হেফাজত তখনও ছিলো। জুনায়েদ বাবু নগরী হেফাজতের মহাসচিব ছিলেন। আওয়ামী লীগ সরকারের টানা ক্ষমতার দ্বিতীয় দফায় ২০১৫ সালের ৬ জুন দুই দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে প্রথমবারের মতো বাংলাদেশে এসেছিলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সেই সময় তাঁর সঙ্গে দেখা করেছিলেন বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়া। সেই সাক্ষাতের পর উচ্ছ্বসিত ছিল বিএনপি।
বিএনপি’র তৎকালীন স্থায়ী কমিটির সদস্য, প্রয়াত রাজনীতিক আ স ম হান্নান শাহ মোদীর সঙ্গে খালেদার বৈঠক ‘সফল’ হয়েছে দাবি করে এক আলোচনা সভায় উৎফুল্ল কন্ঠে বক্তব্য রেখেছিলেন। গণমাধ্যমে মোদীর সঙ্গে খালেদার করমর্দনের ছবি প্রকাশিত হয়।
হান্নান শাহ সেদিন বলেছিলেন, ‘যখন মোদী সাহেবের সঙ্গে আলোচনা শেষে বেগম জিয়া বেরিয়ে আসলেন, উনার মুখে হাসি ছিল। বাকি কথা বললাম না। ১৫ মিনিট একান্ত আলোচনা হয়েছে, সেসব কথা বলার অধিকার আমার নেই।’ ওই সফর তো বটেই বিএনপি নেতাদের বক্তব্যের পরেও মুখে কুলুপ এঁটেছিল ধর্মাশ্রয়ী হেফাজতে ইসলাম।
কিন্তু স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও মহান জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকীতে যোগ দিতে যখন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বাংলাদেশ সফরে আসছেন ঠিক তখনই সফরটি নিয়ে জলঘোলা করার ধারাবাহিক অপচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে বাবু নগরী-মামুনুল হকরা।
অথচ মহান মুক্তিযুদ্ধে প্রধান মিত্র ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক রক্তের বন্ধনে আবদ্ধ। সেই সম্পর্কের স্বীকৃতি হিসেবেই মোদী বাংলাদেশ সফরে আসছেন। এ সফরের মধ্যে দিয়ে দুই দেশের সম্পর্ক অনন্য এক উচ্চতাতেই কেবল পৌঁছবে না নিজেদের অর্জনও বাড়বে।
স্বাধীনতা যুদ্ধের বিরোধীতাকারীদের একটি ধর্মান্ধ প্ল্যাটফর্ম থেকে তাই এই সফরের বিরুদ্ধে নানাভাবে নেতিবাচক উস্কানী দেওয়া হচ্ছে। যদিও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এমন অপচেষ্টা কঠোর হস্তে দমন করার ঘোষণা দিয়েছেন।
রাজনৈতিক বিশ্লেষক ড.তারেক শামসুর রহমান হেফাজতে ইসলামের এমন ভূমিকার কঠোর সমালোচনা করেছেন। বলেছেন, ‘হেফাজতে ইসলামের এ ধরনের বক্তব্য ভারতে ও বহির্বিশ্বে বাংলাদেশের জন্য একটা ভিন্ন বার্তা পৌঁছে দিতে পারে। হেফাজতে ইসলামের নেতারা যে উগ্রভাষায় কথা বলেন, হুমকি দেন, তা সনাতন ইসলামের ধারাকে সমর্থন করে না। মোদি আমাদের মেহমান। স্বাধীনতার সুর্বণজয়ন্তী উপলক্ষ্যে বাংলাদেশের পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন। আমাদের উচিত তাকে যথাযথ সম্মান দেখানো।’