রম্যরচনা- মাহবুব আলম
“চ্যাম্পিয়নস লিগ জয় বিসিএসের চেয়ে বড় হতে পারে না। বলেছেন ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো।
“চারবার চ্যাম্পিয়নস লিগ জিতলেও একবারের জন্য বিসিএস ক্যাডার হয়ে ওঠা হয়নি এখনো! তাহলে বুঝুন, কোনটা বেশি দামি?” এটি বলেছেন লিওনেল মেসি।
আগের রাতে ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো এবং পরের রাতে লিওনেল মেসির চ্যাম্পিয়নস লিগ থেকে বিদায়। রাতারাতি এমন বিদায় অনেক ফুটবলভক্তকে হতাশার সাগরে ডুবালেও মেসি-রোনালদোর মা–বাবাকে ভাসিয়েছে আনন্দের সাগরে। কারণ, তাঁদের সন্তানেরা যে আসন্ন বিসিএসের প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় অংশ নিতে যাচ্ছেন। একটি নয় দুটি নয়, চার–চারটি অবিশ্বস্ত সূত্র ‘একটু থামুন’কে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
চ্যাম্পিয়নস লিগের গত ১৬ বছরের ইতিহাসে এই প্রথম কোয়ার্টার ফাইনাল অনুষ্ঠিত হবে মেসি কিংবা রোনালদোকে ছাড়াই। মেসিভক্ত এবং রোনালদোভক্তরা এটা মেনে নিতে না পারলেও বিভিন্ন কোচিং সেন্টারের শিক্ষক এবং নীলক্ষেতের বই ব্যবসায়ীরা দারুণ খুশি। তাদের বই ও সাজেশন পেপার পড়েই ১৯ মার্চ বিসিএসের প্রিলিমিনারি পরীক্ষা দেবেন এই দুই মহাতারকা।
ফুটবল খেলার পাশাপাশি বিসিএসের প্রতি রোনালদো এবং মেসির এমন আগ্রহ দেখে দেশের অনেক ফুটবলভক্ত এবং ফুটবলার ফুটবল ছেড়ে দিয়ে নীলক্ষেতের দিকে যাত্রা করছেন বলে জানা গেছে। তেমনই একজন নীলক্ষেতগামী পথিকের সঙ্গে মেসি-রোনালদোর চ্যাম্পিয়নস লিগ ছেড়ে চলে আসার প্রসঙ্গে অনুভূতি জানতে চাইলে তিনি বরং উল্টো প্রশ্ন করে বসেন, ‘আচ্ছা ভাই, গত বছর যেন কোন দল চ্যাম্পিয়নস লিগ জিতেছিল? এটা তো বিসিএসে আসতেও পারে।’
অবশ্য তার পাশের পথিক অনুভূতি জানাতে ভুল করেননি, ‘ছোটবেলা থেকেই ইচ্ছা ছিল ফুটবলার হব। যে মেসি-রোনালদোকে দেখে এ রকম ইচ্ছার উদয় হয়েছিল, তারা এখন চ্যাম্পিয়নস লিগ ছেড়ে বিসিএসের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। তাদের ফুটবল দেখে যদি ফুটবলার হওয়ার ইচ্ছা জাগ্রত হয়, তাহলে তাদের বিসিএসের প্রতি আবেগ দেখে ক্যাডার হওয়ার ইচ্ছা জাগ্রত হওয়া স্বাভাবিক নয় কি?’
নিঃসন্দেহে হতাশ ভক্তরা এখন জেনে গেছেন মেসি-রোনালদোর চ্যাম্পিয়নস লিগ থেকে বিদায় নেওয়ার মূল কারণ। পরীক্ষার কেন্দ্র কোথায় পড়েছে এবং পরীক্ষার দিন কেন্দ্রে কীভাবে যাবেন, এ বিষয়ে জানতে মেসি-রোনালদোকে ফোন করা হলে তারা উভয়ই জানান, ‘পড়াশোনা নিয়ে ব্যস্ত আছি। ১৯ তারিখের পরে ফোন দেন।’