পড়াশোনা করেছেন মন দিয়ে। ডিগ্রি পেতেও সমস্যা হয়নি কোনো। এমনকি নামী সংস্থায় মোটা বেতনে চাকরিও জুটে গিয়েছিল। কিন্তু সেই ছকবাঁধা জীবনে সন্তুষ্ট হতে পারেননি দিল্লি প্রবাসী বাঙালি মেয়ে শর্মিষ্ঠা ঘোষ।
কারণ নিজের হাতেই বড় কিছু গড়তে চেয়েছিলেন তিনি; আর সেই ইচ্ছে পূরণের জন্য চাকরি ছেড়ে চায়ের দোকান খোলাই যুক্তিযুক্ত মনে হয়েছে তার কাছে।
সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ার সূত্রে এই লড়াকু বাঙালি মেয়ে শর্মিষ্ঠা ঘোষের কথা সবার সামনে এনেছেন ভারতের সেনাবাহিনীর কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার সঞ্জয় খান্না। দিল্লি ক্যান্টনমেন্টের গোপীনাথ বাজারে চা খেতে গিয়ে তিনি দেখেছিলেন—ঝরঝরে ইংরেজি বলতে পারা, সপ্রতিভ আধুনিক এক তরুণী ঠেলাগাড়ির ওপর অস্থায়ী চায়ের দোকান দিয়েছেন। কৌতূহলী সেনা কর্মকর্তা এর কারণ জানতে চান; আর তখনই নিজের স্বপ্নের কথা খুলে বলেন শর্মিষ্ঠা।
ব্রিগেডিয়ার সঞ্জয় খান্নাকে শর্মিষ্ঠা বলেন, ইংরেজি ভাষা ও সাহিত্যে স্নাতকোত্তর করেছেন তিনি। বেশ কিছু দিন চাকরিও করেছিলেন বিদেশি এক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে। কিন্তু বাঁধাধরা চাকরির গতানুগতিক জীবন তাঁর পছন্দ ছিল না। তিনি স্বপ্ন দেখেছিলেন, চায়ের ব্যবসা করেই যশ কুড়োবেন তিনি।
তারপর একদিন সত্যিই চাকরি ছেড়ে চার চাকার এক ঠেলাগাড়িতে চায়ের দোকান খুলে বসেন শর্মিষ্ঠা। ব্রিগেডিয়ার সঞ্জয় খান্নাকে তিনি বলেন, ‘আমি স্বপ্ন দেখি, কোনও একদিন আমার এই ছোট্ট চায়ের দোকানের নাম ছড়িয়ে পড়বে দিকে দিকে। তাঁর চায়ের দোকান থাকবে দেশের প্রতিটি প্রান্তে থাকবে আমার দোকানের শাখা; তৈরি হবে একটি বড় ফুড চেন।’
শর্মিষ্ঠা আরও জানান, ভাবনা রাও নামে তার এক বন্ধুও এই ব্যবসায় অংশীদার হয়েছেন; তবে তিনি চাকরি ছাড়েননি। একটি বিমান পরিষেবা সংস্থায় কাজ করেন ভাবনা।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শর্মিষ্ঠার একটি কর্মব্যস্ত ছবি শেয়ার করেছেন ব্রিগেডিয়ার সঞ্জয় খান্না। সেখানে ক্যাপশনে তিনি লিখেছেন, ‘কোনও কাজই ছোট নয়, এ কথা মুখে বাস্তবে মেনে নেওয়া কি সহজ? বিশেষ করে পড়াশোনা করে উচ্চশিক্ষিত হওয়ার পর পেশার জগতে সেই শিক্ষাকে কাজে লাগাবেন না, এমনটা সাধারণত কেউ ভাবেন না। তবে এই মেয়েটি সব দিক থেকেই যেন ব্যতিক্রম।’
নিজের স্বপ্নপূরণের পথে শর্মিষ্ঠার এই লড়াকু মনোভাবকে অভিনন্দন জানিয়েছেন নেটিজেনরাও।