকেজের বাস বড়লেখা থেকে ছেড়ে শ্রীমঙ্গল ঘুরে সেখানে ফিরে যাবে।
ট্যুরিস্ট বাসের সুপারভাইজার জুবেদ আলী জানান, গত ১৬ অক্টোবর বাস চলাচল শুরুর পর থেকেই পর্যটকদের আগ্রহ বেড়েছে। সপ্তাহে শুক্র ও শনিবার বাস দুটো চলাচল করছে। শ্রীমঙ্গল ও বড়লেখায় হানিফ ও শ্যামলী কাউন্টারে টিকিট সংগ্রহ করা যাবে।