জয়পুরহাট জেলায় সরিষার জমির পাশে মৌবক্স স্থাপনের মাধ্যমে মধু সংগ্রহ শুরু করেছেন বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা মৌয়ালরা।
কৃষি বিভাগ জানান, এ জেলায় স্থাপনকৃত ৭৫০টি মৌবক্স থেকে ৩০ মেট্রিক টন মধু সংগ্রহ করা হবে।
মধু সেবন মানব দেহের জন্য বেশ উপকারী ও ঔষধী গুনাগুণ সমৃদ্ধ হওয়ায় বাজারে এর ব্যাপক চাহিদা থাকে। তারমধ্যে নির্ভেজাল মধু প্রেমীর সংখ্যা আরো বেশি। এ ছাড়াও সরিষার পরাগায়নের জন্য মৌমাছি বড় ধরনের নিয়ামক হিসাবে কাজ করে। মৌমাছির মধু সংগ্রহের মাধ্যমে শতকরা ২০-৩০ ভাগ পর্যন্ত পরাগায়ন বৃদ্ধি পায় এবং সরিষার ফলনও ভালো হয়।
স্থানীয় কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ বিশেষ কার্যক্রমের আওতায় মৌচাষের সঙ্গে সম্পৃক্ত মৌয়ালীদের সার্বিক সহায়তা প্রদান করছে। কৃষকদের জমির পাশে মৌবক্স স্থাপন ও নিরাপত্তা প্রদানে কাজ করছে কৃষি বিভাগ। সদর উপজেলার পুরানাপৈল ইউনিয়নের দস্তপুর গ্রামের চাষি সাদেক আলীর সরিষা জমির পাশে ১৫০ টি মৌবক্স স্থাপন ও মধু সংগ্রহ কার্যক্রম চলছে।
এ ছাড়াও সদর উপজেলায় ৩শ টি মৌবক্স সহ জেলার বিভিন্ন স্থানে সরিষার জমির পাশে মোট ৭৫০ টি মৌবক্স স্থাপনের মাধ্যমে মধু সংগ্রহ করছেন দুই মৌচাষী জালাল ও আপেল মাহমুদ। একটি মৌমাছি ৩-৪ কিলোমিটার পর্যন্ত গিয়ে মধু সংগ্রহ করে থাকে। জয়পুরহাটে মৌবক্স স্থাপনের মাধ্যমে সরিষার ফুল থেকে আগামী ২০ দিনের মধ্যে প্রায় ৩০ মেট্রিক টন মধু সংগ্রহ করা সম্ভব হবে বলে জানান, মৌচাষী জালাল ও আপেল মাহমুদ।
মধু কিনতে আসা হাসান আলী বলেন, মধু স্বাস্থ্যের জন্য অনেক উপকারী হলেও ভালো মধু পাওয়া যায়না তাই শহর থেকে এখানে মধু নিতে এসেছি। এক কেজি মধু ৩০০ টাকায় কিনেছেন বলে জানান তিনি।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক কৃষিবিদ রাহেলা পারভীন বলেন, শুধু মধু সংগ্রহ নয়, মধু সংগ্রহের পাশাপাশি মৌমাছি পরাগায়নে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। এতে করে সরিষার ফলনও বৃদ্ধি পায়। স্থানীয় ভাবে সংগৃহিত এই নির্ভেজাল মধু ৩০০-৪০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। জেলায় চলতি মৌসুমে ১৪ হাজার ৬ শ ৬০ হেক্টর জমিতে সরিষার চাষ হয়েছে বলেও জানান তিনি।
বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুঠির শিল্প কর্পোরেশন (বিসিক) জয়পুরহাটের উপব্যবস্থাপক লিটন চন্দ্র ঘোষ বলেন, জেলার ১শ জন কৃষককে এবার মৌ চাষ প্রশিক্ষন দেওয়া হয়েছে। যাতে সরিষা ক্ষেতে মৌ বক্স স্থাপনের মাধ্যমে মধু সংগ্রহ করে আর্থিক ভাবে লাভবান হতে পারেন।