আলোচনার মাধ্যমে প্রতিবেশী দেশগুলোর সমস্যা সমাধানের ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘প্রতিবেশী দেশের মধ্যে সমস্যা থাকে। আমরা মনে করি সেগুলো সমঝোতা ও আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করা উচিত।’
বৃহস্পতিবার (৪ মার্চ) গণভবনে সফররত ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. সুব্রামানিয়াম জয়শঙ্করের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎকালে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন।
বৈঠকের পর প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন। এ সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর কথোপকথনের সারাংশ তুলে ধরেন তিনি।
বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে করোনাভাইরাস প্রতিরোধে এরই মধ্যে টিকা প্রদান কার্যক্রম শুরু হয়েছে। পর্যায়ক্রমে সবাইকে টিকা প্রদান কার্যক্রমের আওতায় আনা হবে। করোনা মহামারির শুরুতেই সবাইকে সম্পৃক্ত করে তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ গ্রহণ করায় বাংলাদেশে এ ভাইরাস মোকাবিলা করা সম্ভব হয়েছে।
এ সময় মহামারির মধ্যে দেশের বাইরে অবস্থানরত প্রবাসীদের দেশে ফিরিয়ে এনে তাদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করার কথাও উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, প্রতিকূলতার মধ্যেও বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। বন্যা, ঘূর্ণিঝড়ের পাশাপাশি করোনা মহামারি মোকাবিলা করার পরও বাংলাদেশের অর্থনীতি এগিয়ে যাচ্ছে। এরই মধ্যে দেশে রেমিট্যান্সের প্রবাহও বেড়েছে।
করোনা মহামারির প্রাদুর্ভাবে দেশে যেন খাদ্য সঙ্কট দেখা না দেয়, সেজন্য সরকার কৃষিকে সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়ে সরকার খাদ্য উৎপাদনে জোর দিয়েছে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী। এছাড়া টিকা সরবরাহসহ কোভিড-১৯ মহামারি সঙ্কটে বাংলাদেশের পাশে দাঁড়ানোয় তিনি ভারত সরকারকে ধন্যবাদ দেন।
সাক্ষাৎকালে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. জয়শঙ্কর তার বাবা ভারতের সাবেক সরকারি কর্মকর্তা কে সুব্রামানিয়ামের বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে লেখা বই ‘লিবারেশন ওয়ার অব বাংলাদেশ’ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতে তুলে দেন।
মুজিববর্ষ ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর আয়োজনে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির অংশগ্রহণ প্রসঙ্গে ড. জয়শঙ্কর বলেন, ভারতের জন্য এটা অনেক বড় সম্মানের।
করোনা মহামারি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এই অঞ্চলের সবাই করোনাভাইরাস মহামারির কারণে সৃষ্ট প্রতিবন্ধকতা মোকাবিলা করেছি। করোনা সঙ্কটে বাংলাদেশের পাশে থাকবো।
ড. জয়শঙ্কর জানান, করোনাভাইরাসের প্রভাব কাটিয়ে ভারতের অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়াচ্ছে এবং সেখানে শিল্প কারখানাগুলোয় আগে যেখানে তিন শিফটে কাজ হতো, এখন সেখানে চার শিফটে কাজ হয়।
এ সময় স্বল্পোন্নত দেশ থেকে বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশে উত্তীর্ণ হওয়ায় বাংলাদেশকে অভিনন্দন জানিয়ে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এটা অনেক বড় অর্জন। বাংলাদেশের উন্নয়ন হচ্ছে একটা বিস্ময়কর উন্নয়ন।
বৈঠকে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর আন্তর্জাতিক বিষয়ক উপদেষ্টা প্রফেসর ড. গওহর রিজভী, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস, বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতের হাইকমিশনার বিক্রম কুমার দোরাইস্বামী।