পল্লী সড়কে নির্মাণ করা হবে সেতু। সেই সঙ্গে রাস্তা সংস্কার ও হাটবাজার উন্নয়নও হবে। ‘পল্লী সড়কে গুরুত্বপূর্ণ সেতু নির্মাণ (দ্বিতীয় পর্যায়)’ শীর্ষক প্রকল্পে এসব ব্যয়ের প্রস্তাব করেছে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি)।
প্রকল্পটি বাস্তবায়নে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ৪ হাজার ৫০ কোটি টাকা। প্রধান কাজ হচ্ছে-১৬ হাজার কিলোমিটার গ্রামীণ সড়ককে দুর্যোগ সহনীয় ২ লেন সড়কে উন্নীত করা । এছাড়া ৩৩ হাজার কিলোমিটার গ্রামীণ সড়ক উন্নয়ন এবং ১ লাখ ৬৫ হাজার মিটার সেতু নির্মাণ বা পুনর্বাসন করা হবে এর আওতায়। সেই সঙ্গে ৫০০টি গ্রোথ সেন্টার ও ১ হাজার ২০০টি বাজার উন্নয়ন করা হবে। জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় অনুমোদন পেলে সম্পূর্ণ সরকারি অর্থায়নে এটি বাস্তবায়ন হবে। ২০২৬ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে কাজ শেষ করবে স্থানীয় সরকার বিভাগের আওতায় এলজিইডি। খবর সংশ্লিষ্ট সূত্রের।
এ প্রসঙ্গে কথা হয় পরিকল্পনা কমিশনের ভৌত অবকাঠামো বিভাগের সদস্য (সচিব) মামুন-আল-রশীদের সঙ্গে। শনিবার তিনি বলেন, অডিও-ভিডিও তৈরির কিছু কাজ তাদের প্রয়োজন হয়ে থাকে। অনেক দিন আগে প্রকল্পটির পিইসি (প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটি) সভা হয়েছিল।
সূত্র জানায়, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় থেকে প্রস্তাব পাওয়ার পর ইতোমধ্যেই অনুমোদন প্রক্রিয়া শেষ করেছে পরিকল্পনা কমিশন। আগামী একনেক বৈঠকে প্রস্তাবটি উপস্থাপন প্রস্তুতি চূড়ান্ত হয়েছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে গ্রামীণ সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন ঘটবে। সেই সঙ্গে কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধি, পরিবহণ ব্যয় ও সময় কমে যাওয়া এবং কৃষি ও অকৃষি পণ্য পরিবহণ ব্যবস্থা সহজ হবে। পাশাপাশি স্বল্প ও দীর্ঘ মেয়াদে কর্মসংস্থানেরও সুযোগ আসবে। এমন বিবেচনায় প্রকল্পটি প্রস্তাব করা হয়েছে।
প্রকল্পটির ব্যয় প্রস্তাব পর্যালোচনা করে দেখা যায়, ১০০ মিটার ও এর ঊর্ধ্বে সেতুর জন্য সাব সয়েল ইনভেস্টিগেশন, টপো-গ্রাফিক্যাল সার্ভে, স্ট্রাকচারাল ডিজাইন, কস্ট এস্টিমেট ও টেন্ডার ডকুমেন্টেশন তৈরির জন্য পরামর্শক খাতে ১৩ কোটি টাকা ধরা হয়েছে। যা মোট প্রকল্প ব্যয়ের শূন্য দশমিক ৩২ শতাংশ।
পাশাপাশি টপোগ্রাফিক্যাল সার্ভের জন্য (১০০ মিটারের কম সেতু) পরামর্শক খাতে চাওয়া হয়েছে ৫১ লাখ টাকা।
কথা হয় স্থানীয় সরকার বিভাগের পরিকল্পনা, পরিবীক্ষণ, মূল্যায়ন ও পরিদর্শন অনুবিভাগের মহাপরিচালক ড. মোহাম্মদ এমদাদ উল্লাহ মিয়ার সঙ্গে। তিনি বলেন, এ মুহূর্তে বিস্তারিত বলতে পারছি না। তবে ধারণা হচ্ছে, অনেক সময় প্রকল্প শুরুর আগে কেমন ছিল এবং বাস্তবায়নের পর কেমন হয়েছে এমন বিষয়ে ডকুমেন্টেশন তৈরি করা হয়। এতে পরে মূল্যায়ন করাটা সহজ হয়ে যায়।
প্রকল্পটির প্রস্তাবে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় থেকে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ দ্রুত অগ্রসরমান একটি দেশ। এদেশের বেশিরভাগ মানুষ গ্রামে বাস করে। এ অবস্থায় দেশের সার্বিক উন্নয়ন পল্লী এলাকার উন্নয়নের ওপর নির্ভরশীল। পল্লী উন্নয়নের একটি গুরুত্বপূর্ণ কৌশল হলো পল্লী অবকাঠামো উন্নয়ন করা। এটি গত তিন দশকে বাংলাদেশের অভিজ্ঞতা এবং দেশি-বিদেশি গবেষণায় প্রমাণিত। পল্লী সড়কে সেতু নির্মাণ বিভিন্নভাবে আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন ও দারিদ্র্য বিমোচনে ব্যাপক ভূমিকা পালন করে। যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নের মাধ্যমে কৃষি-অকৃষি উৎপাদন বৃদ্ধি, বাজারজাতকরণ সহজ করা ও নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে ভূমিকা পালন করে। এসব বিবেচনায় প্রকল্পটি প্রস্তাব করা হয়েছে।